শনিবার , জুলাই ২৭ ২০২৪

সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগে সুন্দরবন সুরক্ষায় শত কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের টেন্ডার প্রক্রিয়ার অনিয়মের ঘটনা অনুসন্ধানে নেমেছে দুদক

ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা): সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগে শত কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের বেশিরভাগ টেন্ডার ছাড়াই কোটেশনে করার অভিযোগ উঠেছে। ম্যানিপুলেশনের মাধ্যমে পছন্দের ঠিকাদারকে দিয়ে কাজ করানোর ঘটনা অনুসন্ধানে নেমেছে দুদক। গৃহীত প্রকল্পের অবকাঠামো নির্মাণসহ অন্যান্য কাজ নিম্নমানের করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড.আবু নাসের মহোসিন হোসেনসহ সাত জনের বিরুদ্ধে।

সুন্দরবন খুলনার অংশে নির্মানাধীন ইকো ট্যুরিজম, বাঘ সংরক্ষণ, শেখ রাসেল ইকোপার্ক থেকে শুরু করে ডলফিন, সুন্দরবন সুরক্ষাসহ নানা প্রকল্পে শতকোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। যার বেশিরভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্পের  কিছু কাজ চলমান। শতকোটি টাকা প্রকল্পের  বেশিরভাগ কাজ করেছেন ফয়জুল ইসলাম পলাশ নামে এক ঠিকাদার। কোথাও কাজের বিবরণ উল্লেখ করে দেয়া হয়নি কোন সাইনবোর্ড। কাজের মান নিয়ে ও আছে নানা প্রশ্ন। স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, লবণ পানি দিয়ে নির্মাণ কাজ করার কারণে কাজের মান টেকসই হবে না।

একদিকে বাঘের সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ, অন্যদিকে বাঘ নিপাতের আয়োজন। সুন্দরবনের বাঘ সংরক্ষণে প্রকল্পের কাজ চললেও শেখের টেক টাইগার জোনে ইকো ট্যুরিজম প্রকল্প বাঘের জন্য হুমকি। পরিবেশবিদরা বলছেন, এ প্রকল্পের জন্য সুন্দরবনের বাঘের জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে, নষ্ট হচ্ছে প্রজনন ক্ষেত্র।

২০০৪ সালের  বাঘ শুমারিতে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ছিলো চারশ ৪০টি। ২০১৮ সালের সর্বশেষ শুমারিতে বাঘের সংখ্যা কমে দাঁড়ায় একশ ১৪ টিতে। ২০০১ থেকে  গত ২৩ বছরে সুন্দরবনে বাঘ মারা গেছে ৪৬ টি। বিশেষজ্ঞদের দাবি বাঘের বাচ্চা প্রসবের জায়গা শেখের টেকসহ কয়েকটি পয়েন্টে ইকো ট্যুরিজম প্রকল্প ও বাঘের অন্যান্য আশ্রয় কেন্দ্রে মানুষের চলাচলের বিরক্তির কারণে ভারতীয় অংশে চলে যেতে পারে বাঘ। এখন বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পে প্রতিটির পেছনে ব্যয় করা হচ্ছে ৩১ লাখ টাকা। বাঘ নিয়ে বন বিভাগের দ্বৈত নীতির কারণে ক্ষুব্ধ সুন্দরবন প্রেমীরা।

স্পর্শকাতর জায়গায় ইকো ট্যুরিজমের কারণে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা কমছে এমন অভিযোগ মানতে রাজি নয় বন বিভাগ। সুন্দরবনের ভেতরে কাজ করা অনেক চ্যালেঞ্জের বলে মনে করেন খুলনার বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো । তিনি বলেন আমরা কাজের মান নিশ্চিত করার জন্য চেষ্টা করছি। বাহির থেকে মিষ্টি পানি নিয়ে কাজ হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।

অস্বচ্ছ টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাস্তবায়নাধীন কাজ নিয়ে ক্ষুব্ধ নাগরিক নেতারা। সুজনের খুলনা সভাপতি অ্যাডভোকেট কুদরত-ই-খুদা বলেন, কাজের প্রতিযোগিতা ও স্বচ্ছতা না থাকার কারণে একচেটিয়া কোন প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়া হলে সে কাজের মান ভালো হয় না। অস্বচ্ছ দরপত্রের প্রক্রিয়ায় অনিয়ম ও দুর্নীতির সুযোগ সৃষ্টি হয় ।

অনিয়ম নিয়ে দুদকের তদন্ত শেষে করণীয় সিদ্ধান্ত নেবেন বলে মন্তব্য করেন প্রধান বন রক্ষক আমির হোসাইন চৌধুরী। তিনি বলেন কাজের মান ভালো হচ্ছে কিনা বিষয়টি আমরাও খতিয়ে দেখব।

প্রকল্পের অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে কথা বলতে চাননি বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড.আবু নাসের মহোসিন হোসেন। তার কাছে সংশ্লিষ্ট তথ্য জানতে চাইলে দেননি সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য।

This post has already been read 663 times!

Check Also

বারিতে “প্রোগ্রামভিত্তিক গবেষণা কার্যক্রম গ্রহণ” বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত

গাজীপুর সংবাদদাতা: বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) এর গবেষণা উইং এর আয়োজনে (১০ জুলাই) ইনস্টিটিউটের …