📍 ঢাকা | 📅 রবিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৫

পাবনায় সরিষার আবাদের সাথে চলছে মৌ খামারিদের মধু চাষ

মো. এমদাদুল হক (পাবনা) :  ”কৃষি মন্ত্রণালয় সরিষা আবাদ বৃদ্ধির যে লক্ষ্যমাত্রা হাতে নিয়েছে, তার ধারাবাহিকতায় আমাদের পাবনার সকল উপজেলা কৃষি অফিসার ও উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের সকলের চেষ্টায় রোপা আমন ধান কর্তনের পর বিস্তীর্ণ বিলের জমিতে ও রাস্তার ধারের পতিত জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে, বিশেষ করে ভাঙ্গুরা ও চাটমোহর উপজেলার চলনবিলের বিস্তৃত মাঠে। শীতের এ সময় সরিষার হলুদ ফুলে ভরে গেছে পাবনার চলন বিলের মাঠ। যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই যেনো ফুলের মেলা। ফুলে ফুলে মৌমাছি মধু আহরণ করছে। বিলের প্রকৃতিতে এক নতুন রূপ যোগ হয়েছে। ভালো উৎপাদনের আশাবাদ সকলের। উৎপাদন ভালো হলে ভোজ্য তেলের আমদানী নির্ভরতাও কমে আসবে” জানান পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. জামাল উদ্দীন।

তিনি জানান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী এবার এ জেলার ৯টি উপজেলায় মোট ৪৫ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। গত বছর আবাদ হয়েছিল ৩৫ হাজার হেক্টর জমিতে। যা গত বছরের তুলানয় ১০ হাজার হেক্টর পরিমাণ বেশি।

কৃষিবিদ ড. মো. জামাল উদ্দীন জানান, কৃষকদের যথাযথ পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। সরিষা বপনের মাত্র ৮০-৮৫ দিনের মধ্যে এর ফলন পাওয়া যায়। এ সরিষা উত্তোলন করে পরবর্তীতে বোরো আবাদ করতে পারার কারণে অনেক চাষিরা এটাকে অতিরিক্ত লাভ হিসেবে অভিহিত করে থাকেন। কৃষকদের কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সরিষা চাষে উদ্বুদ্ধ এবং বিভিন্ন উপকরণ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।

চাটমোহর উপজেলার চাষি আব্দুর রহিমের নিকট হতে জানা যায়, এক সময় বিলের অধিকাংশ নিচু জমিতে বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার পর ইরি (বোরো) ধান রোপনের আগে প্রায় দুই/তিন মাস পতিত পড়ে থাকতো। বর্তমানে অধিকাংশ চাষি জমি পতিত না রেখে আমনের লোকসান পুষিয়ে নিতে ও বাড়তি ফসল হিসেবে উচ্চ ফলনশীল সরিষার চাষ করছেন। আবাদও হচ্ছে ভাল। ফলে সরিষা চাষ করে বাড়তি অর্থ উপার্জন করায় ইরি-বোরো চাষের খরচ সহায়তা পাচ্ছেন পাশাপাশি লাভও থাকছে। তিনি আরো জানান গত বছর বাজারে সরিষার দাম ভালো পাওয়ায় এবারও সরিষা চাষ করেছেন। ভালো ফলন ও দাম পেলে আগামী বছর সরিষা চাষে আরও আগ্রহ বাড়বে। সারা পাবনা জেলাতে বারি ১৪, ১৮ বিনা- ৯ ও অন্যান্য জাতের সরিষার আবাদ হয়েছে।

ভাঙ্গুরা উপজেলার চকলক্ষিকোল বিলে মৌচাষি মো: আরজুর সাথে কথা বলে জানা যায়। তিনি পাঁচশত মৌবক্রা মাঠে বসিয়েছেন। পাঁচশত বক্রা থেকে তিনি প্রতি সপ্তাহে ১০০-১১০ মণ মধু উৎপাদন করে থাকেন। মোৗ বক্রা পরিচর্যা ও মধু আহরণের জন্য ৭ জন লোক কাজ করে থাকেন তার সাথে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায় সারা পাবনাতে ৭২ জন মৌচাষি মধু উৎপাদনে বক্রা বসিয়েছেন।

এছাড়া ফরিদপুর উপজেলাতে মৌচাষি মিজানুর রহমানের সাথে বার্তালাপে জানা যায়, তিনি ১২৫ টি মৌবক্রা বসিয়েছেন। ৩-৪ জন লোকের সহায়তায় তিনি প্রতি সপ্তাহে ৮-৯ মণ মধু উৎপাদন করে থাকেন।

Share:

Facebook
Twitter
Pinterest
LinkedIn

Comments are closed.

আরো পড়ুন