Saturday 20th of April 2024
Home / পোলট্রি / পোলট্রি শিল্পে এলসি জটিলতা ও কাঁচামালের অভাবে শীঘ্রই বড় ধরনের সংকটের আশংকা!

পোলট্রি শিল্পে এলসি জটিলতা ও কাঁচামালের অভাবে শীঘ্রই বড় ধরনের সংকটের আশংকা!

Published at জানুয়ারি ১১, ২০২৩

এগ্রিনিউজ২৪.কম: পোল্ট্রি, মৎস্য ও গবাদি পশুর খাদ্য তৈরির অত্যাবশ্যকীয় কাঁচামালের ক্রমাগত দর বৃদ্ধি, এলসি খুলতে জটিলতা, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস কর্তৃক আমদানিকৃত কাঁচামাল ভিন্ন এইচএস কোডে মূল্যায়ন, ল্যাব টেস্টিং এর বিড়ম্বনা ইত্যাদি বিষয়গুলো প্রাণিসম্পদ মহাপরিচালক কে অবহিত করা হয়। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে ডলার সংকটের কারণে এলসি খুলতে বেগ পেতে হচ্ছে। চাহিদা মত কাঁচামাল সংগ্রহ করতে না পারলে আগামী ক’মাসের মধ্যেই বড় ধরনের সংকট তৈরি হবে।

গত ৮ জানুয়ারি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের নতুন মহাপরিচালক নবনিযুক্ত মহাপরিচালক ডা. মো. এমদাদুল হক তালুকদার এর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে পোল্ট্রি শিল্পের কতিপয় সমস্যা নিয়ে আলোচনাকালে এসব কথা বলেন দেশের পোল্ট্রি শিল্পের শীর্ষ সংগঠন বিপিআইসিসি, ব্রিডার্স এসোসিয়েশন, ফিড ইন্ডাষ্ট্রিজ এসোসিয়েশন এবং ওয়াপসা-বিবি’র নেতৃবৃন্দ।

পোলট্রি নেতৃবৃন্দ এ সময় বলেন, আমদানিকৃত বেশ কিছু পণ্য ভিন্ন এইচএস কোডে উচ্চহারে শুল্কায়ন করছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। মিস ডিক্লারেশনের অভিযোগে ২০০% জরিমানা করা হচ্ছে। মাল খালাসে জটিলতার কারণে মোটা অংকের বিলম্ব মাশুলও গুনতে হচ্ছে। ফলে আমদানিকৃত পণ্যের দাম বহুগুণে বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের এক্রিডেটেড কোয়ালিটি কন্ট্রোল ল্যাব এবং সম্ভাব্য সকল সুযোগ সুবিধা থাকা সত্ত্বেও টেস্টের জন্য স্যাম্পল খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য ল্যাবে পাঠানো হচ্ছে। এমন ল্যাবেও পাঠানো হচ্ছে যার- ঐ টেস্ট করার সক্ষমতা নেই কিংবা সক্ষমতার স্বল্পতা/সীমাবদ্ধতা রয়েছে। পোল্ট্রি নেতৃবৃন্দ বলেন, স্থানীয়ভাবে ভূট্টা, চালের কুঁড়া ইত্যাদি ক্রয়ের ক্ষেত্রে উৎসে কর কর্তন সম্ভব হচ্ছেনা কারণ, এ ধরনের পণ্য সরবরাহকারিরা মূলত:ই কৃষক ও ক্ষুদ্র সরবরাহকারি যাদের কোন টিআইএন নাই।

মন্ত্রণালয়ের সাথে আলোচনাসাপেক্ষে সমস্যাগুলো সমাধানে সহযোগিতার আশ্বাস দেন মহাপরিচালক ডা. মো. এমদাদুল হক তালুকদার। তিনি বলেন, গত ৫ জানুয়ারি বিএবি প্রতিনিধিদলের সাথে এক আনুষ্ঠানিক বৈঠকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাথে একটি সভা আয়োজনের আশ্বাস দিয়েছেন। তাছাড়া বিদ্যমান সমস্যাগুলো কিভাবে দ্রুততার সাথে সমাধান করা যায় সেজন্যও কাজ করছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।

মহাপরিচালক বলেন, পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে সুলভ মূল্যে ডিম, দুধ, মাছ ও মাংসের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে হবে। বেসরকারি উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা ছাড়া এ লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয়। পোল্ট্রি খাতের বেসরকারি উদ্যোক্তাদের সরকারের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি আরো বলেন, পারস্পরিক সহযোগিতা ও সৌহাদ্যপূর্ণ সম্পর্ক চলমান সংকট কাটিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে সহায়ক হবে।

সৌজন্য সাক্ষাতের শুরুতেই প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের নতুন মহাপরিচালক কে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ। প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) এবং ওয়ার্ল্ড’স পোল্ট্রি সায়েন্স এসোসিয়েশন- বাংলাদেশ শাখা’র (ওয়াপসা- বিবি) সভাপতি মসিউর রহমান। প্রথমে শুভেচ্ছা জানান বিপিআইসিসি’ র সভাপতি মসিউর রহমান। এরপর পর্যায়ক্রমে শুভেচ্ছা জানান ওয়ার্ল্ড’স পোল্ট্রি সায়েন্স এসোসিয়েশন-বাংলাদেশ শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. মাহাবুব হাসান; ব্রিডার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (বিএবি) এর সভাপতি কাজী জাহিন হাসান ও সাধারণ সম্পাদক মো. মাহাবুবুর রহমান; এবং ফিড ইন্ডাষ্ট্রিজ এসোসিয়েশন বাংলাদেশ (এফআইএবি) এর সভাপতি শামসুল আরেফিন খালেদ ও সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম।

প্রতিনিধিদলে অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন বিএবি’র সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু লুৎফে ফজলে রহিম খান (শাহরিয়ার),  ওয়াপসা-বিবি’র সহ-সম্পাদক মো. ফয়জুর রহমান (ফয়েজ), কোষাধ্যক্ষ ডা. বিপ্লব কুমার প্রামানিক, সদস্য মো. তৌহিদ হোসেন, বিপিআইসিসি’র সেক্রেটারি দেবাশিস নাগ এবং যোগাযোগ ও মিডিয়া উপদেষ্টা মো. সাজ্জাদ হোসেন। আরো উপস্থিত ছিলেন উপপরিচালক (খামার) জিনাত সুলতানা, চীফ সায়েন্টিফিক অফিসার (ভাইরোলজি) ডা. মো. শাহীনুর আলম।

This post has already been read 1883 times!