
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, জলবায়ু সমাধান এখন আর মুনাফাকেন্দ্রিক অর্থনীতির হাতে নয় বরং যুবদের নেতৃত্বে ন্যায্যতার ভিত্তিতে গড়ে উঠতে হবে। তিনি বলেন, “আমরা এমন এক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা তৈরি করেছি যা প্রকৃতিকে ও বাস্তুসংস্থানকে ধ্বংস করছে, পরিবেশকে বিপদে ফেলছে এবং আমাদের অস্তিত্বকেই হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে।”
ব্রাজিলের বেলেমে শনিবার বিকালে (১৫ নভেম্বর) বাংলাদেশ সময় রবিবার (১৬ নভেম্বর) জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন কপ৩০–এর ব্লু জোনে অবস্থিত বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে দ্যা রোল অফ ইউথ, গভর্নমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল বিজনেস ইন ক্লাইমেট সলিউশনস (The Role of Youth, Government and Social Business in Climate Solutions)- শীর্ষক ইভেন্টে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
নোবেল শান্তি বিজয়ী ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস-এর ‘থ্রি জিরো’—শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব ও শূন্য কার্বন নিঃসরণের দর্শনের কথা উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, “এ লক্ষ্যপূরণে আজকের বিশ্বকে শূন্য বর্জ্য, শূন্য ও দায়িত্বশীল সম্পদ সঞ্চয়ের শপথ নিতে হবে। আমাদের তরুণদের এমন এক অর্থনৈতিক কাঠামো গড়ে তুলতে হবে, যেখানে শূন্য বর্জ্য, শূন্য কার্বন এবং মৌলিক চাহিদার অতিরিক্ত কোনো ব্যক্তিগত লাভ থাকবে না।”
উপদেষ্টা আরো বলেন, সামাজিক ব্যবসা কোনো তত্ত্ব নয়, বাস্তব সমাধান। এই ব্যবসা শুধু মুনাফা সঞ্চয় করেনা, বরং প্রতিটি টাকা ফিরে যায় সমস্যার সমাধানে। জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় এটি সবচেয়ে কার্যকর অস্ত্র। তিনি আরো বলেন, যুবদের শুধু চাকরি খোঁজার শিক্ষা দিলে হবে না, তাদের এমনভাবে তৈরি করতে হবে যেন তারা নিজেরাই কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারে।
প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী’র সঞ্চালনায় সেশনে কী-নোট স্পিকার হিসেবে বক্তব্য রাখেন নুড (NUDE)-এর চিফ ইমপ্যাক্ট অফিসার ও পার্টনার মারিয়ানা মালুফে (Mariana Malufe)। এছাড়া প্যানেল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ইউনুস সোশ্যাল বিজনেস-এর সিইও ও পার্টনার ফ্রান্সিসকো ভিসেন্তে (Francisco Vicente), ক্লাইমেট ভেঞ্চার্স ব্রাজিলের প্রোগ্রাম লিড ডিওনি ম্যানেত্তি (Dione Manetti), ইনস্তিতুতো ক্লিমা ডি ইলেইসাওর প্রকল্প সমন্বয়ক সাভিলে আলভেস (Saville Alves), বাংলাদেশি তরুণ জলবায়ু কর্মী ও ইয়ুথনেট গ্লোবালের নির্বাহী সমন্বয়কারী সোহানুর রহমান।
অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং ইউনুস সোশ্যাল বিজনেস ব্রাজিল। এতে অংশ নেন বাংলাদেশ ও লাতিন আমেরিকার তরুণ জলবায়ু সংগঠক ও উদ্ভাবকরা।

