Thursday 25th of April 2024
Home / পরিবেশ ও জলবায়ু / সুন্দরবন সংলগ্ন ৫২টি ইউনিয়নকে পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা

সুন্দরবন সংলগ্ন ৫২টি ইউনিয়নকে পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা

Published at সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৭

ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা):
স্থলজ, জলজ প্রাণি জীববৈচিত্র ও অন্যান্য ইকো সিস্টেম সুন্দরবনকে বছরের পর বছর সমৃদ্ধ করেছে। প্রকৃতির অপূর্ব লীলাভূমি সুন্দরবনের প্রাকৃতিক নিদর্শন ও অর্থনৈতিক দিক দিয়ে সমৃদ্ধ করতে বৃহত্তর খুলনা অঞ্চলের সুন্দরবন সংলগ্ন ৫২টি ইউনিয়নকে পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এসব এলাকায় বায়ূ ও পানি দূষণমুক্ত করতে ক্ষতিকারক শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপনের ক্ষেত্রে পরিবেশের ছাড়পত্র না দিতে সুপারিশ করা হয়েছে। বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের ওপর চাপ কমাতে পরিবেশ অধিদপ্তর ১১ দফা সুপারিশমালা তৈরি করেছে। সম্প্রতি খুলনা পরিবেশ অধিদপ্তর প্রকাশনায় এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

sundarbansmangroves6wildteamপ্রকাশনার প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়েছে, বৃহত্তর খুলনা জেলার ৯টি উপজেলার ৭ লাখ ৬২ হাজার হেক্টর জমি পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে চিহিৃত করা হয়েছে। প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণ, পরিবেশগত মান উন্নয়ন, পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ ও প্রশমন এবং টেকসই পরিবেশ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে সুন্দরবন রিজার্ভ ফরেস্টের বাইরে চারদিকে ১০ কিলোমিটার বিস্তৃর্ণ এলাকা পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে গেজেটে ঘোষণা করা হয়েছে।

প্রকাশনায় দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, পরিবেশগত সংকটাপন্ন ইউনিয়নগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা, পদ্মপুকুর, বুড়িগোয়ালিনী, আটুলিয়া, ভুরুলিয়া, আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়া, প্রতাপনগর, খাজরা, খুলনার কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশি, উত্তর বেদকাশি, মদিনাবাদ, মহারাজপুর, মহেশ্বরীপুর, বাগালি, আমাদি, পাইকগাছা উপজেলার গড়ইখালি, চাঁদখালি, সোলাদানা, দেলুটি, দাকোপ উপজেলার বানিশান্তা, কৈলাশগঞ্জ, লাউডোব, তিলডাঙ্গা, বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার গৌরম্ভা, বাইনতলা, উজলকুড়, মংলা উপজেলার বুড়িরডাঙ্গা, সোনাইতলা, মিঠাখালি, চিলা, চাঁদপাই, সুন্দরবন, মোড়েলগঞ্জ উপজেলার জিউধরা, খাওলিয়া, নিশানবাড়িয়া, শরণখোলা উপজেলার সাউথখালি ও তাফালখালি।

পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক ড. মল্লিক আনোয়ার হোসেন পরিবেশ সংকটপন্ন এলাকা ভিত্তিক এক প্রবন্ধে উল্লেখ করেছেন, উল্লেখিত ইউনিয়নগুলোতে ক্ষতিকর কোন কর্ম বা প্রক্রিয়া চালু করা যাবেনা। পরিবেশ সংরক্ষণের লক্ষ্যে শরণখোলা, মংলা, রামপাল, কয়রা ও শ্যামনগরে উদ্বুদ্ধকরণ সভার আয়োজন করা হয়। এসব এলাকায় বন্যপ্রাণি ধরা, সংগ্রহ, মাটি পানি বায়ু এবং শব্দ দূষণকারি শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

শিল্প প্রতিষ্ঠান পরিচালনা সংক্রান্ত কমিটির সভায় পরিবেশ বিশেষজ্ঞ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের  প্রফেসর ড. সরদার মো. শফিকুল ইসলাম, প্রফেসর ডা. দিলীপ কুমার দত্ত, কুয়েটের প্রভাষক এসএম তারিকুল ইসলাম উল্লেখ করেন উল্লেখিত ইউনিয়নগুলোতে শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপনে উদ্যোক্তাদের নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।

পরিবেশ সংরক্ষণে ১১ দফা সুপারিশমালার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে দক্ষিণের এসব ইউনিয়নগুলোতে মাটি, পানি ও বায়ু দূষণকারি ট্যানারি, ডাইং, ওয়াশিং, ইটভাটা ইত্যাদি শিল্প প্রতিষ্ঠান যাতে স্থাপিত না হয় সেদিকে স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে নজর দিতে হবে। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ব্যতিত উল্লেখিত ৯ উপজেলায় নতুন কোন শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন করতে দেওয়া উচিত হবে না।

উল্লেখ্য, সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের আওতায় ঢ্যানমারি, দুধমুখি ও চাঁদপাই সংলগ্ন নদী বিরল প্রজাতির গাঙ্গেয় ডলফিন ও ইরাবতি ডলফিন সংরক্ষণ ও বংশবৃদ্ধির জন্য ১ হাজার ৭১ হেক্টর জলাভূমিকে অভয়াশ্রম ঘোষণা করা হয়েছে।

This post has already been read 2754 times!