Wednesday 24th of April 2024
Home / তারকা কৃষক / বছরে বিঘা প্রতি ৩৮ মণ ফলন দিবে নতুন উদ্ভাবিত নূর’ধান

বছরে বিঘা প্রতি ৩৮ মণ ফলন দিবে নতুন উদ্ভাবিত নূর’ধান

Published at নভেম্বর ১৭, ২০২২

‘নূর’ধান’ হাতে রাজশাহীর তানোরের গোল্লাপাড়ার কৃষক নূর মোহাম্মদ।

মো: আমিনুল ইসলাম (রাজশাহী) : বরেন্দ্র অঞ্চলের তানোর উপজেলায় প্রধান ফসল ধান । কৃষি গবেষণায়, কৃষক পর্যায়ে নিরলসভাবে কাজ করছেন রাজশাহীর তানোরের গোল্লাপাড়ার কৃষক নূর মোহাম্মদ। ধানের নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন করে চলেছেন তিনি। তার এবারের নতুন উদ্ভাবন দেশের সবচাইতে চিকন উচ্চ ফলনশীল ধান। নাম দেওয়া হয়েছে ‘নূর ধান’। চিনি গুঁড়ার মতোই চিকন, তবে চিনি গুঁড়ার চেয়ে লম্বা। দেশের ঐতিহ্যবাহী দাদখানি, রাধুনিপাগল, কালোজিরা, বাঁশফুল, কাটারি ভোগের চেয়েও নূর ধানের চাল অনেক চিকন। প্রান্তিক কৃষক নূর মোহাম্মদের শিক্ষাগত যোগ্যতার কোনো সনদ নেই, তবে তার আছে ধান নিয়ে নতুন নতুন উদ্ভাবন চিন্তা।

কৃষি গবেষক নূর মোহাম্মদ বলেন, তার উদ্ভাবিত নতুন ‘ নূর ধান’ আমন ও বোরো উভয় মৌসুমেই আবাদ করা যাবে। দেশের কোনো চিকন ধানেরই বিঘা প্রতি ১০-১২ মণের বেশি ফলন হয় না। তার উদ্ভাবিত ধানের গড় ফলন হবে আমন মৌসুমে বিঘা প্রতি ১৭ মণ ও বোরো মৌসুমে বিঘা প্রতি ২১ মণ। সুগন্ধি না হলেও এই চালের ভাত খেতে ভালো লাগবে। তিনি আরো বলেন, একটি চিকন ‘ নূর ধান’ অপরটি ‘খরাসহিষ্ণু ধান’। ধান কাটা মাড়াই ও ঝাড়াই শেষে শুকনা ওজনে চিকন ‘নূর ধান’ বিঘা প্রতি ১৭.৫ মণ ও ‘খরাসহিষ্ণু ধান’ বিঘা প্রতি ২০ মণ । খরাসহিষ্ণু সারিগুলোর জীবনকাল কম হওয়ায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ শুরুর আগেই ধান কেটে ঘরে তোলা যাবে। আগাম ওঠার কারণে সেচের খরচ কম হবে এবং ভালো বাজার মিলবে। এ কারণে সারিগুলো বরেন্দ্র অঞ্চলের জন্য উপযোগী।

এজন্য তিনি নিজের মাটির ঘরটি বানান গবেষণাগার। নতুন ধান ও প্রায় বিলুপ্ত ধান মিলে নূর মোহাম্মদের কাছে সংরক্ষণ করা আছে এমন ধানের জাতের সংখ্যা ২০০টি। দেশীয় জাতের উন্নতি ঘটিয়ে ধানের জীবনকাল কমিয়ে আনেন। ফলন বাড়ান। ফলে জমিতে পানি কম লাগে, প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে ফসল রক্ষা পায়। খরাপ্রবণ বরেন্দ্র অঞ্চলে কিভাবে কম পানি দিয়ে এবং কম সময়ে বেশি ধান ঘরে তোলা যায়, তা নিয়ে করে চলেছেন নিরন্তর গবেষণা।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সাইফুল্লাহ আহমদ বলেন, স্বশিক্ষিত ধান গবেষক নূর মোহাম্মদ তানোর উপজেলার গর্ব। তিনি দীর্ঘদিন ধরে দেশি-বিদেশী জাতের সংকরায়ণের মাধ্যমে নতুন নতুন জাতের ধান নিয়ে নিজে থেকেই কাজ করছেন। কৃষি অফিস সবসয়ই নূর মোহাম্মদকে সবধরনের সহযোগিতা করে আসছেন। তিনি আরো বলেন, শুধু তানোর উপজেলায় নয়, পুরো বাংলাদেশে ছড়িয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা করি।

This post has already been read 9577 times!