
নিজস্ব প্রতিবেদক: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, “গত কয়েক বছরে আমরা দেখেছি কপ সম্মেলনে লস অ্যান্ড ড্যামেজ তহবিল নিয়ে অনেক আলোচনা ও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের হাতে সেই অর্থ পৌঁছায় না—মাঠপর্যায়ে এর বাস্তব কোনো প্রভাবই দেখা যায় না। এই তহবিল সরাসরি পৌঁছাতে হবে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় সামনের সারির মানুষের কাছে।”
ব্রাজিলের বেলেম শহরে রবিবার রাত (১৬ নভেম্বর) এবং বাংলাদেশ সময় সোমবার (১৭ নভেম্বর) একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত সাইডলাইন অধিবেশনে জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন কপ৩০–এর শেয়ার ডে উপলক্ষে আয়োজিত “ফ্রম লোকাল নলেজ টু গ্লোবাল অ্যাকশন: বিল্ডিং রেজিলিয়েন্স থ্রু কলাবোরেশন (From Local Knowledge to Global Action: Building Resilience through Collaboration)” -শীর্ষক অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জলবায়ু গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইক্যাড অধিবেশনটি আয়োজন করে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, কার্বন নিঃসরণ কমানোই এখন আমাদের প্রধান দাবি। দূষণকারীরা যখন মুক্তভাবে নিঃসরণ চালিয়ে যাচ্ছে, তখন শুধু প্রকল্পভিত্তিক তহবিল এনে কোনও লাভ নেই। উপদেষ্টা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে হাওর–বাঁওড় ও নদনদী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গ্রামাঞ্চলে মাছের উৎপাদন কমছে, প্রভাব পড়ছে মৎস্যজীবীদের জীবিকায়। গবাদিপশু ব্যবস্থাপনাও বড় চ্যালেঞ্জে পড়েছে। তাই পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের বাইরেও সব মন্ত্রণালয়ের কর্মকাণ্ডে জলবায়ু বিবেচনা জরুরি।
তিনি বলেন, বন্যা মোকাবিলায় কিছু প্রস্তুতি থাকলেও হিটস্ট্রোক, লবণাক্ততা, বজ্রপাত, পানির সংকট-সহ নতুন উদীয়মান ঝুঁকির ক্ষেত্রে প্রস্তুতি এখনো দুর্বল। নারীদের বিশেষ ঝুঁকির বিষয়টি তুলে ধরে তিনি আরো বলেন, অনেক নারী গবাদিপশুর দায়িত্বের কারণে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে পারেন না, ফলে এসব আশ্রয়কেন্দ্রের কার্যকারিতাই প্রশ্নের মুখে পড়ে।
স্থানীয় জ্ঞানকে বৈশ্বিক আলোচনায় প্রতিফলনের উপর গুরুত্বারোপ করে বক্তারা বলেন, আলোচনার ফলাফল ভবিষ্যতের আঞ্চলিক গবেষণা ও নীতিমালা প্রণয়নে ব্যবহার করা হবে। অধিবেশনের উদ্বোধনী বক্তব্য দেন আইক্যাডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাকিব হক। আলোচনায় অংশ নেন বিভিন্ন দেশের গবেষণা নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ সরকার, শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ প্রতিনিধিরা।

