Friday 29th of March 2024
Home / ফসল / ধান গাছের ছবি দেখেই রোগবালাই চিহ্নিত করবে ‘রাইস সল্যুশন’ অ্যাপস

ধান গাছের ছবি দেখেই রোগবালাই চিহ্নিত করবে ‘রাইস সল্যুশন’ অ্যাপস

Published at জানুয়ারি ১, ২০২৩

গাজীপুর সংবাদদাতা: বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) এ প্রথমবারের মতো ধানের ক্ষেত থেকেই আক্রান্ত ধান গাছের ছবি অ্যাপসে প্রেরণের মাধ্যমে রোগবালাই চিহ্নিতকরণের লক্ষ্যে ‘রাইস সল্যুশন’ (সেন্সর-ভিত্তিক ধানের বালাই ব্যবস্থাপনা) নামক মোবাইল অ্যাপস উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল শনিবার (৩১ ডিসেম্বর ২০২২) কৃষি মন্ত্রী ব্রিতে ছয় দিনব্যাপি বার্ষিক গবেষণা পর্যালোচনা কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ মোবাইল অ্যাপস উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম এবং ব্রির মহাপরিচালক ড. মো: শাহজাহান কবীর।

আইসিটি বিভাগস্থ ‘মোবাইল গেইম ও এ্যাপ্লিকেশনের দক্ষতা উন্নয়ন (২য় সংশোধিত)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায়, ওয়ান আইসিটি নামক সফটওয়্যার কোম্পানীর সহায়তায় ও ব্রির আইসিটি সেলের তত্ত্ববধানে গবেষক ও কৃষক বান্ধব ডায়নামিক মোবাইল অ্যাপস তৈরি করা হয়েছে। অ্যাপসের মাধ্যমে রোগবালাই ও পোকামাকড় সংক্রান্ত যেকোন সমস্যার ছবি বা তথ্য ইনপুট হিসেবে প্রদান করা হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রেরিত ছবির রোগ বা পোকামাকড়ের সমস্যা নির্ণয়পূর্বক সঠিকতার হার নির্ধারণ করে ব্যবস্থাপনামূলক পরামর্শ প্রদান করবে। ফলে কৃষক পর্যায়ে অ্যাপসটির মাধ্যমে সেবা প্রাপ্তিতে সময়, খরচ ও যাতায়াত সাশ্রয়সহ মাঠের সমস্যা মাঠেই সমাধান হবে। মূলত ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের অন্যতম প্রযুক্তি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মেশিন লার্নিং ও সেন্সর প্রযুক্তি ব্যবহার করে আপসটি তৈরি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রোগ ও পোকামাকড়ের ছবি প্রদানপূর্বক অ্যাপসের মাধ্যমে আক্রান্ত ধান গাছের রোগবালাই ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত পরামর্শমূলক সেবা প্রদান করা হচ্ছে।

ব্রিতে ‘রাইস সল্যুশন’ মোবাইল অ্যাপস উদ্বোধন করেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি।

কৃষি মন্ত্রী বলেন, দেশে পোকামাকড়ের আক্রমণসহ বিভিন্ন কারণে মোট ফসলের ১০-১৮ ভাগ উৎপাদন পর্যায়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে কৃষকের সঠিক জ্ঞান না থাকার কারণে মাঠ পর্যায়ে আধুনিক ধান চাষে রোগ ও পোকামাকড় দমন ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি যথাযথ আধুনিক পদ্ধতির অপ্রতুলতা ও ফিডব্যাক ব্যবস্থা না থাকার কারণে কৃষক কাঙ্খিত ফলন থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। এছাড়া ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ ও আগামীতে ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে খাদ্যের উৎপাদন বৃদ্ধিকল্পে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। অতএব, অ্যাপসটি ব্রি’র সকল আঞ্চলিক কার্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন এলাকার ছবি এই অ্যাপসে নিয়মিত সংযোজন হওয়ার কারণে এলাকাভিত্তিক ধানের ক্ষেত্রে কোন এলাকায় কোন পোকামাকড় বা রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি তদানুযায়ী বিজ্ঞানীদের গবেষণা কার্যক্রমে সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি অ্যাপসটি নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক টুলস হিসেবে কাজ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, কৃষকদের দেশীয় জ্ঞান ও ৪র্থ শিল্পের প্রযুক্তির সংযোগ স্থাপনার মাধ্যমে প্রিসিশন এগ্রিকালচার বাস্তবায়নে নতুন অ্যাপসটি ধারণার সূচনা করবে। অ্যাপসটির ব্যাপক ব্যবহার শুরু হলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্মার্ট কৃষির বাস্তবায়নে সহায়ক হওয়ার পাশাপাশি এসডিজি, জাতীয় কৃষি নীতি ও জাতীয় আইসিটি নীতিমালা বাস্তবায়ন হবে।

উল্লেখ্য, ব্রিতে একই প্রকল্পের আওতায় দেশব্যাপি এলাকাভিত্তিক উপযুক্ত ধানের জাত নিরূপণে ‘রাইস প্রোফাইল’ নামক মোবাইল অ্যাপসটিও শীঘ্রই মাঠপর্যায়ে ব্যবহারের জন্য উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে।

This post has already been read 1332 times!