রংপুর সংবাদদাতা: ডিমকে স্কুল ফিডিং কর্মসূচির আওতায় আনা গেলে শিক্ষার্থীদের পুষ্টি আরও উন্নত হবে, বলে উল্লেখ করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি জানান, এলডিডিপি প্রকল্পের মাধ্যমে স্কুল মিল্ক ফিডিং কার্যক্রম ৩০০ স্কুল থেকে বাড়িয়ে ৬০০ স্কুলে চালু করা হয়েছে। উপদেষ্টা ফরিদা আখতার আরো বলেন, নিরাপদ মাংস, ডিম ও দুধ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হলে প্রথমেই প্রাণীদের সুস্থ ও রোগমুক্ত রাখা জরুরি। এ লক্ষ্যে সব প্রাণীকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে সরকার ভ্যাকসিন উৎপাদন কার্যক্রম আরও সম্প্রসারণ করবে।
উপদেষ্টা আজ (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে রংপুর দিনাজপুর রুরাল সার্ভিসের (RDRS)-এর বেগম রোকেয়া হলে অনুষ্ঠিত দিনব্যাপী প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি)-এর Divisional Progress Review Workshop-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া অনেক সংক্রামক রোগ জুনোটিক রোগ হিসেবে মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। তাই মানুষের স্বাস্থ্য ও প্রাণীর স্বাস্থ্যসেবাকে একসূত্রে গেঁথে ‘ওয়ান হেলথ’ ধারণার আওতায় সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, এলডিডিপি প্রকল্পের সফল কার্যক্রমগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে নতুনভাবে এগিয়ে নিতে হবে। প্রকল্পের অসমাপ্ত কাজ শেষ করা গেলে একদিকে সরকারের সুনাম বাড়বে, অন্যদিকে কর্মকর্তাদের সক্ষমতাও বৃদ্ধি পাবে। পুষ্টির মানোন্নয়ন এসডিজি’র অন্যতম লক্ষ্যমাত্রা উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, দুধ আমাদের অত্যাবশ্যকীয় খাদ্য। বর্তমানে দেশে বছরে প্রায় চার হাজার কোটি টাকার গুড়া দুধ আমদানি করতে হয়। এলডিডিপি প্রকল্পের আওতায় এলাকায় এলাকায় চিলিং সেন্টার স্থাপন করা গেলে দুধ আমদানির প্রয়োজন হতো না এবং দেশে দুধের অভাবও থাকতো না।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন কেবল অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ নয়, নারীরা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কাজ- জাতিকে শিক্ষিত করে তুলছে। তিনি বলেন, চরাঞ্চলে নারীদের জীবন ও সংস্কৃতি গরু-ছাগল পালনের সাথে গভীরভাবে যুক্ত। তাই চরাঞ্চলের উন্নয়নে প্রাণিসম্পদ খাতে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের। তিনি বলেন, উদ্যোক্তাদের উদ্ভাবনে উৎসাহিত করার পাশাপাশি তাদের তৈরি উপকরণ অন্যান্য খামারিদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। প্রশিক্ষিত খামারিদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে তাদের দিয়ে নতুন উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। তিনি আরো বলেন, রংপুর বিভাগের উৎপাদিত অতিরিক্ত দুধ প্রক্রিয়াজাতকরণ করে সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে পারলে দুধের ঘাটতি কিছুটা হ্রাস পাবে। এছাড়া পিজির সদস্যদের সঞ্চিত অর্থ উৎপাদনশীল কাজে লাগাতে তিনি সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, রংপুর বিভাগের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের জেলা-উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ, পিজি খামারিরা কর্মশালায় অংশ গ্রহণ করেন।