Friday 26th of April 2024
Home / আঞ্চলিক কৃষি / কৃষকের হাতে কীটনাশক তুলে দেয়া ছিল বিজ্ঞানের অভিশাপ -ডিএই, মহাপরিচালক

কৃষকের হাতে কীটনাশক তুলে দেয়া ছিল বিজ্ঞানের অভিশাপ -ডিএই, মহাপরিচালক

Published at নভেম্বর ২৪, ২০১৯

কুষ্টিয়া সংবাদদাতা: ফুড সিকিউরিটির সাথে সাথে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন এখন জরুরী। এক সময় ‘বোকার ফসল পোকায় খায়’ এমন কথা বলে আমরা কৃষকের হাতে বিনামূল্যে ডিডিটি, এলড্রিন জাতীয় ক্ষতিকর কীটনাশক তুলে দিয়েছি। সেটা ছিল বিজ্ঞানের আশীর্বাদ নয়, অভিশাপ। কারণ, তখন বাড়তি জনসংখ্যার জন্যে অতিরিক্ত খাদ্য উৎপাদন ছিল একটা বড় চ্যালেঞ্জ। এখন ১৭ কোটি জনমানুষের দেশেও আমরা খাদ্যে উদ্বৃত্ত; এখন আমাদের দরকার কোয়ালিটি খাদ্য উৎপাদনের।

গত শুক্রবার (২২ নভেম্বর) মেহেরপুর সদরের কৃষি পণ্য সংগ্রহ ও বিপনণ কেন্দ্রের ( OFSSI: On Farm Small Scale Infrastructure) নিরাপদ সবজি কর্ণার এর শুভ উদ্বোধন ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. আবদুল মুঈদ।

ড. মুঈদ বলেন, অধিক খাদ্য উৎপাদনের জন্যে অধিক বালাইনাশক ব্যবহার করতে গিয়ে আমাদের শরীরে বিষ জালিকার মত প্রবেশ করছে, হচ্ছে হার্ট কিডনী সহ অনান্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গেন নানান রোগ। এখন আমাদের বাঁচতে হবে এবং বাঁচাতে হবে পরবর্তী প্রজন্মকে। নিরাপদ ফল সবজি উৎপাদন করার ক্ষেত্রে পুরাতন দিনের ক্ষতিকর বালাইনাশক ব্যতিরেকে নতুন প্রজন্মের কম ক্ষতিকর বিষ এসএনপিভি জাতীয় বিষ ব্যবহার করা যেতে পারে। ব্যবহার করা যেতে ফেরোমন ট্র্যাপ, স্ট্রিকি ট্র্যাপ, ব্র্যাকন ইনহিবিটর, ট্রাইকোডার্মা ইত্যাদি। নিরাপদ সবব্জি উৎপাদন ও বিক্রয় কেন্দ্রে সরাসরি উৎপাদনকারী কৃষক এর মাধ্যমে ভোক্তাদের নিকট সরবরাহ করার বিষয়টিও প্রশংসনীয়। তবে নিরাপদ সবব্জী  ও ফল উৎপাদন খামারের কৃষকদের এ বিষয়ে দক্ষ ও প্রশিক্ষিত করে তুলতে হবে। পাশাপাশি সার্টিফিকেশনের পদ্ধতি জোরদার করতে হবে।

তিনি বলেন, প্রতিটি ব্লকের দুটি গ্রামে নিরাপদ ফল ও সবজি উৎপাদনের জন্যে নির্দেশনা দিয়েছি। প্রয়োজনে সেসব গ্রামকে কেন্দ্র করে নিরাপদ ফল ও সবজি মার্কেট গড়ে তুলতে হবে। বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইস্তেহারেও নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের উপরে জোর দেয়া হয়েছে। এসডিজিতেও নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের উপরে তাগিদ রয়েছে । বর্তমান সরকার জনবান্ধব ও কৃষিবান্ধব সরকার, বর্তমান সরকার সারের দাম কয়েক দফা কমিয়ে সারে অনেক বেশি ভর্তুকি দিচ্ছে। এ বছর সরকারি মূল্যে ৬ লাখ মেটন ধান ক্রয় করা হবে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে।  আপনারা দেশের জন্যে কাজ করলে দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা হবে,দেশ হবে সমৃদ্ধ।

মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. আখতারুজ্জামান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত নিরাপদ সবজি কর্ণারের বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, যশোর অঞ্চল, যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ আলী বৃহত্তর কুষ্টিয়া যশোর অঞ্চল কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক, কৃষিবিদ রহুল কবীর এবং কৃষিবিদ মৌ। এছাড়াও অনুষ্ঠানে   উপস্থিত ছিলেন, মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার কৃষিবিদ স্বপন কুমার খাঁ, অতিরিক্ত উপ –পরিচালক (পিপি) কৃষিবিদ একেএম হাসিবুল হাসান ও অতিরিক্ত উপ –পরিচালক (শস্য) কৃষিবিদ মো. মোশারফ হোসেন, মেহেরপুর সকল উপজেলা কৃষি অফিসার বৃন্দ, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার বৃন্দ, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও বিভিন্ন মিডিয়া সাংবাদিকবৃন্দ,উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে র্কমরত উপসহকারী কৃষি র্কমর্কতাগণ  এবং প্রায় ৫০০ কৃষক/কৃষানী ।

অনুষ্ঠান শুরুতে মেহেরপুর প্রগতিশীল কৃষকের পরিচালনায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তত্ত্ববধানে এবং জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ, জেলা পরিষদ ও পৌরসভার সহযোগীয়তায় কৃষি পণ্য সংগ্রহ ও বিপনণ কেন্দ্রের নিরাপদ সবজি কর্ণার এর শুভ উদ্বোধন হয় । আগত কৃষক –কৃষানী, সুধীজন নিরাপদ  খাদ্য ক্রয় সম্মতি জ্ঞাপন করেন। নিরাপদ সবজি কর্ণার, মেহেরপুর খামারবাড়ি চত্বর, ওয়াবদা রোডে প্রতি শুক্রবার ও শনিবার সকাল  ৮.০০ টা থেকে দুপুর ১২.০০ টা পযুর্ন্ত সম্পুর্ন নিরাপদ ফল ও সবজি বিক্রয় করা হবে।

This post has already been read 9463 times!