শনিবার , জুলাই ২৭ ২০২৪

বিএলআরআই এএমআর ল্যাবের এএমআর রেফারেন্স ল্যাবের স্বীকৃতি লাভ

সাভারে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বিএলআরআই) অবস্থিত অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) গবেষণাগার।

সাভার সংবাদদাতা: দেশের প্রাণিসম্পদ খাতে গবেষণার একমাত্র জাতীয় প্রতিষ্ঠান সাভারের বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বিএলআরআই) অবস্থিত অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) গবেষণাগারকে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স গবেষণা সংক্রান্ত রেফারেন্স ল্যাবরেটরি তথা এএমআর রেফারেন্স ল্যাবরেটরি (রিসার্চ) হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে। বুধবার (০৮ জুন) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ৩৩.০০.০০০০.১১৮.১৫.০২২.২০.২৬২ নং প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী এই স্বীকৃতি প্রদান করা হয়।

এই স্বীকৃতি প্রাপ্তিতে আনন্দ প্রকাশ করে বিএলআরআই এর মহাপরিচালক ড. এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, “এই ধরনের স্বীকৃতি পাওয়া আমাদের প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি গর্বের ব্যাপার। আমরা সকলেই জানি অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স বাংলাদেশসহ সকল উন্নয়নশীল দেশে জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি ঝুঁকিপূর্ণ বিষয় হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স প্রতিরোধে যদি এই মুহূর্তে কার্যকরী পদক্ষেপ না নেওয়া যায়, সেক্ষেত্রে ধারণা হরা হয় আগামী ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বে ৩০০ মিলিয়ন মানুষ অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স’র কারণে মৃত্যুবরণ করবে। অনাগত এই ঝুঁকি রুখতে বিশ্বব্যপী গবেষকরা কাজ করে চলেছেন, আর এএমআর সংক্রান্ত ‘ওয়ান হেলথ গ্লোবাল লিডার্স’ গ্রুপের কো-চেয়ার হিসেবে এর নেতৃত্ব প্রদান করছেন স্বয়ং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।”

এএমআর প্রতিরোধে কার্যকরভাবে লড়াইয়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে অ্যাকশন প্ল্যান ঘোষণা করেছেন বিএলআরআই’র ল্যাবটি একটি রেফারেন্স ল্যাব হিসেবে সেই ঘোষণা বাস্তবায়নে কাজ করে যাবে, বলে জানান তিনি। এ সময় তিনি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী এবং সচিব কে কৃতজ্ঞতা এবং আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এবং আমেরিকা সরকারের রোগতত্ত্ব ও রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের (সিডিসি) এর যৌথ অর্থায়নে “বাংলাদেশে Global Health Security Agenda (GHSA) এর  লক্ষ্য অর্জনে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স এবং জুনোসিস প্রতিরোধ প্রকল্প” শীর্ষক একটি প্রকল্প ২০১৭ সাল হতে বিএলআরআই কর্তৃক পরিচালিত হচ্ছে। এই প্রকল্পের অর্থায়নে ২০১৯ সালে বিএলআরআই-এ গড়ে তোলা হয় আধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানের বায়োসেফটি লেভেল-২ (বিএসএল-২) মানের অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্ট (এএমআর) গবেষণাগার। ইতোমধ্যেই গবেষণাগারটিকে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স অ্যাকশন সেন্টার (এআরএসি) নামকরণ করা হয়েছে। গত ২০২০ সনের ১৩ সেপ্টেম্বর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, এম পি গবেষণাগারটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

গত ২০২০ সনের ১৩ সেপ্টেম্বর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, এম পি গবেষণাগারটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

আন্তর্জাতিক মানের এই গবেষণাগারটিতে স্বয়ংক্রিয় এইচভিএসি, পাওয়ার ব্যাকআপ এবং অ্যাক্সেস কন্ট্রোল সিস্টেমসহ চারটি পৃথক পৃথক ইউনিট যেমন মিডিয়া প্রস্তুত (৩০ পিএসআই পজিটিভ চাপ), নমুনা প্রসেসিং (২০ পিএসআই নেগেটিভ চাপ), ইনোকুলেশন এবং এএসটি (৩০ পিএসআই নেগেটিভ চাপ) রয়েছে। এছাড়াও গবেষণাগারটিতে রয়েছে ভিটেক-২, স্বয়ংক্রিয় কলোনী কাউন্টার এবং জোন অব ইনহিবিশন রিডার, স্বয়ংক্রিয় ডাইলুটার এবং পেটার, স্বয়ংক্রিয় মিডিয়া ডিসপেন্সারসহ অন্যান্য আরও আধুনিক যন্ত্রপাতি।

অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স প্রতিরোধে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বিএলআরআই’র অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স গবেষণাগারটি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রাণী ও পোল্ট্রি ফুড ভ্যালু চেইন এবং পরিবেশে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স’র উৎস এবং বিস্তারের কারণ; বিস্তার প্রতিরোধে করণীয় নির্ধারণ ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনে এপিডেমিওলজিস্ট মাইক্রোবায়োলজিস্ট, যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ এবং নীতিনির্ধারকদের একই ছাদের নিচে একীভূত করে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স মোকাবেলায় “ওয়ান হেলথ” নীতিতে কাজ করে যাচ্ছে।

অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স গবেষণাগার থেকে প্রাণী ও প্রাণিজাত এবং পোল্ট্রি ও পোল্ট্রিজাত খাবার থেকে জীবাণু শনাক্তকরণ, অ্যান্টিবায়োটিকের সংবেদনশীলতা পরীক্ষণ, প্রশিক্ষণ, চিকিৎসা পরামর্শ ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে সহায়তা প্রদান করা হয়ে থাকে। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, এগ্রো-প্রসেসিং শিল্প-কারখানা, সাধারণ খামারি, তরুণ উদ্যোক্তা, এনজিওসহ সকল প্রতিষ্ঠান উক্ত গবেষণাগারের সেবা নিতে পারেন।

This post has already been read 2335 times!

Check Also

বারি উদ্ভাবিত আনারসের লাড্ডু মেটাবে পুষ্টি চাহিদা

কৃষিবিদ ইফরান আল রাফি : বাংলাদেশের প্রধান ফলগুলোর মধ্যে পুষ্টিগুন সম্পন্ন আনারস অন্যতম। উৎপাদন মৌসুমে …