গাজীপুর সংবাদদাতা: পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (সচিব) ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান (শনিবার) ১১ অক্টোবর বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) এর বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। পরে তিনি ‘‘যান্ত্রিক পদ্ধতিতে ধান চাষাবাদের লক্ষ্যে খামার যন্ত্রপাতি গবেষণা কার্যক্রম বৃদ্ধিকরণ (এসএফএমআরএ)’’ প্রকল্পের চলমান কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। এরপর ব্রি ট্রেনিং কমপ্লেক্সের সভাকক্ষে এসএফএমআরএ প্রকল্প আয়োজিত কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন। বিকেলে তিনি ব্রি মহাপরিচালকের সভাকক্ষে চলমান সকল প্রকল্প এবং কর্মসূচি পরিচালকের সাথে মতবিনিময় সভায় মিলিত হন।

সকালে ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান ব্রি সদর দপ্তরে উপস্থিত হলে স্বাগত জানান ব্রি মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান। এসময় পরিচালক (গবেষণা) ড. মো. রফিকুল ইসলাম, পরিচালক (প্রশাসন ও সাধারণ পরিচর্যা) ড. মুন্নুজান খানমসহ জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী ও কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পরে তিনি প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের চলমান কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। এরপর তিনি এসএফএমআরএ প্রকল্পের চলমান কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। এসএফএমআরএ প্রকল্পটির পরিচালক ড. একেএম সাইফুল ইসলাম প্রকল্পের চলমান গবেষণা কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত করেন।
পরে ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান ‘‘যান্ত্রিক পদ্ধতিতে ধান চাষাবাদের লক্ষ্যে খামার যন্ত্রপাতি গবেষণা কার্যক্রম বৃদ্ধিকরণ’’ প্রকল্প আয়োজিত ‘দেশীয় উপযোগী ব্রি কৃষিযন্ত্র উদ্ভাবন, উন্নয়ন, প্রস্তুতকরণ ও বাজারজাতকরণ’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, কৃষিকে এগিয়ে নিতে হলে যান্ত্রিকীকরণে গুরুত্ব দিতে হবে। মানসম্মত যন্ত্র তৈরি করার কোনো বিকল্প নেই। খাদ্য নিরাপত্তায় ব্রির অবদান অনস্বীকার্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে ব্রি উন্নতমানের জাত উদ্ভাবন করে কৃষকের মাঝে ছড়িয়ে দিয়েছে। ফলে ধানের উৎপাদন বহুগুণে বেড়েছে। এসময় তিনি উত্তরবঙ্গের ‘মঙ্গা’ প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, স্বল্প মেয়াদী জাত উদ্ভাবনে এখন আর মঙ্গাপিড়ীত এলাকা বলে কিছু নেই। ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান জলবায়ু পরিবর্তনে সৃষ্ট সমস্যা মোকাবেলায় চলমান গবেষণা আরও জোরদার করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।
কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্যে ব্রির মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে ব্রি দেশের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতে নিরলসভাবে কাজ করছে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাহিদা পূরণে নতুন নতুন জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন করছে। তিনি বলেন, ক্রমবর্ধংমান জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদার সাথে সঙ্গতি রেখে ধানের ফলন আরও বাড়ানো ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। এজন্য ব্রি নতুন জাত উদ্ভাবনের পাশাপাশি কৃষিযন্ত্র উদ্ভাবন, উন্নয়ন ও প্রস্তুতকরণে কাজ করে যাচ্ছে। আগামীতে দেশে কৃষি যান্ত্রিকীকরণে ব্রি অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
কর্মশালায় ব্রির অর্জন ও চলমান কার্যক্রম তুলে ধরেন পরিচালক (গবেষণা) ড. মো. রফিকুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্রির পরিচালক (প্রশাসন ও সাধারণ পরিচর্যা) ড. মুন্নুজান খানম এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এসএফএমআরএ প্রকল্প পরিচালক ড. একেএম সাইফুল ইসলাম।
কর্মশালায় পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের ফসল উইং এর যুগ্ম প্রধান ফেরদৌসী আখতারসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, কৃষিযন্ত্র প্রস্তুতকরণ প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিসহ ব্রির সকল বিভাগীয় প্রধান, শাখা প্রধান ও আঞ্চলিক কার্যালয় প্রধান উপস্থিত ছিলেন।
প্রকল্প ও কর্মসূচি পরিচালকদের সাথে মতবিনিময়: বিকেলে মহাপরিচালকের সভাকক্ষে পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (সচিব) ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান ব্রির সকল প্রকল্প এবং কর্মসূচি পরিচালকের সাথে মতবিনিময় করেন। এসময় তিনি সকল প্রকল্প এবং কর্মসূচির চলমান কার্যক্রম সম্পর্কে অবহতি হন এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কার্যক্রম সম্পন্ন করার উপর জোর দেন।