Tuesday 19th of March 2024
Home / পোলট্রি / দেশে প্রথমবারের মতো বাড়তি ফলিক এসিড সমৃদ্ধ ‘ফোলেট ডিম’ বাজারে আনলো রেনাটা

দেশে প্রথমবারের মতো বাড়তি ফলিক এসিড সমৃদ্ধ ‘ফোলেট ডিম’ বাজারে আনলো রেনাটা

Published at আগস্ট ২৮, ২০২২

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন রেনাটার এনিম্যাল হেলথ ডিভিশনের পরিচালক মো. সিরাজুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব নিউট্রিশন এন্ড ফুড সায়েন্স-এর পরিচালক প্রফেসর ড. খালেদা ইসলাম। এ সময় রেনাটার অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে প্রথমবারের মতো বাড়তি ফলিক এসিড সমৃদ্ধ ‘ফোলেট ডিম’নামে নতুন এক ধরনের ডিম বাজারজাত শুরু করেছে রেনাটার নিউট্রাসিউটিক্যালস ডিভিশনের সহযোগী প্রতিষ্ঠান পূর্ণভা। পূর্ণভার ফোলেট ডিমে সাধারণ ডিমের তুলনায় ৩৫ শতাংশ বেশি ফোলেট থাকে যা প্রস্তাবিত খাদ্য চাহিদা (আরডিএ)-এর ২০ শতাংশ পূরণ করে। এছাড়াও সাধারণ একটি ডিমে যেখানে প্রায় ৪০ মাইক্রোগ্রামের মতো ফলিক এসিড থাকে, সেখানে রেনাটার প্রতি ১০০ গ্রাম ‘ফোলিক ডিম’ -এ ফলিক এসিডের পরিমাণ থাকবে ১৭৫ মাইক্রোগ্রাম বলে জানিয়েছে রেনাটা।

রবিবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ‘ফোলেট ডিম’এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা উপলক্ষ্যে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে রেনাটা লিমিটেড। সংবাদ সম্মেলনে ‘ফোলেট ডিম’ এর ওপর বিস্তারিত আলোচনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব নিউট্রিশন এন্ড ফুড সায়েন্স-এর পরিচালক প্রফেসর ড. খালেদা ইসলাম (এমবিবিএস, ডিপিএইচ, পিএইচ.ডি)। রেনাটার পক্ষ থেকে প্রতিনিধিত্ব করেন রেনাটার এনিম্যাল হেলথ ডিভিশনের পরিচালক মো. সিরাজুল হক।

প্রফেসর ড. খালেদা ইসলাম বলেন, রেনাটার পূর্ণভার ফোলেট ডিমে সাধারণ ডিমের তুলনায় ৩৫ শতাংশ বেশি ফোলেট থাকে যা প্রস্তাবিত খাদ্য চাহিদা (আরডিএ)-এর ২০ শতাংশ পূরণ করে। শিশু, কিশোর ও গর্ভবতী মহিলাদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী এই ফোলেট (ভিটামিন বি ৯) লোহিত কণিকা তৈরিতে গঠন এবং বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এছাড়াও ডিএনএ ও আরএনএ তৈরি করে এবং খাদ্যকে পরিপাকে সহায়তার মাধমে শরীরে পুষ্টি উপাদানের যোগান দেয়।

অধ্যাপক ডা. খালেদা বলেন, সাধারণ ডিমেও ফলিক এসিড থাকে কিন্তু মুরগির হজম প্রক্রিয়ার ফলে পাকস্থলির এসিড ফোলেটকে হ্রাস করে। যার ফলে ডিমের ভিটামিন-বি৯ এর পরিমাণ কমে যায়। এ সমস্যা সমাধানে রেনাটার বিজ্ঞানীরা স্প্রে কোটিং কৌশল ব্যবহার করে পরিবর্তিত রিলিজ ফোলেট তৈরি করছেন। যা মুরগির পেটে শক্তিশালী এসিডের উপস্থিতিকে অক্ষত রাখে। ফলে ডিমে বেশি ফোলেট পাওয়া যায়।

অধ্যাপক ডা. খালেদা আরো বলেন, ফলিক এসিডের সম্পূরকগুলোতে ফোলেটের একটি সিন্থেটিক, নন-বায়োঅ্যাকটিভ ফর্ম থাকে যা মানবদেহের মধ্যে কয়েকটি রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে সক্রিয় ও শোষণযোগ্য আকারে রূপান্তরিত হয়। অন্যদিকে ফোলেট-সমৃদ্ধ ডিমে ইতিমধ্যেই একটি বায়োঅ্যাকটিভ ফর্ম ফলিক এসিড থাকে যা সহজেই শোষিত হয় এবং শরীরে ব্যবহারের জন্য সক্রিয় হয়ে উঠে।

রেনাটার এনিমেল হেলথ ডিভিশনের পরিচালক মো. সিরাজুল হক বলেন, ইউরোপ আমেরিকাসহ উন্নত বিশ্বের অনেক দেশেই বর্তমানে এই ডিম প্রচুর পরিমাণে বাজারজাত করা হচ্ছে। বাংলাদেশে রেনাটাই প্রথমবারের মতো এই ফোলেট ডিম বাজারে এনেছে। প্রথমাবস্থায় এ ডিম সুপরি শপে পাওয়া যাচ্ছে। এই ডিম খেলে আলাদা করে কাউকে আর ফলিক এসিড খেতে হবে না। বিশেষ করে প্রসূতি মা ও শিশুদের জন্য এই ডিম অত্যন্ত উপকারী। সুদৃশ্য প্যাকেট করা প্রতি ডজন ডিমের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ধরা হয়েছে ২২০টাকা এবং দেশের সুপার শপগুলোতে উক্ত ডিম পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি।

তিনি জানান, পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রেনাটা লিমিটেড তাদের পোলট্রি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সুবিধা সম্বলিত কাশর, ভালুকায় একটি ট্রায়াল পরিচালনা করেছিল। ১২টি মুরগির তিনটি দলে বিভক্ত কওের মোট ৩৬টি মুরগি পরীক্ষায় ব্যবহার করা হয়েছিল। কন্ট্রোল গ্রুপের ডায়েটে একটি ফলিক এসিড অন্তর্ভুক্ত ছিল যা সাধারণত মুরগির খাবারে ব্যবহৃত হয়। দুটি গ্রুপকে পরিবর্তিত-রিলিজ ফলিক এসিড খাওয়ানো হয়েছিল।

অনুষ্ঠানে রেনাটা লিমিটেডের মানবসম্পদ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক নিসবাত আনোয়ারসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

This post has already been read 5586 times!