Saturday 27th of April 2024
Home / মৎস্য / মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে মহাপরিকল্পনা নেয়া হবে -বাপকা’র অভিষেক অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে মহাপরিকল্পনা নেয়া হবে -বাপকা’র অভিষেক অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

Published at মার্চ ২, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত উন্নয়নে মহাপরিকল্পনা নেয়া  হবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আবদুর রহমান। শনিবার (০২ মার্চ) সন্ধ্যায় কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বাংলাদেশ এ্যাকোয়া প্রোডাক্টস কোম্পানিজ এসোসিয়েশন (বাপকা) এর নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদানকালে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমাদের উৎপাদন বাড়ানোর সাথে সাথে গুণগত মানও নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে আমাদের কমিটমেন্ট ঠিক রাখতে হবে। তিনি প্রাণি খাদ্য উৎপাদনে যেন কোনভাবেই ভেজাল মেশানো না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখার জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি আহবান জানান। তিনি বলেন, অনেক সুদখোর নোবেল পেয়ে যায় অথচ শেখ হাসিনার সাধারণ জনগনের জীবন মান উন্নয়নের যে প্রাণান্তকর চেষ্টা তার কোনো স্বীকৃতি দেয়া হয়না।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত উন্নয়নের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি  করে বেকার সমস্যা সমাধান করা সম্ভব উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমাদের যে সম্পদ আছে তা কাজে লাগাতে পারলে আমাদের কোন সমস্যা থাকবে না। তবে এক্ষেত্রে আমাদের কমিটমেন্ট ঠিক রাখতে হবে। আমাদের জাতিগত ভাবেই একটা ক্যাম্পেইন করতে হবে বলে তিনি এসময় মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সর্বদা গ্রামবাংলার মেহনতী মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের দিকে বিশেষ নজর রাখতেন। তাঁর বিভিন্ন সময়ের বক্তব্যে তা স্পষ্ট হয়ে উঠে। তিনি জানান, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ জাতীয় সমবায় ইউনিয়ন ও আন্তর্জাতিক সমবায় সংস্থার যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত জাতীয় সেমিনারে প্রদত্ত বাণীতে ততকালীন প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘আমার দেশের প্রতিটি মানুষ খাদ্য পাবে, আশ্রয় পাবে, শিক্ষা পাবে, উন্নত জীবনের অধিকারী হবে- এই হচ্ছে আমার স্বপ্ন।’

বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের ৭২ হাজার জেলেকে পুনর্বাসন ও মৎস্য শিল্পের উন্নয়নের জন্য ৯১ কোটি ২ লাখ টাকার একটি ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছিল উল্লেখ করে মন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে বাস্তবায়নের জন্য তাঁর সুযোগ্য কন্যার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার অত্যন্ত সফলতার সাথে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন।

তিনি জানান, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ গড়ার  লক্ষ্যে টেকসই উন্নয়নের জন্য ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় (২০২১-২৫) মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, জেলেদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, মৎস্য ও মৎস্য পণ্য রপ্তানির বাজার সম্প্রসারণ, নিরাপদ মৎস্য উৎপাদন, ইকো-সেনসেটিভ অঞ্চলে মৎস্য অভয়াশ্রম, ইলিশ সম্পদের উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা, সুনীল অর্থনীতির সম্ভাবনা বিকাশে সামুদ্রিক মাছের মজুত নিরুপণ ইত্যাদি কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এর ফলে আমাদের চাহিদা পূরণ করে মাছ বিদেশে রপ্তানী করার বিশাল সুযোগ তৈরি হয়েছে।

তিনি জানান, জেলেদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন, গ্রামীণ আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি ও মৎস্য সম্পদের টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিক নির্দেশনায় প্রকৃত জেলেদের শনাক্তকরণ ও সামাজিকভাবে পেশার স্বীকৃতিস্বরূপ জেলে নিবন্ধন করা হয়েছে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, যদিও উৎপাদনের সকল ক্ষেত্রে আমরা সফলতার সাথে এগিয়ে যাচ্ছি, তথাপি কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমাদের আরও মনযোগী হওয়ার অবকাশ রয়েছে। সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানী বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সকল বাধা দূর করার জন্য তিনি আহবান জানান।

তিনি ইন্টারন্যাশনাল ট্রাইব্যুনাল ফর দ্য লজ অফ সী এর রায় ঘোষণার মধ্য দিয়ে মিয়ানমার ও ভারতের সাথে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তির পর সুনীল অর্থনীতির যে ব্যাপক দ্বার উন্মোচিত হয়েছে তার যথাযথ সুফল পেতে  সরকারী সংস্থাগুলোর পাশাপাশি বেসরকারী পর্যায়ের বিভিন্ন সংস্থা, সংগঠন, সমিতি, উদ্যোক্তা, এনজিওসহ সবাইকে নিজ নিজ জায়গা থেকে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনের আহবান জানান।

অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য  আশেক উল্লাহ রফিক এমপি, কক্সবাজার-২, বিশেষ অতিথি ডা. মো. নজরুল ইসলাম এমপি, ময়মনসিংহ-৫, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক  সৈয়দ মো. আলমগীর, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক  মোহাম্মদ রেয়াজুল হক বক্তব্য প্রদান করেন।

This post has already been read 903 times!