শনিবার , জুলাই ২৭ ২০২৪

ধানের নতুন দুটি জাত উদ্ভাবন : উৎপাদনে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের আশাবাদ

নিজস্ব সংবাদদাতা : বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) -এর ভান্ডারে যোগ হলো বোরো ধানের দুটি নতুন জাত। কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে মঙ্গলবার (৯ অক্টোবর) জাতীয় বীজ বোর্ডের সভায় নতুন উদ্ভাবিত জাত দু’টি অনুমোদন পায়। সভায় বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর এবং বীজ বোর্ড ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বিজ্ঞানীরা নতুন এই দুটি জাতের নাম দিয়েছেন ব্রি ধান-৮৮ ও ব্রি ধান-৮৯। ব্রি ধান-৮৮ নামে নতুন জাতটির ফলন একই মৌসুমের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্রি ধান-২৮’র চেয়ে হেক্টরে অধা টন বেশি এবং ব্রি ধান-৮৯ নামে জাতটির ফলন হবে ব্রি-২৯’র চেয়ে প্রতি হেক্টরে এক টন বেশি বলে জানিয়েছেন ব্রি’র বিজ্ঞানীরা।

ব্রি উদ্ভাবিত নতুন দু’টি জাত ছড়িয়ে পড়লে ধান উৎপাদনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা। উপযুক্ত পরিচর্যা এদের ফলন হেক্টরপ্রতি হতে পারে ৯ টনেরও বেশি।

বিজ্ঞানীরা জানান, ব্রি ধান-৮৮ টিস্যু কালচার পদ্ধতিত উদ্ভাবিত একটি জাত। এটি বোরো মৌসুমের স্বল্পমেয়াদি একটি জাত, যা প্রচলিত ব্রি ধান-২৮’র পরিপূরক। জীবনকাল ব্রি-২৮’র মতোই। হালকা ঝড়-বৃষ্টিতে ঝরে পড়বে না।  ফলন হবে ৬ থেকে ৭ টন। সারাদেশে এর গড় ফলন হবে ৭ টন। ধান পাকার পর ব্রি-২৮’র বীজ পাতা হেলে গেলেও ব্রি-৮৮’র ক্ষেত্রে পাতা খাড়া থাকবে। ধান পাকার পরও গাছ সোজা থাকায় রিপার মেশিন ব্যবহার করা যাবে। যে কারণে ধারণা করা হচ্ছে, হাওর অঞ্চলে এটি জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। এই চালের ভাত হবে ঝরঝরে। বিশেষ করে যেসব অঞ্চলে ব্রি-২৮’র বেশি চাষ হয়- খুলনা ও সাতক্ষীরা অঞ্চলের চাষিরা এই জাত চাষ করে সুফল পাবেন। নতুন জাতে রোগ বালাইয়ের প্রকোপ কম। এছাড়াও ধান কাটতে রিপার মেশিন ব্যবহার করা যাবে। ফলে শ্রমিকের সঙ্কটের ভোগান্তি থেকে রেহাই পাবেন চাষিরা।

ব্রি ধান-৮৯ বন্য প্রজাতির একটি ধানের সঙ্গে সঙ্করায়ণের মাধ্যমে উদ্ভাবন করা হয়েছে। এটি বোরো চাষের একক অঞ্চলে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠার ব্যাপারে বিজ্ঞানীরা আশাবাদী। জাতটি একই মৌসুমের ব্রি-২৯’র পরিপূরক। নতুন জাতটির ফলন হবে প্রচলিত ব্রি-২৯’র চেয়ে এক টন বেশি। গড়ে যার ফলন হবে ৮ টন। তবে উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে জাতটি ৯.৭ টন পর্যন্ত ফলন দিতেও সক্ষম। জাতটির জীবনকাল ১৫৪ থেকে ১৫৮ দিন, যা ব্রি-২৯’র চেয়ে ৩ থেকে ৫ দিন কম। সারাদেশেই এটি চাষযোগ্য। এই চালের ভাত হবে ঝরঝরে এবং খেতে সুস্বাদু।

This post has already been read 3565 times!

Check Also

জিএমও নিয়ে প্রচলিত ধারণা ভুলের দাবী

নিজস্ব প্রতিবেদক: জিএমও নিয়ে প্রচলিত ধারণা ভুলের দাবী করেছেন একদল বিজ্ঞানী ও গবেষক। এ ব্যাপারে …