
এ জেড সুজন (নাটোর) : বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো আধুনিক সেচব্যবস্থা ‘ভ্যালি ইরিগেশন সেন্টাল পিভট’ স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)। অস্ট্রিয়ার আর্থিক সহায়তায় বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে এই অত্যাধুনিক সেচ প্রকল্প। এটি স্থাপন করা হবে নাটোরের লালপুরের নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের ২টা কৃষি খামারে।
বিএডিসি সূত্র জানায়, বিশ্বের উন্নত কৃষি ব্যবস্থায় বহুল ব্যবহৃত সেন্ট্রাল পিভট ইরিগেশন প্রযুক্তি এবার প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে স্থাপন হতে যাচ্ছে। এ প্রযুক্তির মাধ্যমে নিচ থেকে নয়, পাইপের সঙ্গে যুক্ত স্প্রিংকলারের মাধ্যমে ওপর থেকে জমিতে পানি ছিটানো হবে। বড় আকারের কৃষিজমিকে কম সময় ও কম পানি ব্যবহার করে সেচ দেওয়ার এই আধুনিক ব্যবস্থা দেশের কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের ভবানীপুর কৃষি খামার ও মূলাডুলি কূষি খামার পরীক্ষামূলকভাবে প্রকল্পটি চালু হলে বিভিন্ন খামার ও বেসরকারি উদ্যোগেও এই প্রযুক্তি ছড়িয়ে পড়বে বলে মনে করছেন কৃষিবিদরা। এতে একই জমিতে একাধিক ফসল ফলানো, চাষের সময় কমানো এবং পানির সাশ্রয় সম্ভব হবে। ফলে খামারের আবাদযোগ্য জমির পরিমাণও বৃদ্ধি পাবে।
বিএডিসির সুফল ও সুগার মিলের মহাব্যবস্হাপক (খামার) বাকি বিল্লাহর কঠোর পরিশ্রমে বিগত ১০ বছরের কোটি কোটি টাকার লোকসান মিটিয়ে ২০২১-২২ অর্থবছর থেকে সুগার মিলের খামার বিভাগ থেকে প্রতিবছরে কোটি কোটি টাকা লাভ হচ্ছে বলে যানিয়েছেন কর্তৃপক্ষরা।
এ বিষয়ে নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের মহাব্যবস্থাপক (খামার) বাকি বিল্লাহ বলেন, মিলের খামার বিভাগ থেকে লাভ হবার কারনটা হলো সেচ ব্যবস্থাপনা ও ড্রেন সংস্কার সহ অন্যান্য সরঞ্জাম যা আমরা বিএডিসি থেকে বিনামূল্যে পেয়েছি। আরো অনেক উন্নত প্রযুক্তির সেচ আমরা পেতে যাচ্ছি যা দেশে প্রথমবারের মতো এই আধুনিক সেচ ব্যবস্থা আমাদের খামারে স্থাপন হচ্ছে—এটা শুধু মিলের জন্য নয়, এঅঞ্চলের কৃষির জন্যও বড় অর্জন। আমরা আশা করছি, সেন্ট্রাল পিভট প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা সময়, শ্রম এবং পানি- তিনটিই সাশ্রয় করতে পারবো। আগে যেখানে সেচ দিতে দুই দিন লাগত, সেন্ট্রাল পিভট সেটিতে কয়েক ঘণ্টায় কাজ শেষ করবে। এর ফলে আমরা একই জমিতে একাধিক মৌসুমি ফসল নিতে পারবো। সুগার মিলের বর্তমান উৎপাদন হচ্ছে ১৫/১৭ মেট্রিক টন এ ধরনের উন্নত প্রযুক্তির সেচ চালু হলে আখ উৎপাদন ৩০/৩৫ মেট্রিক টন আখ উৎপাদন হবে।
তিনি আরো বলেন, আমরা প্রতি বছরে সুগার মিল থেকে গাছ লাগিয়ে থাকি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সুগার মিলে নিজস্ব জায়গা ২৭ হাজার গাছ লাগিয়েছি আমরা আগামীতে আরো বেশি গাছ লাগাবো।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় কৃষকরা জানান, সুগার মিলের জায়গা লিজ নিয়ে চাষাবাদ করে বিগত সময়ের তুলনায় বর্তমানে বিএডিসির দেওয়া সেচ ব্যবস্থাপনা কারণে খরচ কমে জমিতে ফসল বেশি হয়ায় লাভের অংশ বেশি হচ্ছে।



