শনিবার , জুলাই ২৭ ২০২৪

পৃথিবীর অনেক দেশ বাংলাদেশ থেকে মাংস আমদানি করতে চাইছে -মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: পৃথিবীর অনেক দেশ বাংলাদেশ থেকে মাংস আমদানি করতে চাইছে। দেশে উৎপাদিত নানাধরণের খাদ্য সামগ্রী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে যাচ্ছে -বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে উন্নয়নের পথে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে  বলে দাবী করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৫ মে) দুপুরে রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় ৬ষ্ঠ ফুড অ্যান্ড এগ্রো বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো ২০২৩, ৬ষ্ঠ ইন্টারন্যাশনাল হেলথ ট্যুরিজম অ্যান্ড সার্ভিসেস এক্সপো বাংলাদেশ ২০২৩ এবং ১৪তম মেডিটেক্স বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো ২০২৩-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। সেমস গ্লোবাল এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে।

এ সময় মন্ত্রী যোগ করেন, বিশ্বের অনেক দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা শঙ্কা করেছিল করোনায় বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে। কিন্তু রাষ্ট্রীয় নীতি এবং সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে মহামারী সত্ত্বেও দেশে খাদ্য ঘাটতি দেখা দেয়নি। বরং কোন কোন ক্ষেত্রে খাদ্য উদ্বৃত্ত রয়েছে। প্রাকৃতিক সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার আমরা করছি। ফলে খাদ্য জাতীয় পণ্য তথা ধান, গম, ভুট্টা, মাছ, মাংস, দুধ, ডিম এমন উৎপাদন হয়েছে এবং এর গুণগতমান এত ভালো যে বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশ থেকে এখন অনেক কিছু আমদানি করছে। বাংলাদেশে উৎপাদিত মাছ এখন বিশ্বের ৫২ টি দেশে রপ্তানি হয়।

মন্ত্রী বলেন, যে দেশকে একসময় ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করে তলাবিহীন ঝুড়ি বলা হতো, সে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে এখন বলা হয় উন্নয়নের ম্যাজিশিয়ান। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাত এগিয়ে আসার কারণে দেশের এই উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। নীতি নির্ধারণসহ বেসরকারি খাতকে রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে বলেই এ উন্নয়ন হয়েছে। এভাবে সরকারি-বেসরকারি খাত একযোগে কাজ করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, বিশ্ব এখন গ্লোবাল ভিলেজে পরিণত হয়েছে। তাই কাউকে পিছনে রেখে উন্নয়ন সম্ভব নয়। এজন্য বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের জনসাধারণের উন্নয়নের জন্যই শুধু নয় বরং সমগ্র মানবজাতির কল্যাণে কাজ করছেন। তাঁর দায়বদ্ধতা, আন্তরিকতা এবং নীতি নির্ধারণ বিশ্বনেতাদের প্রশংসা অর্জন করেছেন। সম্প্রতি বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ও আইএমএফ প্রধানও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অসাধারণ নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন। তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়েছে। রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য যে ভিশন ও মিশন থাকতে হয় সেটা আমাদের প্রধানমন্ত্রী করে দেখিয়েছেন। তাই বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানাচ্ছি। কারণ শেখ হাসিনার শাসনামল বাংলাদেশে বিনিয়োগের উপযুক্ত সময়। বর্তমানে এখন বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে।

তিনি আরও যোগ করেন, বাংলাদেশের উৎপাদিত ঔষধ পৃথিবীর বহু দেশে রপ্তানি হচ্ছে। ঔষুধ শিল্পে যান্ত্রিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে। দেশের স্বাস্থ্য সেবা এবং অন্যান্য গবেষণায় যে উন্নয়ন হয়েছে তা বিশ্বের বিস্ময়।

শ ম রেজাউল করিম আরও বলেন, বর্তমানে দেশে শিশু মৃত্যু-মাতৃ মৃত্যুর হার কমেছে, গড় আয়ু বেড়েছে। এর অন্যতম কারণ সরকার দেশে পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবারের যোগান দিতে পারছে, উপযুক্ত চিকিৎসা সেবা দিতে পারছে, মানুষের প্রশান্তির জন্য অন্যান্য যেসব সহযোগিতা দরকার তা দিতে পারছে। প্রান্তিক পর্যায়ে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এক সময় বিপন্ন ছিল। এখন প্রান্তিক পর্যায়ে স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।

দেশের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে এ সময় মন্ত্রী বলেন, নিজের টাকায় পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল, মেট্রোরেল, ঢাকা-কক্সবাজার অত্যাধুনিক রেল সংযোগ, রাস্তার ব্যবস্থা, কী না হচ্ছে বাংলাদেশে। দেশে কোন মানুষ খাদ্যের অভাবে থাকে না, চিকিৎসার অভাবে কোন মানুষ মারা যায় না। দেশের প্রতিটি বিভাগে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে। প্রতিটি জেলায় কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করা হচ্ছে। মানুষকে দক্ষ মানবসম্পদে রূপান্তরের লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে। এর সবই সম্ভব হয়েছে দেশের মানুষের সদিচ্ছা, রাষ্ট্রীয় উপযুক্ত পলিসি এবং সরকার প্রধানের নিরলস প্রচেষ্টায়। রাষ্ট্র নাগরিকের কল্যাণে, মানুষের কল্যাণে সর্বোচ্চ সহযোগিতা দিতে চায়।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ খুরশিদ ইকবাল রেজভী স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নিলুফার নাজনিন, আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশ-এর প্রেসিডেন্ট সৈয়দ এরশাদ আহমেদ এবং চেন্নাই ফার্টিলিটি সেন্টার এন্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান ড. ভি এম থমাস। অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্য প্রধান করেন সেমস গ্লোবাল ইউএসএ অ্যান্ড এশিয়া প্যাসিফিক-এর গ্রুপ প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর মেহেরুন এন. ইসলাম

উল্লেখ্য, সেমস গ্লোবাল এর আয়োজনে রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় ২৫ থেকে ২৭ মে ২০২৩ পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী ৬ষ্ঠ ফুড অ্যান্ড এগ্রো ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো, ৬ষ্ঠ ইন্টারন্যাশনাল হেলথ ট্যুরিজম অ্যান্ড সার্ভিসেস এক্সপো এবং ১৪তম মেডিটেক্স বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো ২০২৩ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

This post has already been read 1550 times!

Check Also

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২২৭ প্রজাতির আম মেলার উদ্বোধন

মো. আমিনুল ইসলাম (রাজশাহী) : গত ১১ জুন (মঙ্গলবার) জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে রফতানিযোগ্য আম …