Saturday 20th of April 2024
Home / অর্থ-শিল্প-বাণিজ্য / মহানগরীর অলিগলিতে শীতের পিঠার ধুম!

মহানগরীর অলিগলিতে শীতের পিঠার ধুম!

Published at নভেম্বর ২৯, ২০১৭

ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা) :
শীতের সাথে শীতের পিঠা বিক্রির ধুম পরেছে খুলনা মহানগরীর অলিগলিতে । সন্ধা হলেই পাড়া মহল্লার মোড়ে শীতের পিঠা বিক্রির দোকানে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দিপনায় ভীড় জমাচ্ছেন । আমাদের দেশের ঋতুবৈচিত্রের ধারায় এখন অগ্রহায়ণ মাস। গ্রামে গ্রামে চলছে নতুন ধান কাটার ধুম। কৃষাণ-কৃষাণী ব্যস্ত মাঠে বাড়ির উঠোনে। ঘরে ঘরে চলছে নবান্ন উৎসব। আবহমান গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের এই উৎসব ধরে রাখতে পাড়ায় মহল্লায় শহরসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চলছে নানা আয়োজন, নানা অনুষ্ঠান।

নতুন ধানের নতুন চালের নানা স্বাদের বাহারি পিঠাপুলি গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের অন্যতম অংশ। প্রত্যেক শীতে গ্রামের বাড়িতে তো বটেই শহরের বাসাবাড়িতেও চলে পিঠাপুলির আয়োজন। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।

এরই মধ্যেই শহর এলাকায় রাস্তার পাশের দোকানিরা বাহারি পিঠাপুলির পসরা সাজিয়ে জেঁকে বসতে শুরু করেছেন। তৈরি করছেন ভাঁপা, চিতই, কুশলি, ঝাল, সবজি মেশানো ঝাল পিঠা। তবে শীতের এসব গ্রামীণ পিঠা পাওয়া ও খাওয়া নিয়ে শহুরে মানুষের মধ্যে একটা হাহাকার ভাব থাকে।

কিন্তু এই দোকানিরা শহুরে মানুষের শীতের গ্রামীণ ঐতিহ্যের বাহারি এসব পিঠার স্বাদ আস্বাদনে অনেকটা সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকেন। চাইলেই যে কোনো মানুষ শীতের এসব পিঠার স্বাদ নিতে পারেন। বাসার পাশে, শহরের পথে পথে বা মোড়ে মোড়ে এসব পিঠাপুলির পসরা সাজিয়ে আপনার অপেক্ষায় শীতজুড়ে বসে থাকবে এই দোকানিরা।

মজিদ স্বরণী রোডের পিঠা বিক্রেতা আয়েশা খাতুন বলেন, সারা বছর এই শীতের অপেক্ষায় থাকি। স্বামীর যা আয় তাতে সংসার চালাতে কষ্ট হয়ে যায়।এই পিঠা বিক্রি করে আমার প্রতিদিন চার-পাচঁ’শ টাকা লাভ হয়। ছেলে মেয়ে নিয়ে এই সময়টা ভালো ভাবেই চলে যায়।

গতকাল সোমবার নগরীর কেডিএ মসজিদ এর সামনে একটি পিঠার দোকানে পিঠা খাচ্ছিলেন মোঃ মনিরুল হুদা। তিনি বলেন, শীতে বাড়িতে থাকলে প্রায়ই পিঠা খাওয়া হয়। এখানে সেগুলোর সবকিছু পাওয়া যায় না। তবে চিতই ও ভাপা পিঠা তিনি নিয়মিতই খান।

যথেষ্ট বিক্রি হয় বলে পিঠা বিক্রেতারাও এই মৌসুমি ব্যবসায় খুশি। মোল্লা বাড়ি মোড়ের এমন একজন বিক্রেতা সালাম বলেন, এখানে সময় দিতে হয় কম। প্রতিদিন দুপুরের পর বসি। রাত পর্যন্ত বিক্রি করি। লাভটাও মন্দ হয় না। প্রতিদিন ছয়- সাত’শ টাকা লাভ হয় বলেও জানালেন তিনি।

কী কী পিঠা পাওয়া যায়: ভাপা ও চিতই পাবেন হাতের নাগালেই। নারকেল আর খেজুর গুড়ে তৈরি ভাপা এবং সরিষা ও শুঁটকির হরেক পদের ভর্তার সঙ্গে চিতই পাবেন নগরীর প্রায় সব জায়গাতেই। আর পিঠার দোকানগুলোতে পাবেন পাটিসাপটা, চাঁদপুলি, মালপোয়া, দুধচিতই, পাক্কন, নারকেল পুলিসহ নানা রকমের পিঠা।

দাম কেমন: ফুটপাতের পাশের সাধারণ দোকানগুলোতে প্রতিটি চিতই পিঠা তিন টাকা। আর ভাপা পিঠা আকার অনুসারে ৫ থেকে ১০ টাকায়। অন্যান্য পিঠার দাম ১৫ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত।

This post has already been read 3062 times!