Saturday 27th of April 2024
Home / সংগঠন ও কর্পোরেট সংবাদ / এনিমেল হাজবেন্ড্রী কাউন্সিল গঠনে শেরপুর ভেটস ক্লাবের মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন

এনিমেল হাজবেন্ড্রী কাউন্সিল গঠনে শেরপুর ভেটস ক্লাবের মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন

Published at ডিসেম্বর ২৭, ২০২৩

এগ্রিনিউজ২৪.কম ডেস্ক: বাংলাদেশ এনিমেল হাজবেন্ড্রী কাউন্সিল গঠনের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে শেরপুর ভেটস ক্লাব। গতকাল (২৬ ডিসেম্বর) উক্ত প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়।

শেরপুর ভেটস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও  জেলা ট্রেইনিং অফিসার ডা. রেজওয়ানুল হক ভূইয়া শাহজাদা, শেরপুর সদর উপজেলা ইউএলও ডা. রোকুনুজ্জামান পলাশ, শেরপুর ভেটস ক্লাবের সমাজ কল্যাণ সম্পাদক ডা. নজরুল ইসলাম,  দপ্তর সম্পাদক ডা: তানভীর আহমেদ তালুকদার,  নারিশ পোল্ট্রি এন্ড ফিড লি: এর কাস্টমার সার্ভিস অফিসার ডা: রাকিবুল মজুমদার, শেরপুর সদরের এলইও ডা. জুলফিকার রাজিব সহ শেরপুর ভেটস ক্লাবের অনান্য সদস্য এবং প্রাইভেট সেক্টরের ভেটেরিনারিয়ান ও শেরপুরে অবস্থানরত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে সূচনা  বক্তব্য রাখতে গিয়ে শেরপুর ভেটস ক্লাবের ডা: নজরুল ইসলাম বলেন, আপনারা সকলেই অবগত আছেন আজ আমরা এমন একটি বিষয় নিয়ে এখানে সমবেত হয়েছি যার সূত্রপাত লাইভস্টক সেক্টরের প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই। সূচনালগ্ন থেকেই আমাদের ভেটেরিনারিয়ানদের সাথে এনিমেল হাসবেন্ড্রি অনুষদের দ্বন্দ্ব লেগেই আছে। গোটা বিশ্বেই যে নজীর নেই, সেই ধরনের একটি কালো আইন প্রতিষ্ঠার যে হীন চেষ্টা চলছে তার বিপক্ষে আমাদের আজকের এ অবস্থান। বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল আইন -২০১৯ বলবত থাকার পরও লাইভস্টক সেক্টরের গুরুত্বপূর্ণ সকল প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনকে পাশ কাটিয়ে একজন এএইচ গ্রাজুয়েট সচিবের ক্ষমতার চুড়ান্ত অপব্যবহার করে অত্যন্ত গোপনীয়ভাবে বাংলাদেশ এনিমেল হাজবন্ড্রি কাউন্সিল নামে বিতর্কিত আইন করে নেওয়ার অপচেষ্টার নিন্দা এবং তীব্র প্রতিবাদ জানাই। এর পাশাপাশি আমরা এ ঘৃণ্য অপতৎপরতার জন্য সচিবের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করি।

