মঙ্গলবার , নভেম্বর ৫ ২০২৪

সয়াবিন মিলে আরোপিত ভ্যাট প্রত্যাহার

নিজস্ব প্রতিবেদক : পোলট্রি, মৎস্য ও ডেইরি ফিড (খাদ্য) তৈরির অত্যাবশকীয় পণ্য সয়াবিন মিলের ‍ওপর আরোপিত কর প্রত্যাহার করেছে সরকার। সোমবার (২ অক্টোবর) এ ব্যাপারে একটি প্রজ্ঞাপন (দেখতে এখানে ক্লিক করুন) (এস.আর.ও. নং- ২৮০-আইন/২০২৩/১৯৪/কাস্টমস) জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়- সরকার কাস্টমস অ্যাক্ট ১৯৬৯ (অ্যাক্ট নং ৪) এর সেকশন ১৯ এর সাব সেকশন (১) এবং মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ (২০১২ সনের 8৭ নং আইন) এর ধারা ১২৬ এর উপ-ধারা (১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাথে পরামর্শক্রমে, জনস্বার্থে, গত ২০২০ সনের ৩ জুন তারিখে জারিকৃত প্রজ্ঞাপন এস.আর.ও. নং ১২৮-আইন/২০২০/৭৯/কাস্টমস এর অধিকতর সংশোধন করেছে।

এ ব্যাপারে এক প্রতিক্রিয়ায় বাফিটা (বাংলাদেশ এগ্রো ফিড ইনগ্রিডিয়েন্টস ইম্পোটার্স এন্ড ট্রেডার্স এসোসিয়েশন) সভাপতি আমিরুল ইসলাম মন্টু এগ্রিনিউজ২৪.কম কে বলেন, আমরা অত্যন্ত আনন্দিত এবং খুশি এজন্য যে অর্থ মন্ত্রণালয় আমাদের দাবী পূরণ করেছেন। এটি স্বীকার করতে কোন দ্বিধা নেই যে, আমাদের সংগঠনের (বাফিটা) বাফিটা’র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. গিয়াস উদ্দিন খাঁন স্বপনের একান্ত প্রচেষ্টায় এটি সফল হয়েছে। আমাদের অনুরোধে তিনি সয়াবিন মিলের ওপর আরোপিত ভ্যাট প্রত্যাহারের ব্যাপারে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন এবং সফলকাম হয়েছেন। এর ফলে পোলট্রি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সেক্টর সংশ্লিষ্ট সকলেই উপকৃত হবেন। এর ফলে সয়াবিন মিলের দাম কমবে এবং সেই সাথে ফিডের দাম কমবে বলে আশা করছি। আমরা চাই, সয়াবিন মিলের ওপর আরোপিত ভ্যাট প্রত্যাহারের সুফল যেন প্রান্তিক খামারি পর্যন্ত পৌঁছায়।

বাফিটা সভাপতি সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত কুমার দেব এগ্রিনিউজ২৪.কম কে বলেন, বাফিটা’র প্রতিটা সদস্যই প্রাণিজ সেক্টরের উন্নয়নে কাজ করেন। সয়াবিন মিলে আরোপিত ভ্যাট প্রত্যাহারের ব্যাপারে সাংগঠনিকভাবে আমরা আমাদের ভাইস প্রেসিডেন্ট কে (মো. গিয়াস উদ্দিন খাঁন স্বপন) দায়িত্ব দেই এবং তিনি এতে সফলকাম হন। এটি শুধু বাফিটা কিংবা ব্যাক্তি গিয়াস উদ্দিন নয়, সেক্টরের সকলের জন্যই একটি বড় অর্জন। দেশের প্রাণিজ খাতের উন্নয়নে আমরা সেক্টর সংশ্লিষ্ট সকলেই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাবো।

বাফিটা’র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও আস্থা ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. গিয়াস উদ্দিন খাঁন স্বপন এগ্রিনিউজ২৪.কম কে বলেন, আমরা আস্থা ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড একটি স্বনামধন্য বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান। যারা দীর্ঘদিন অত্যান্ত সুনামের সহিত ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে।

“আপনারা জানেন যে, কোভিড-১৯, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, খাদ্য তৈরীর কাঁচামালসমূহের উৎপাদন কমে যাওয়ার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে অস্বাবাভিক মূল্য বৃদ্ধি সহ ইত্যাদি কারণে অনেক ফিড মিল ও ছোট ছোট খামার বন্ধ হয়েছে” -যোগ করেন গিয়াস উদ্দিন খাঁন ।

তিনি বলেন, পোল্ট্রি শিল্পে পোল্ট্রি, মৎস ও পশুখাদ্য উৎপাদনে Soyabean Meal/Extraction একটি অত্যাবশকীয় উপাদান। পণ্যটির বাজার মূল্য বেশী হওয়ায় এবং অনেক পরিমান ব্যবহারের ফলে বাংলাদেশ সরকার পণ্যটি দীর্ঘদিন রেয়াতী সুবিধা দিয়ে আসছিল। কিন্তু SRO-HS Code সঠিক থাকা সত্ত্বেও শুধু নামের তারতম্য থাকার কারণে জটিলতা সৃষ্টি হয়।

গিয়াস উদ্দিন খাঁন আরো বলেন, বাংলাদেশ আইন মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়কে অশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞাতা যে, আমাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে Soyabean Meal এর রেয়াতী সুবিধা পুনরায় ফিরিয়ে দেয়ার মাধ্যমে দেশের ফিড মিল ও সর্বোপরি খামারিদের পাশে দাড়িয়েছে।

উল্লেখ্য যে, ‘দি বাংলাদেশ অয়েল মিলস এসোসিয়েশন’ এর দাবীর প্রেক্ষিতে সয়াবিন অয়েল কেক/সয়াকেক, রেপসীড কেক ও সানফ্লাওয়ার সীড থেকে উৎপাদিত অয়েল কেক (এইচএস কোড: ২৩০৪.০০.০০ এবং ১২০৮.১০.০০) আমদানিতে ১৫% করারোপ করে সরকার।

উল্লেখিত এসোসিয়েশনটির পক্ষ থেকে ২০১৯ সনের ৫ মে  মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় বরাবরে একটি পত্র প্রেরণ করা হয় যেখানে প্রস্তাবিত হারে শুল্ক ও কর হার আসন্ন ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে বৃদ্ধির জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে সুপারিশ করার আবেদন জানানো হয়। উক্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও মৎস্য অধিদপ্তরের মতামত জানতে চেয়ে চিঠি দেয় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

প্রসঙ্গত ১৫% রেগুলেটরি ডিউটি (RD) এবং ১৫% কাস্টমস ডিউটি (CD) আরোপ করার দাবির যৌক্তিকতা হিসেবে সংগঠনটি  ‘সীড ক্র্যাশিং ইন্ডাষ্ট্রি’র সুরক্ষা’র বিষয়টিকে সামনে আনেন। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর পোল্ট্রি, ডেইরি ও মৎস্য শিল্প সংশ্লিষ্টদের মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।

This post has already been read 12780 times!

Check Also

মিনিকেট নামে জাত নেই, এত মিনিকেট চাল আসে কোথা থেকে?

কৃষিবিদ এম আব্দুল মোমিন : বাজারের সবচেয়ে জনপ্রিয় চালের ব্র্যান্ড নাম মিনিকেট। ঝকঝকে, ঝরঝরে অপেক্ষাকৃত …