সোমবার , অক্টোবর ১৪ ২০২৪

নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলের ৩৫ পয়েন্টে ৬২ কিলোমিটার বেঁড়িবাধ ঝুঁকিতে

ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা): বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত নিম্নচাপ ভারতের উড়িষ্যা উপকূলে সরে গিয়ে দুর্বল হওয়ার পর সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। লঘুচাপের প্রভাবে ১৪ সেপ্টেম্বর (বুধবার) সকালে সাতক্ষীরায় টানা চতুর্থ দিনেও হালকা ঝড়ো হাওয়া সহ মাঝারি ও ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। আর এই নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকার ৩৫টি পয়েন্টের প্রায় ৬২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। আশাশুনি ও শ্যামনগরের বেশ কয়েকটি নদ-নদীর পানি বেড়েছে। শ্যামনগরের আটুলিয়া ইউনিয়নে ও বুড়িগোলিনী ইউনিয়নে দাতিনাখালী বেঁড়িবাধে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ ফাটল। আতংকে উপকুল বাসী। ইতোমধ্যে পানিতে ভেসে গেছে কয়েকশ বিঘা মৎস্য ঘের। অবিরাম বৃষ্টির ফলে তলিয়ে গেছে উপকূলীয় এলাকার নিম্নাচল। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজারো মানুষ। বৈরি এ আবহাওয়ার কারনে  বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।

এদিকে উপকূলীয় উপজেলা আশাশুনি ও শ্যামনগরের বেশ কয়েকটি নদ-নদীর পানি স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১ থেকে ২ ফুটের অধিক উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিস। পানিতে ভেসে গেছে শত শত বিঘা মৎস্য ঘের। অপরদিকে, লঘুচাপের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকার জরাজীর্ণ ৩৫টি পয়েন্টে প্রায় ৬২ কিলোমিটার বেঁড়িবাধ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বৃষ্টি আর ২-১ দিন অব্যাহত থাকলে বাঁধ ভেঙে যেতে পারে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের।

শ্যামনগরের গাবুরার ইউপি চেয়ারম্যান জি.এম মাসুদুল আলম জানান, থেমে থেমে মাঝারি ও ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে এলাকায়। নদীতে জোয়ারের সময় বাতাসের তীব্রতা বাড়ছে। ইতোমধ্যে ভারি বর্ষণের কারণে সহস্রাধিক বিঘা মৎস্যঘের পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া গাবুরা, নাপিতখালি, জেলেখালিসহ কয়েকটি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। ওই সব এলাকায় যেকোনো সময় বাঁধ ভেঙে যেতে পারে। ইতোমধ্যে উপকূলীয় সব নদীর পানি অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।

সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী রিপন বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি বর্তানে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা ও মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। আগামী ২-১ দিন আবহাওয়ার এমন পরিস্থিতি থাকবে। তারপর থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৩০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের জানান, সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুটি বিভাগের আওতায় মোট ৮০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে জরাজীর্ণ ৩৫টি পয়েন্টে প্রায় ৬২ কিলোমিটার উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। এ সকল বেড়িবাঁধ সংস্কার অনেক জায়গায় কাজ চলমান রয়েছে।

This post has already been read 2430 times!

Check Also

পাহাড় কর্তনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে  -পরিবেশ উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক: পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা …