Tuesday 19th of March 2024
Home / অন্যান্য / যারা মুজিবনগর সরকারকে সম্মান জানায় না, তারা পাকিস্তানি প্রেতাত্মার উত্তরসূরি -মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

যারা মুজিবনগর সরকারকে সম্মান জানায় না, তারা পাকিস্তানি প্রেতাত্মার উত্তরসূরি -মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী

Published at এপ্রিল ১৭, ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক: যারা মুজিবনগর সরকারকে সম্মান জানায় না তারা পাকিস্তানি প্রেতাত্মার উত্তরসূরি বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।

রবিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষ্যে পিরোজপুর জেলা প্রশাসন আয়োজিত আলোচনা সভায় রাজধানী থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

এ বিষয়ে মন্ত্রী আরো বলেন, ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস বাঙালি জাতিসত্তার স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সূতিকাগার। যেখান থেকে বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক রাষ্ট্রব্যবস্থা পরিচালনা শুরু হয়। অথচ এখনও বাংলাদেশে একটি মহল আছে যারা মুজিবনগর সরকারকে সম্মান জানায় না। মুজিবনগর দিবস তারা পালন করে না। বঙ্গবন্ধুকে সম্মান জানায় না। তারা পাকিস্তানি প্রেতাত্মাদের উত্তরসূরি। যারা বাংলাদেশের প্রথম স্বাধীন সরকারকে গ্রহণ করে না, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতিকে সম্মান জানায় না, মুজিবনগর দিবস পালন করেনা তারা বাংলাদেশ বিশ্বাস করে কিনা সে প্রশ্ন থেকে যায়। তারা পাকিস্তানি চিন্তা-চেতনা ও ধ্যান-ধারণায় বিশ্বাস করে।

বাঙালি জাতির ইতিহাসে মুজিবনগর দিবস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে মন্ত্রী আরো যোগ করেন, “বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূর্যের অভ্যুদয় হয়েছিল মুজিবনগর সরকার গঠনের মধ্য থেকে। মুজিবনগর সরকারের রাষ্ট্রপতি ছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের কথা আলোচনা করতে গেলে প্রথমেই স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকারের কথা আসবে। স্বাধীন বাংলা সরকার প্রথমে দেশের অভ্যন্তরে, পরবর্তীতে প্রবাসে অবস্থান নিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করে এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের স্বীকৃতি আদায়ের জন্য কাজ করে।

শ ম রেজাউল করিম আরো বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার ক্ষেত্রে স্বাধীন বাংলা সরকারই ছিল আমাদের প্রথম সোপান। এই স্বাধীন বাংলা সরকারকে নস্যাৎ করার জন্য কিছু ব্যক্তির সমন্বয়ে তখন পাকিস্তানের সঙ্গে কনফেডারেশন করার ষড়যন্ত্র হয়েছিল। তাদের সেই ষড়যন্ত্র সফল হয়নি। স্বাধীনতার পর ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর দেশে ফিরে আসার পর আমাদের স্বাধীনতা পূর্ণতা পেয়েছিল। বঙ্গবন্ধুহীন বাংলাদেশ ছিল অসম্পূর্ণ। বঙ্গবন্ধুহীন বিজয় ছিল আমাদের অসম্পূর্ণ বিজয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যার মাধ্যমে ঘাতকরা ভেবেছিল মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে হত্যা করতে পারবে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু অবিনাশী সত্তা। বঙ্গবন্ধু একটি আদর্শ, একটি বিশ্বাস।

স্বাধীন বাংলাদেশে বসে রাজনীতি করবেন, স্বাধীন বাংলাদেশের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবেন অথচ স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সম্মান করবেন না, স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার যারা প্রতিষ্ঠা করেছিল সে নেতৃত্বকে স্মরণ করবেন না, স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের প্রথম শপথ গ্রহণের দিনকে আনুষ্ঠানিকভাবে পালন করবেন না। তাহলে আপনারা কি পাকিস্তানের পক্ষে?- এ সময় প্রশ্ন রাখেন মন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার চিত্র তুলে ধরে এ সময় শ ম রেজাউল করিম আরো বলেন, সারা বাংলাদেশ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে আমরা যখনই পথ হারাবো তখনই আমাদের অস্তিত্বের কাছে, আমাদের শেকড়ের কাছে ফিরে যেতে হবে। বাংলাদেশ আজ স্বাধীন-সার্বভৌম। ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের আম্রকাননে আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার শপথ নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করেছিল বলেই এ বাংলাদেশের সূচনা হয়েছিল। আমাদের সে শেকড়কে সন্ধান করতে হবে, শ্রদ্ধা জানাতে হবে।

পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমানের সভাপতিত্বে পিরোজপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেবেকা খান, সিভিল সার্জন ডা. হাসনাত ইউসুফ জাকী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক চৌধুরী রওশন ইসলাম, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান খালেক, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বশির আহমেদ, নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোশারেফ হোসেন, পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউল আহসান গাজী, পিরোজপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার গৌতম নারায়ণ রায় চৌধুরী ও ফজলুল হক, জেলা পূজা পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোপাল বসু, স্থানীয় অন্যান্য সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

This post has already been read 1471 times!