Saturday 20th of April 2024
Home / পরিবেশ ও জলবায়ু / সুপেয় পানির দাবিতে চকরিয়ায় ওয়াটার মার্চ ও মানব বন্ধন

সুপেয় পানির দাবিতে চকরিয়ায় ওয়াটার মার্চ ও মানব বন্ধন

Published at ডিসেম্বর ১০, ২০২২

চট্টগ্রাম সংবাদদাতা: জলবায়ুর পরিবর্তন জনিত কারণে সাগরের তলদেশ ভরাট ও মাতামুহুরী নদী ভরাট হয়ে যাবার কারণে সাগরের লবনাক্ত পানি উপকুলীয় এলাকায় উপকুলীয় জনগোষ্ঠির পানির অধিকার ক্ষুন্ন করেছে এবং মানুষের জীবন ও জীবিকাকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। তাই বাংলাদেশের উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর জন্য সুপেয় পানির সর্বজনীন, ন্যায্য ও টেকসই প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করতে সরকারি বরাদ্দ ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির সাথে সাথে ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার বন্ধ করা, এলাকাভিত্তিক বড় বড় পুকুর, খাল, জলাশয় খনন করে তাতে বৃষ্টির পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা করা, খাসজমিতে মিঠা পানির আধার তৈরি করার দাবি জানিয়েছে ককসবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার বদরখালী এলাকার যুব, নারী, পুরুষ, পানি সংকটে ক্ষতিগ্রস্ত জনগণ সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস ২০২২ উদযপান উপলক্ষে শনিবার (১০ ডিসেম্বর) কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার বদরখালী চকরিয়া-মহেশখালী ব্রীজ চত্বরে ‘পানি অধিকার মানবাধিকার” উপকূলীয় সকল মানুষের পানি অধিকার নিশ্চিত কর’ প্রতিপাদ্য নিয়ে বেসরকারী উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান আইএসডিই বাংলাদেশ, পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান এবং একশনএইড বাংলাদেশ আয়োজিত উপক‚লজুড়ে পানি অধিকার প্রচারাভিযানে অংশগ্রহণকারীরা উপরোক্ত দাবি জানান।

আইএসডিই বাংলাদেশ এর কর্মসুচি সমন্বয়কারী মো. জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশনেন চকরিয়া বদরখালী ভার্চু স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও মাতামুহুরী টিভির পরিচালক সাংবাদিক মহিউদ্দীন কাদের অদুল, বদরখালী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মনজুর কাদের, যুব নেতা ইশরফ আলী ভুট্টো, জালাল উদ্দীন, আইএসডিই বাংলাদেশ’র উপজেলা ব্যবস্থাপক জালাল উদ্দীন, প্রশিক্ষন কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল ফাহিম, সাদিয়া সুলতানা, শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।

বক্তারা জানান, উপকূলে সমুদ্র তীরবর্তী অবস্থান, সীমিত প্রাকৃতিক সম্পদের অতিরিক্ত এবং অপরিকল্পিত ব্যবহারসহ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত নানা কারণে হুমকির সম্মুখীন উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর পানি অধিকার। একদিকে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চবতা বৃদ্ধির ফলে পানির উৎসগুলোর লবণাক্ততা, অন্যদিকে ভূগর্ভ-নিম্নস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়ায় অনেক গভীর নলকূপের পানি উঠছে না। সেকারণে সুপেয় খাবার পানি ও কৃষি কাজ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। পানির অধিকার মানবাধিকারের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হলেও বাংলাদেশে উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর পানি অধিকার সুরক্ষিত করা সম্ভব হচ্ছে না। যা সাধারন মানুষের অন্যান্য মৌলিক মানবাধিকারকেও ক্ষুন্ন করছে। বাংলাদেশের উপক‚লীয় অঞ্চলে পানির সংকট নতুন নয়। সুপেয় পানির সংকট উপকূলীয় মানুষের ঝুঁকিগুলোর মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি।

বক্তারা আরো বলেন, সুপেয় পানির সংকটের কারণে উপকূলের মানুষ অন্যান্য নানা সমস্যায় পড়ছেন। কৃষি উৎপাদন, গবাদীপশু পালন, খাবার পানি, রান্নাবান্নাসহ দৈনন্দিন কাজে লবণাক্ত পানি ব্যবহারের ফলে অনেকেই উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। নারীদের ক্ষেত্রে খিঁচুনি, জরায়ুর সমস্যাসহ গর্ভবতী নারীদের বিবিধ ঝুঁকি বাড়ছে। দূর থেকে পানি সংগ্রহ করতে গিয়ে অতিরিক্ত শ্রমঘন্টা ব্যয় হচ্ছে, আবার নিপীড়নের শিকারও হচ্ছেন অনেকেই। পানি কিনে খেতে গিয়ে পরিবারগুলোতে অর্থনৈতিক চাপ বাড়ছে। এবছর শীত শুরুর সাথে সাথে পানির সংকট আরো ঘনীভুত হওয়া শুরু হয়েছে। তাই উপকূলীয় এলাকায় সুপেয় পানির সরবরাহ নিশ্চিত করতে জরুরিভাবে কার্যকর ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর সুপেয় পানি সংকটকে জরুরি বিবেচনায় নিতে জন্য নিরবচ্ছিন্ন পানি সরবরাহ তথা সুপেয় পানি অধিকার নিশ্চিত করতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণের দাবি জানান।

This post has already been read 1131 times!