সোমবার , অক্টোবর ১৪ ২০২৪

কৃষির সবচেয়ে বড় প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন

নিজস্ব প্রতিবেদক: বর্তমান কৃষিকে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের জন্য টেকসই ও নিরাপদ বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তরের মাধ্যমে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে কৃষিখাতে নেওয়া সবচেয়ে বড় প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়েছে। প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচার অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন এন্টারপ্রেনরশিপ অ্যান্ড রেসিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ  (পার্টনার) নামের এ প্রকল্পের ব্যয় প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা। এটি কৃষির উন্নয়নে এ যাবৎ পর্যন্ত নেওয়া সবচেয়ে বড় প্রকল্প।

বুধবার (১১ অক্টোবর) রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে প্রকল্পটির উদ্বোধন করেন কৃষিসচিব ওয়াহিদা আক্তার।  তিনি এসময় বিশ্বব্যাংক ও ইফাদকে ধন্যবাদ জানান; এবং অত্যন্ত স্বচ্ছতা ও দক্ষতার সাথে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্প পরিচালক ও সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানান।

পার্টনার প্রকল্পটি পাঁচ বছরে বাস্তবায়ন করা হবে। ৬৪ জেলার ৪৯৫ উপজেলায় পার্টনার বাস্তবায়িত হবে জুলাই ২০২৩ থেকে ২০২৮ সালের জুন সময়সীমায়। মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ হাজার ৯১০ কোটি টাকা।এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন এক হাজার ১৫১ কোটি টাকা ও প্রকল্প সাহায্য হিসেবে আসবে পাঁচ হাজার ৭৫৯ কোটি টাকা। প্রকল্প সাহায্য হিসেবে বিশ্বব্যাংক দিচ্ছে পাঁচ হাজার ৩০০ কোটি টাকা ও ইফাদ দিচ্ছে  ৫০০ কোটি টাকা।

প্রোগামটি কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে মন্ত্রণালয়ের অধীন ৭টি সংস্থা তাদের নির্ধারিত কার্যক্ষেত্রে প্রোগ্রামটি বাস্তবায়ন করছে যেখানে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর লিড এজেন্সির দায়িত্ব পালন করছে। পাশাপাশি কৃষি মন্ত্রণালয়ের আরো ৮টি সংস্থা এই প্রোগ্রামে স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার হিসেবে কাজ করছে।

এই মেগা প্রকল্পের উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে উত্তম কৃষিচর্চা সার্টিফিকেশনের মাধ্যমে তিন লাখ হেক্টর ফল ও সবজি আবাদি জমি বৃদ্ধি; জলবায়ু অভিঘাত সহনশীল উচ্চ ফলনশীল নতুন ধানের ও ধান ছাড়া অন্যান্য দানাদার ফসলের জাত উদ্ভাবনসহ মোট চার লাখ আবাদি জমির পরিমাণ বৃদ্ধি; উন্নত ও দক্ষ সেচ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এক লাখ হেক্টর নতুন আবাদি জমি সেচের আওতায় আনয়ন; স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে দেশব্যাপী দুই কোটি ২৭ লাখ ৫৩ হাজার ৩২১টি কৃষক পরিবারকে ‘কৃষক স্মার্টকার্ড’ প্রদানের মাধ্যমে ডিজিটাল কৃষি সেবার সম্প্রসারণ।

এছাড়া, ই-ভাউচারে প্রদান করা হবে ভর্তুকি, কৃষকদের জন্য তৈরি হবে কৃষক ডিজিটাল ফিনান্সিয়াল সিস্টেম। মোবাইল প্ল্যান্ট ক্লিনিকের মাধ্যমে কৃষি সম্প্রসারণ সেবাকে কৃষকের দোরগড়ায় পৌঁছে দেওয়া হবে। ড্রিপ, স্প্রিংকলার, এডব্লিউডি ও ভূ-গর্ভস্থ সেচ নালাসহ সৌরশক্তি ব্যবহার করে সেচের পানি ব্যবস্থাপনায় যুগান্তকারী পরিবর্তনের মাধ্যমে পানির অপচয় হ্রাস করা করা হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলা হয়, প্রকল্পটি দেশের কৃষির খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ দেশের কৃষি সেক্টরের বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তরে জাতীয় কৃষি নীতি-২০১৮ এর কর্মপরিকল্পনা (২০২০) ও উত্তম কৃষি চর্চা নীতিমালা ২০১০ বাস্তবায়নসহ এসডিজি, প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ও ডেলটা প্ল্যান-২১০০ বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এ প্রকল্পের কার্যক্রমের মাধ্যমে এদেশের কৃষক, কৃষিসেবা, কৃষি সমাজ এবং কৃষি ব্যবসা সর্বোপরি বাংলাদেশের গ্রামীণ জনপদ রূপান্তরিত হবে স্মার্ট বাংলাদেশে।

This post has already been read 9158 times!

Check Also

পাটের পণ্য বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে হবে- বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক: জেডিপিসি’র উদ্যোক্তার মাধ্যমে পাটের সকল পণ্য বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে হবে বলে মন্তব্য …