📍 ঢাকা | 📅 শুক্রবার, ৩ অক্টোবর ২০২৫

ধানের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইরি-ব্রি ও অন্যান্য গবেষণা সংস্থা সমন্বিতভাবে কাজ করছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ইরি) বাংলাদেশ আয়োজিত এগ্রি (এক্সিলারেটেড জেনেটিক গেইন ইন রাইস) নেটওয়ার্কস ট্রায়াল ২০২৩-এর বার্ষিক অগ্রগতি সভা ঢাকায় শুরু হয়েছে। শনিবার (১১ মার্চ) সকালে ঢাকার একটি হোটেলে আয়োজিত দু’দিন ব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্ভোধনী সেশনে সভাপতিত্ব করেন ইরি বাংলাদেশ এর কান্ট্রি রিপ্রেসেন্টেটিভ ড. হোমনাথ ভান্ডারী । এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পরমানু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা)’র মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইরি ফিলিপাইনের বিজ্ঞানি ড. সংকল্প ভোসালে ।

ইরি বাংলাদেশের সিনিয়র রাইস ব্রিডার এবং এগ্রি নেটওয়ার্কস প্রকল্প প্রধান ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম  স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন এবং কর্মশালার এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা করেন।  তিনি বাংলাদেশে ইরি-ব্রি, অন্যান্য কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক পরিচালিত এগ্রি নেটওয়ার্কস ট্রায়ালের গত এক বছরের হালনাগাদ তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করেন। বিল এন্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের (বিএমজিএফ) এর অর্থায়নে ইরি ও ব্রি কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন এই প্রকল্পের মাধ্যমে স্বল্প সময়ে ধানের জাত উদ্ভাবন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিরূপ পরিস্থিতিতে উন্নতজাতের ধান গবেষণার জন্য এগ্রি নেটওয়ার্কস ট্রায়ালের বর্তমান পরিস্থিতি ও  ভবিষ্যৎ কর্মসূচি নিয়ে মোট ১১ টি প্রবন্ধ কর্মশালায় উপস্থাপন করা হয়। সভায় ইরি, ব্রি, বিনা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের কৃষিবিজ্ঞানীগন ও গণমাধ্যমকর্মীসহ শতাধিক প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিনা’র মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম  বলেন, বাংলাদেশের বৈচিত্র্যময় পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারে এমন অভিনব উন্নত ও উচ্চ ফলনশীল ধানের জাত উদ্ভাবনের এখনই উপযুক্ত সময়।  ব্রি, বিনাসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে ধান উৎপাদন বৃদ্ধি এবং দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে কৃষকদের সহায়তা করছে ইরি । তিনি জানান, এগ্রি নেটওয়ার্কস প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে ধানের জেনেটিক গেইন বৃদ্ধি করা  সম্ভব হবে। বর্তমানে মাঠে প্রচলিত বেশিরভাগ জনপ্রিয় ধানের জাতের বয়স ২৮-৩০ বছরের বেশি। অনেকগুলো নতুন জাত উদ্ভাবন করা হলেও সেগুলো আগের জনপ্রিয় জাতগুলোকে প্রতিস্থাপন করতে সক্ষম হয়নি।  ধান উৎপাদনে জেনেটিক গেইন বাড়ানোর জন্য ধানের প্রজনন চক্রের সময়কাল সংক্ষিপ্ত করা, প্রজনন লাইন নির্বাচন নির্ভুল করা, প্রজনন তথ্য ব্যবস্থাপনার আধুনিক কৌশল ব্যবহার এবং ব্যাপকভাবে সরেজমিন মাঠ গবেষণা করে ভৌগলকি স্থান, বাজার ও কৃষকের চাহিদা ভিত্তিক জাত উদ্ভাবনের লক্ষ্যেে ইরি’র নেতৃত্ত্বে কাজ করছে দেশীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠান সমূহ।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্রি মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর বলনে, বিএমজিএফ‘র আর্থিক সহায়তায় এবং ইরি’র কারিগরী সহায়তায় এগ্রি নেটওয়ার্কস ট্রায়ালের মাধ্যমে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ধানের জাত উদ্ভাবন প্রক্রিয়ার সময় ৫-৭ বছর কমিয়ে আনা হচ্ছে। আগে যেখানে একটি জাত উদ্ভাবনে ১০-১৫ বছর লেগে যেত এখন তা ৮-১০ বছরে সম্পন্ন করা যাবে। গবেষণা কার্যক্রমের

আধুনিকীকরণের মাধ্যমে আগামী দিনের ধানের জাতে জেনেটিক গেইন (ফলন) অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে। এর মাধ্যমে ভৌগলিক স্থান, বাজার ও কৃষকের চাহিদা মাফিক ধানের জাত উদ্ভাবনের ফলে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা টেকসই করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বাংলাদেশে ইরি’র কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. হোমনাথ ভান্ডারী বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা টেকসই করার জন্য আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। গবেষণা ও মানবসম্পদ এবং ভৌত সুবিধার উন্নয়নসহ সকল ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের গবেষণা খাতে ব্যাপক সংস্কার প্রয়োজন। বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি যেমন জিনোমিক্স, ফেনোমিক্স, প্রোটোমিক্স, বায়োইনফরমেটিক্স, জিনোম এডিটিং, স্পিড ব্রিডিং, অটোমেশন, ডিজিটাইজেশনে বাংলাদেশের সক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ইরির সহায়তা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে ।

Share:

Facebook
Twitter
Pinterest
LinkedIn

Comments are closed.

আরো পড়ুন