শেরপুর সদর উপজেলা ইউএলও ডা. রুকুনুজ্জামান পলাশ বক্তব্যে  বলেন – বাংলাদেশে তিনটি পেশা আইন দ্বারা সিদ্ধ। তন্মধ্যে একটি হলো আইন পেশা যা বার কাউন্সিল আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, একটি হলো মেডিক্যাল পেশা যা নিয়ন্ত্রিত হয় মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল দ্বারা এবং আমাদের ভেটেরিনারি পেশা নিয়ন্ত্রিত হয় বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল আইন দ্বারা। আর অন্য কোন পেশা আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয়। পশুপালন হলো আমজনতার পেশা, আমাদের বাপ দাদারা যেমন পশুপালন করেছেন, আমরাও করছি, আমাদের সন্তানরাও করবে।  কৃষক শ্রমিক সবাই কিন্তু পশুপালন করেন। এর জন্য কোন কাউন্সিল গঠনের কোন প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করি না। প্রাণিসম্পদ সেক্টরকে ধ্বংস করার জন্য এ অপচেষ্টা করে যাচ্ছে। আমরা ভেটেরিনারিয়ানরা প্রানির চিকিৎসার প্রোডাকশন, নিউট্রিশন, ব্রিডিং মেনেজমেন্ট সহ সবকিছুই আমরা সুনিপুণভাবে করে আসছি।আমাদের সিনিয়র ভেটেরিনারিয়ানরা বলতেন পশুপালন বড়জোর একটা ডিপার্টমেন্ট হওয়ার কথা সেখানে তারা ফ্যাকাল্ট্রি খুলে বসেছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যেখানে ভেটেরিনারিয়ানরা পর্যাপ্ত সেখানে এএইচ গ্রাজুয়েটদের দরকারই নাই। গুটিকয়েক লোকের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে এ ধরনের কাউন্সিল গঠনের আমরা নিন্দা ও তীব্র প্রতিবাদ জানাই।

সমাপনী বক্তব্যে জেলা ট্রেইনিং অফিসার ও শেরপুর ভেটস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা: রেজওয়ানুল হক ভূঁইয়া বলেন- সারা বাংলার ভেটেরিনারিয়ানদের আজ মনে কষ্ট, সারা বাংলাদেশে আজ আমাদের ভেটেরিনারিয়ানরা প্রতিবাদে মেতে উঠেছে। তিনি প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত সবাই কে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন -আমাদের বাকৃবির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই আমরা আন্দোলন করে আসছি, নবম থেকে উনিশতম বিসিএস পর্যন্ত আমাদের সরকারি চাকুরিতে প্রবেশের সুযোগ বন্ধ রাখা হয়েছিল শুধু মাত্র এএইচদের সাথে ভেটেরিনারিয়ানদের দ্বন্দ্বের কারনে। তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাবে আমাদের ভেট সমাজকে অবমূল্যায়নের চেষ্টা করেছে এবং নানাভাবে আমাদের বিরুদ্ধে দাড়িয়েছে। আসলে তাদের অস্তিত্ব সে অর্থে আগেও ছিলনা, এখনও নেই, ভবিষ্যতেও থাকবে না ইনশাল্লাহ। কারণ, আমাদের হাসপাতালে বা অন্যত্র যখনই কোন খামারী আসেন তখন শুধু মাত্র আমরা প্রানিটার চিকিৎসাই দিই না, একই সাথে আমরা তার পুষ্টি, বাসস্থান, ব্যবস্হাপনা সহ সার্বিক বিষয়েই দিক নির্দেশনা দিয়ে থাকি।তাই দিন দিন ভেটেরিনারিয়ানদের সম্মান এবং কর্মক্ষেত্র বাড়ছে এবং তাদেরটা সংকুচিত হচ্ছে। অচিরেই এই এনিমেল হাসবেন্ড্রি পেশা এককভাবে নানান চেলেন্জের মুখে পড়বে। পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিষয়টি স্বাভাবিক মনে হওয়ায় তারা ভেতরে ভেতরে ভেটেরিনারি অনুষদের সাথে মিলে সমন্বিত ডিগ্রি ধারী হতে আগ্রহী। শুধু মাত্র কতিপয় শিক্ষক এবং আমলার অপচেষ্টার কাছে তারা একরকম জিম্মি হয়ে আছে। সম্প্রতি এএইচ গ্রাজুয়েট ধারী একজন সচিব সকল রীতিনীতির  তোয়াক্কা না করে একটি সাংঘর্ষিক আইন করার জন্য যে অপচেষ্টা চালাচ্ছে আমরা তার নিন্দা ও তীব্র প্রতিবাদ জানাই। সারা বাংলাদেশের ভেটেরিনারিয়ানদের এক হয়ে এ ধরনের প্রতিবাদ অব্যাহত রাখতে হবে।

আমাদের এ যৌক্তিক ও নৈতিক আন্দোলন সফল না হওয়া পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

This post has already been read 2467 times!