Thursday 2nd of May 2024
Home / অর্থ-শিল্প-বাণিজ্য / আমভিত্তিক রফতানি বানিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহন

আমভিত্তিক রফতানি বানিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহন

Published at জানুয়ারি ২২, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : লাগসই ও যুগোপযোগী আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মানসম্মত আম উৎপাদন ও রফতানি বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

রোববার (২২ জানুয়ারি) রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) অডিটরিয়ামে রফতানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পের অবহিতকরণ কর্মশালায় বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিতি ছিলেন কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মাহবুবুল হক পাটওয়ারী, ও বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস।

কর্মশালায় জানানো হয়, পরিবহন, সংরক্ষণ, বাজারজাতকরণ এবং উৎপাদন পর্যায়ে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার না করায় ২৫-৩০ শতাংশ নষ্ট হয়। রফতানিযোগ্য আম উৎপাদনের মাধ্যমে আরও ৫ শতাংশ যেমন উৎপাদন বাড়বে তেমনি কর্মসংস্থান সুযোগ সৃষ্টি হবে, রফতানি আয় বাড়বে।

বক্তারা বলেন, প্রকল্প এলাকায় উৎপাদিত উন্নত মানসম্মত নিরাপদ আম উৎপাদন ও রফতানি বৃদ্ধি এবং প্রক্রিয়াজাতকরণে সহায়তা প্রদানের ফলে পণ্য বাজারজাতকরণে ভ্যালুচেইন ব্যবস্থা উন্নয়ন ঘটবে, কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হবে। তারা বলেন, রফতানি বৈচিত্র আনায়নে ও বৈদেশিক মুদ্রা আয় বৃদ্ধি করতে আম বাংলাদেশের জন্য প্রকৃতির এক মহান আশির্বাদ। যুক্তরাজ্যেসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের আমের যথেষ্ট সুনাম ও চাহিদা রয়েছে।

কর্মশালায় বক্তারা আরও বলেন, মানসম্মত উৎপাদন বৃদ্ধি ও সঠিক বাজারে প্রবেশের সহায়তাকরণের লক্ষ্যে প্রকল্প হতে আম উৎপাদনকারী ও রফতানিকারকদের মার্কেট লিংকেজ তৈরিতে সহায়তা প্রদান করা হলে আম রফতানি বৃদ্ধি পাবে। উৎপাদিত আম প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বাজারজাতকরণে কৃষি উদ্যোক্তা সৃষ্টি হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ার উপযোগী উত্তম কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে প্রকল্প এলাকায় আমের উৎপাদন বর্তমান অবস্থা থেকে শতকরা ৫-১০ ভাগ বৃদ্ধি পাবে। আম সংগ্রহ, গ্রেডিং, তুলিং, ওয়াশিং বিষয়ে হাতে কলমে শিক্ষা লাভের মাধ্যমে মানসম্মত নিরাপদ আম বাজারে প্রাপ্যতা বৃদ্ধি পাবে। প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে আমের উৎপাদন, সংরক্ষণ প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বাজারজাতকরণে অধিক শ্রমের বিনিয়োগ হবে, কর্মসংস্থান সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং কৃষকের আয় বৃদ্ধি পাবে।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য ও প্রকল্পের কার্যক্রম উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ আরিফুর রহমান। তিনি জানান, রফতানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পটি দেশের আম উৎপাদনকারী ১৫টি জেলার ৪৬টি উপজেলায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। রফতানিযোগ্য মানসম্মত আম উৎপাদনের লক্ষ্যে আম চাষীদের মাধ্যমে প্রকল্প মেয়াদে উত্তম কৃষি চর্চার মাধ্যমে আম উৎপাদন প্রদর্শনী ২৩০০টি, রফতানিযোগ্য জাতের আম বাগান সৃজন ২৩০০ টি, বিদ্যমান আম বাগানে সার ও বালাই ব্যবস্থাপনা ১৮৪০ টি ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার (প্রুনিং ব্যাগিং ও বালাই ব্যবস্থাপনা) মানসম্মত আম উৎপাদন প্রদর্শনী ১৮৪০ টি মাঠ পর্যায়ে স্থাপন করা হবে। আম রফতানি ত্বরান্বিতকরণের লক্ষ্যে প্রকল্পের মাধ্যমে আনের পেস্ট রিস্ক এ্যানালাইসিস (পিআরএ) ও উত্তম কৃষি চর্চা তৈরি, জিআইএস প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রদর্শনী এবং কৃষি প্রযুক্তির তথ্য আদান-প্রদান ও সংরক্ষণ এবং আমের পাচটি জাতের প্রোডাক্ট প্রোফাইল তৈরী করা হবে। প্রকল্প সহায়তা হিসেবে আম উৎপাদনকারীদের প্রশিক্ষণ ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে অভ্যস্ত করার লক্ষ্যে ক্ষুদ্র কৃষি যন্ত্রপাতি (ম্যাংগো প্লাকার, হাইড্রোলিক ম্যাংগো হারভেস্টার, গার্ডেন টিলার হ্যান্ড স্প্রেয়ার, ফুট পাম্প, এলএলপি ও ফিতা পাইল সেট সরবরাহ করা হবে।

কর্মশালায় ‘কোয়ালিটি এসুরেন্স অফ ম্যাংগো ফর বুষ্টিং এক্সপোর্ট’ বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের পিএসও ড. মো. আতিকুর রহমান। উৎপাদনকারীদের পক্ষে ইসমাইল খান শামিম, বাংলাদেশ ফ্রুটস ভেজিটেবলস এন্ড এলাইড প্রোডাক্টস এসোসিয়েশনের এডভাইজার মো. মঞ্জুরুল ইসলাম বক্তব্য দেন। কর্মশালায় আম উৎপাদনকারী উপকারভোগী, ডিএই বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, কৃষি মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা কমিশন, আইএমইডি ও অন্যান্য সংস্থার কর্মকর্তাসহ প্রায় ১৫০ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।

This post has already been read 1006 times!