নিজস্ব প্রতিবেদক: যেই দেশে এক লিটার পানির দাম ৩০ টাকা, সেই দেশের কোথাও কোথাও এক লিটার দুধ বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা! আবার কোথাও ১০টাকা লিটার বিক্রি হচ্ছে এমন খবরও আসছে প্রতিনিয়ত। ২০-৩০ টাকা লিটার বিক্রি হচ্ছে। সামগ্রিকভাবে হিসেবে করলে প্রান্তিক পর্যায়ে দুধের পাইকারি দাম ১৫-২০ টাকার আশেপাশে ঘুরঘুর করছে। সেই হিসেবে দেশে বোতলজাত হাফ লিটার পানির দামে বিক্রি হচ্ছে এক লিটার দুধ। উৎপাদিত দুধ রাস্তায় ঢেলে প্রতিবাদের ঘটনাও ঘটছে।
করোনা ভাইরাস প্রর্দুভাররে কারনে সারাদেশে লকডাউন থাকায় সামগ্রিকভাবে ভালো নেই দেশের দুগ্ধ খামারিরা। দেশের দুগ্ধ রাজধানী হিসেবে পরিচিত সিরাজগঞ্জ ও পাবনার খামারিরা পড়েছেন সবচেয়ে বিপাকে। সাধারণত মিল্ক ভিটা ও অন্যান্য দুধ প্রক্রিয়াজাত কোম্পানিগুলোর কাছে এসব অঞ্চলের খামারিরা ৪২-৪৫ টাকা দামে প্রতি লিটার দুধ বিক্রি করতেন। কিন্তু এসব প্রক্রিয়াজাত কোম্পানিগুলো বন্ধ থাকায় অবিক্রিত থেকে যাচ্ছে উৎপাদিত বেশিরভাগ দুধ। যেটুকু বিক্রি হচ্ছে সেগুলোর দাম পানির চেয়ে কম। সিরাজগঞ্জ ও পাবনা ছাড়াও দেশের অন্যান্য প্রত্যন্ত অঞ্চলের চিত্র মোটামুটি একই।
বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস এসোসিয়েশন -এর দেয়া তথ্যমতে, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে সমগ্র দেশে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১২০ থেকে ১৫০ লাখ লিটার দুধ অবিক্রিত থেকে যাচ্ছে যার অর্থনৈতিক বাজার মূল্য প্রায় ৫৭ কোটি টাকা। বর্তমানে দেশে বার্ষিক প্রায় ৯৯ লাখ মেট্রিক টন দুধ উৎপাদন করা হয় যা মোট চাহিদার প্রায় ৭০%।
করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে সকল ট্রেন ও যানবাহন যোগাযোগ বন্ধ কারণে উৎপাদিত দুধ ও দুগ্ধজাত দ্রব্য পরিবহনের অভাবে ফেলে দিতে হচ্ছে। যদিও দুধ, ডিম, মুরগি, মাছ, মাংস ও অন্যান্য কৃষিজাত পণ্য পরিবহন চলাচল নিষেধাজ্ঞার বাইরে, তবুও পরিবহন ব্যবস্থা স্বাভাবিক নয়।
এমতাবস্থায়, উৎপাদিত দুধ কম দামে বিক্রি না করে কিংবা ফেলে না দিয়ে দুধ থেকে ননী উঠিয়ে ঘি, মাখন ও অন্যান্য প্রক্রিয়াজাত পণ্য তৈরি করে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন এ খাতের বিশেষজ্ঞ ও অভিজ্ঞ খামারিগণ।
এছাড়াও পরিবহনের অভাবে গরুর প্রয়োজনীয় খাদ্য খড়, ভূষি, ছোলা মিলছেনা পর্যাপ্ত। এরকম চলতে থাকলে গো-খাদ্যর সংকট পড়তে পারে। যা নিয়ে চিন্তিত সারা দেশের পশুপালনকারীরা।