Monday 29th of April 2024
Home / প্রাণিসম্পদ / চট্টগ্রামে সুলভমূল্যে মৎস্য ও প্রাণিজ পণ্য বিক্রির দাবি

চট্টগ্রামে সুলভমূল্যে মৎস্য ও প্রাণিজ পণ্য বিক্রির দাবি

Published at এপ্রিল ৩, ২০২৪

চট্টগ্রাম সংবাদদাতা: পবিত্র মাহে রমজানে রাজধানী ঢাকা শহরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে সুলভ মুল্যে মৎস্য ও প্রাণিজ পণ্য বিশেষ করে মাছ, গরুর মাংশ, দুধ, ডিম বিক্রির ভাম্যমান ব্যবস্থা করা হলেও দেশের বৃহত্তম নগরী, বানিজ্যিক রাজধানীখ্যাত চট্টগ্রামে সে ধরনের কোন প্রক্রিয়া না থাকায় চট্টগ্রামবাসী মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ন সেবা থেকে বঞ্চিত। এক সময় জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস বেসরকারী খামারীদের সহযোগিতায় রমজানে দুধ, ডিম বিক্রির ব্যবস্থা করা হলেও তা-ও বর্তমানে চালু নেই। বিষয়টি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাৎ সেলিম উদ্দীনের দৃষ্ঠি আকর্ষণ করেন। সচিব মহোদয় বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনার আশ্বাস দেন। মঙ্গলবার (০২ এপ্রিল) চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন কার্যালয়ে এক অনানুষ্ঠানিক মতবিনিময়ে  দেশের ক্রেতা-ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষনকারী জাতীয় প্রতিষ্ঠান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রামের নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত বিষয়টির অবতারনা করেন।

ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইনের নেতৃত্বে এ উপলক্ষে অন্যান্যদের মধ্যে ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের যুগ্ন সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম জাহঙ্গীর, ক্যাব যুব গ্রæপ চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি আবু হানিফ নোমান আলোচনায় অংশনেন। এ সময় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডাঃ রেয়াজুল হক, চট্টগ্রাম সিটিকরপোরেশনের প্রধান নির্বাহী শেখ মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম চেম্বারের পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ন সচিব ও প্রাণিসম্পদ এবং ডেইরী উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আবদুর রহিম, বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক ডাঃ একেএম হুমায়ুন কবির, সিটিকরপোরেশনের প্রধান পরিছন্ন কর্মকর্তা লতিফুল হক কাজমিসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব মোহাৎ সেলিম উদ্দীন চট্টগ্রামে সুলভ মূল্যে মৎস্য ও প্রানিজ পণ্য বিক্রির বিষয়ে ক্যাব চট্টগ্রামের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, সরকারের সীমিত সামর্থে ঢাকা শহরে চলমান থাকলেও দেশের অন্যান্য জেলা বিশেষ করে চট্টগ্রামে এই সেবাটি চালু করা দরকার। তবে বেসরকারী উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা যদি এগিয়ে আসেন তাহলে বিষয়টি অবশ্যই টেকসই হবে। সরকারের পক্ষ থেকে যাবতীয় অবকাঠামো ও প্রশাসনিক সহযোগিতা প্রদান করা হবে। বিষয়টি নিয়ে এতিমধ্যেই সংস্লিষ্ঠ জেলার জেলা প্রশাসকদের সাথে আলাপ করেছেন। বেসরকারী উদ্যোক্তারা এগিয়ে আসলেই মন্ত্রণালয় বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করবেন। তবে চট্টগ্রাম যেহেতু বৃহত্তম শহর, অনেক বিদেশী লোকজন এখানে বসবাস করেন, সেকারনে নিরাপদ মৎস্য ও প্রানিজ পণ্য বিক্রির বিষয়টি নিশ্চিত না হলে আর্ন্তজাতিকভাবে দেশের সুনাম ক্ষুন্ন হবে বলে মত প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, পৃথিবীর কোথাও লাইভ বার্ড বিক্রির ব্যবস্থা নাই, সবাই ফ্রোজেন পদ্ধতি চলে গেছেন। আর ফ্রোজেন হলে ভোক্তারাও সাশ্রয়ী দামে

পণ্য কিনতে পারবে। সেকারনে আমাদেরকেও ফ্রোজেন পদ্ধতিতে চলে আসতে হবে। দেশে মাংশ উৎপাদনকারী অনেকেই মানসম্মতভাবে বাজারজাত করছেন।

ক্যাব নেতৃবৃন্দ বলেন, জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের সাথে পোল্ট্রি সেক্টরে সুশাসন নিশ্চিতকরণ কাজের অংশহিসাবে যৌথভাবে কার্যক্রম পরিচালনায় চট্টগ্রামে ড্রেসড ব্রয়লার বিক্রি কার্যক্রম সম্প্রসারনে অনেকগুলি উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। তারই অংশহিসাবে চট্টগ্রামে একটি স্বাস্থ্যসম্মত আধুনিক পশু জবাই খানা স্থাপনের দাবি বেশ অনেক দিন ধরে। এছাড়াও সিটিকরপোরেশনের আওতাধীন ২১টি বাজারে লাইভ বার্ড বিক্রি, মুরগী জবাই, মাছ পরিস্কার, পানি সরবরাহ নিশ্চিতসহ বাজারগুলিতে স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ নিশ্চিতে অনেকগুলি উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। এছাড়াও পোল্ট্রি সেক্টরে নিরাপদ পোল্ট্রি উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে ক্ষুদ্র খামারী, পেল্ট্রি ফিড ও ওষুধের বাজার পরিদর্শন, পোল্ট্রি ফিডের মান পরীক্ষা, নিরাপদ লাইভ বার্ড বিক্রিতে সচেতনতা সৃষ্ঠিসহ নানা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এছাড়াও ক্যাব, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তর ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সমন্বয়ে যৌথ বাজার মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।

This post has already been read 870 times!