Thursday , June 26 2025

কাঁঠালের যত গুণ!

নাহিদ বিন রফিক : কাঁঠাল আমাদের জাতীয় ফল। আকারের দিক থেকে ফলের মধ্যে সম্ভবত পৃথিবীর সবচেয়ে বড়। পুষ্টি ও স্বাদে কাঁঠাল অতুলনীয়। বিশাল এ ফলটির কোনো অংশই ফেলনা নয়। অন্য ফলের চেয়ে এটি দামে বেশ সস্তা। তাইতো কাঁঠালকে বলা হয় ‘গরীবের ফল’। কাঁঠালের কোষ তিন রকমের। দোরসা বা আদরসা, গালা এবং খাজা বা চাউলা (শক্ত)। গ্রামাঞ্চলের মানুষ নানাভাবে কাঁঠাল খেয়ে থাকেন। অনেকেই নরম কোষকে চটকিয়ে রস বের করে দুধ-ভাত কিংবা মুড়ি দিয়ে খায়। কেউ পান্তাভাত দিয়ে খায়। কেউ আবার এমনিতেই খেতে পছন্দ করেন। কাঁচা কাঁঠালের তরকারি নিরামিষভোজীদের প্রিয় আহার। এর বিচি মাছ-গোশতের সাথে রেঁধে, ভর্তা করে এবং ভেজে খাওয়া যায়। কাঁঠালের মোথা উৎকৃষ্ট গোখাদ্য। কাঁঠাল দিয়ে তৈরি করা যায় জুস, জেলি, স্কোয়াশ, জ্যাম এমনকি কাঁঠালসত্ব।

এদেশের মাটিতে স্থানীয় এবং উচ্চফলনশীল কিছু জাতের কাঁঠাল চাষ হয়। উচ্চফলনশীল কাঁঠালের সংখ্যা ৩। এসবের মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এ পর্যন্ত বারি কাঁঠাল-১ ও বারি কাঁঠাল-২ নামে দু’টো জাত উদ্ভাবন করেছে। এছাড়া বাংলাদেশ কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের জার্মপ্লাজম সেন্টার বের করেছে ১টি জাত, যার নাম এফটিআইপি বাউ কাঁঠাল-১। স্থানীয় জাতের মধ্যে হাজারী, পদ্মরাজ, চম্পাগন্ধা, গোলাপগন্ধা, রুদ্রাক্ষি অন্যতম।

কাঁঠালের আছে অনেক পুষ্টি। পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে, এর প্রতি ১০০ গ্রাম আহারোপযোগী ফলে ৪৭০০ মাইক্রোগ্রাম ক্যারোটিন (ভিটামিন-এ) রয়েছে। অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের মধ্যে আমিষ ১ দশমিক ৮ গ্রাম, শর্করা ৯ দশমিক ৯ গ্রাম, চর্বি ০ দশমিক ১ গ্রাম, খনিজ পদার্থ ১ দশমিক ১ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ২০ মিলিগ্রাম, লৌহ ০ দশমিক ৫ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-‘বি১’ ০ দশমিক ১১ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-‘বি২’ ০ দশমিক ১৫ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-সি ২১ মিলিগ্রাম এবং খাদ্যশক্তি আছে ৪৮ কিলোক্যালরি।

কাঁঠালে আছে অনেক ভেষজগুণ। ক্যান্সার এবং হৃদরোগের মতো ভয়াবহ অসুখের ঝুঁকি কমায়। উচ্চরক্তচাপ, রাতকানা, আলসার, টেনশন, অতিরিক্ত ওজন, রক্ত আমাশয়, ম্যালেরিয়া, সর্দি, জ্বর এবং কাশির জন্য উপকারি। নিয়মিত কাঁঠাল খেলে অস্টেওপরোসিস নামক এক প্রকার হাড়ের রোগ প্রতিরোধ হয়, সে সাথে এর গঠনকে করে সুদৃঢ়। ত্বকের বলিরেখা দূর করতে এর বিচি শিলপাটায় পিশে কোল্ডক্রিমের সাথে মিশিয়ে নিয়মিত ব্যবহার করতে হবে। কাঁঠালের বিচিতে প্রচুর পরিমাণে হিমোগ্লোবিন থাকায় শরীরের রক্ত স্বল্পতা দূর হয়। তাই গ্রীষ্মের ভরা মৌসুমে পরিমাণমতো কাঁঠাল খেয়ে নিজে সুস্থ থাকি। অপরকেও রাখি তরতাজা। এমন সুযোগ সবার যেন হয়।

This post has already been read 5476 times!

Check Also

বিএলআরআইতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে “বিশ্ব দুগ্ধ দিবস-২০২৫” উদযাপন

সাভার সংবাদদাতা: “Let’s Celebrate the Power of Dairy” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আজ ১ জুন …