শনিবার , জুলাই ২৭ ২০২৪

বারি উদ্ভাবিত আনারসের লাড্ডু মেটাবে পুষ্টি চাহিদা

কৃষিবিদ ইফরান আল রাফি : বাংলাদেশের প্রধান ফলগুলোর মধ্যে পুষ্টিগুন সম্পন্ন আনারস অন্যতম। উৎপাদন মৌসুমে অধিক পরিমানে উৎপাদিত হওয়ায় এর মূল্য কমে যায়। তাছাড়া পচনশীল, অনুন্নত প্যাকেজিং ব্যবস্থাপনা, রাফ হ্যান্ডলিং এবং ঝাঁকুনির কারণে এর প্রায় ৪৩% সংগ্রহোত্তর ক্ষতির সন্মুখীন হয়। উৎপাদন মৌসুমে এর আধিক্য থাকায় এবং উৎপাদন মৌসুম ছাড়া বছরের অন্যান্য সময় তুলনামূলকভাবে কম পাওয়া যায় বিধায় এটি সঠিক প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে সংরক্ষণ করা গেলে অমৌসুমে এর মাধ্যমে পুষ্টির চাহিদা পূরণ করা সম্ভব।দেশে আনারস প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প-কারখানা না থাকায় এবং এর উৎপাদন এলাকাগুলো অধিক দূরবর্তী হওয়ার ফলে পরিবহনজনিত সমস্যা ও ব্যবসায়িক সিন্ডিকেটের কারণে চাষীরা এর প্রকৃত মূল্য প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষনা ইনস্টিটিউটের পোস্টহারভেস্ট টেকনোলজি বিভাগ এবং অন্যান্য কৃষি বিষয়ক প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে যে সকল ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা তৈরী হয়েছে তাদের কেউ কেউ আনারস দিয়ে জ্যাম-জেলী তৈরী করলেও এর (আনারস) অবশিষ্টাংশ ব্যবহার করে কোনো বাই-প্রোডাক্ট তৈরী ও বাজারজাতকরণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে অবহিত নন। আনারসের জেলী তৈরীতে সাধারনত ফলের রস ব্যবহার করা হয়। রস নেয়ার পর আনারসের অব্যবহ্নত পাল্প বা অবশিষ্টাংশ ফেলে দেয়া হয়। ফেলে দেয়া এ পাল্পকে পোমেজ বা অবশিষ্টাংশ বলা হয়। এটি (পোমেজ) একদিকে যেমন পরিবেশের ক্ষতি সাধন করে তেমনি এর জায়গারও সংকুলান হওয়া দুরুহ ব্যাপার। দেশে আনারস প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প-কারখানা না থাকায় এবং এর উৎপাদন এলাকাগুলো অধিক দূরবর্তী হওয়ার ফলে পরিবহনজনিত সমস্যা ও ব্যবসায়িক সিন্ডিকেটের কারণে চাষীরা এর প্রকৃত মূল্য প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

ফলে বাংলাদেশ সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের বিশেষ গবেষণা অনুদান প্রকল্পের আর্থিক সহায়তায় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পোস্টহারভেস্ট টেকনোলজি বিভাগের উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ মাইনুদ্দিন মোল্লার নেতৃত্বে একদল গবেষক আনারসের পাল্প থেকে পমেজ (লাড্ডু) তৈরি করেছেন।

এ লাড্ডুর পুষ্টি গুনাগুনির সম্পর্কে জানতে চাইলে গবেষক দলের প্রধান ড. মোহাম্মদ মাইনুদ্দিন মোল্লা জানান,আনারসের এ লাড্ডুতে রয়েছে উচ্চ গুনাগুন সম্পন্ন ডায়াটারি ফাইবার যা ক্ষুধা হ্রাসের মাধ্যমে শরীরের ওজন কমাতে সাহায্যে করে এবং এ লাড্ডুতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি।বাজারে প্রচলিত লাড্ডুগুলো কোনো ফল থেকে তৈরি হয়না বরং যেগুলো তৈরী করতে ব্যবহার করা হয় ডালডা সহ বিভিন্ন পারমিটেড রং, কেমিক্যাল ও প্রিজারভেটিভস। আনারসের এ  লাড্ডুতে ডালডা এবং কোনো প্রকার ফুড এডিটিভস ব্যবহার করতে হয়না বলে স্বাস্থ্যগতভাবে এটি শতভাগ নিরাপদ বলে জানান এ গবেষক।এছাড়াও এ লাড্ডু প্রক্রিয়াজাতকরন এবং বাজারজাতকরনের মাধ্যমে গ্রামীন কুটির শিল্প স্থাপন এবং নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারবে।

This post has already been read 3642 times!

Check Also

নতুন নতুন জাত ও খাদ্য করচ কমানোর প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে হবে – ড. নাহিদ রশীদ

সাভার সংবাদদাতা: গৎবাধাঁ কাজ না করে সাহস, সততা ও আত্মনিবেদন নিয়ে কাজ করতে হবে। আবেগতাড়িত …