
রাজশাহী সংবাদদাতা: সম্ভাবনাময় নতুন ভোজ্যতেল জাতীয় ফসল ‘পেরিলা’র পরীক্ষামূলক চাষে করা হয়েছে রাজশাহীর মোহনপুরে। যা বর্তমানে সারাবিশ্বে ‘সুপারফুড’ হিসেবে পরিচিত। সুপারফুড খ্যাত এই তেল ফসল সাধারণত দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশ বিশেষ করে দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, জাপান, নেপাল, ভিয়েতনাম ও ভারতের কিছু অঞ্চলে চাষ হয়। তবে বাংলাদেশে বেশ কয়েক বছর ধরে পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করা হচ্ছে। সেই ধারাবাহিকতায় রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায় এই বছর স্থানীয় কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় নন্দনহাটসহ ৪ টি স্থানে ৩ বিঘা জমিতে পেরিলা চাষ করা হয়েছে।
পেরিলা মূলত খরিপ-২ মৌসুমের একটি তেল জাতীয় ফসল। এর বৈজ্ঞানিক নাম Perilla frutescens এবং এটি Lamiaceae পরিবারের সদস্য।
সূর্যমুখী ও সরিষার মতো পেরিলার বীজ থেকেও পাওয়া যায় ভোজ্যতেল। পেরিলা দেখতে অনেকটা সরিষা দানার মতো। বৃষ্টির পানি জমে না, এমন যে কোন উঁচু জমিতে পেরিলা চাষ করা সম্ভব। তবে বেলে দো-আঁশ ও দো-আঁশ মাটিতে ভালো ফলন পাওয়া যায়।
পেরিলার বিঘা প্রতি প্রায় ৪-৬ মণ ফলন পাওয়া যায়। প্রতি কেজি বীজ ২০০-২৫০/- দরে বিক্রি হয়। এছাড়াও পেরিলা বীজে শতকরা তেলের পরিমাণ ৩০-৪০% এর মত। দেশের তেল ভাঙার মিলগুলোর মাধ্যমে পেরিলা তেল সংগ্রহ করা যায়।
মৌগাছির পেরিলা চাষী মো. মহসিন আলী বলেন, প্রথম বারের মত উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় পেরিলা আবাদ করছি। খরিপ-২ মৌসূমে আমার আম বাগানের মাঝখানের জায়গায়টা পতিত পরে থাকতো। সেই জায়গায় পেরিলা খুবই ভালো হয়েছে। ফলন এবং দাম ভালো পেলে আগামীবার আরো বড় পরিসরে করার ইচ্ছা আছে। নতুন ফসল দেখতে গ্রামের সবাই আসতেছে, নিজেকেও খুব ভালো লাগছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ কামরুল ইসলাম বলেন, পেরিলা তেলে প্রায় ৯২% অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে মানবস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এই অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড সমূহ বিভিন্নভাবে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি। পাশাপাশি ভোজ্যতেল পেরিলায় ইরোসিক অ্যাসিডের মাত্রা ০% হওয়ায় শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারি। এতে বিদ্যমান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হৃদরোগ এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও ঝুঁকি কমানোতে ভূমিকা রাখে। সামনে মৌসুমে পেরিলা চাষে কৃষকদের কারিগরি সহায়তা ও পরামর্শ আরো দেয়া হবে।



