Tuesday 19th of March 2024
Home / পরিবেশ ও জলবায়ু / পরিবেশের ক্ষতি রোধ করতে না পারলে কোনো দেশ বিরূপ প্রভাব থেকে রক্ষা পাবে না – হাবিবুন নাহার

পরিবেশের ক্ষতি রোধ করতে না পারলে কোনো দেশ বিরূপ প্রভাব থেকে রক্ষা পাবে না – হাবিবুন নাহার

Published at ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২২

ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা) : খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স ডিসিপ্লিনের উদ্যোগে পরিবেশ বিষয়ক ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ এন্ড ইকোসিস্টেম রেস্টোরেশন’ শীর্ষক দু’দিনব্যাপী প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন সমাপ্ত হয়েছে। এই আন্তর্জাতিক সম্মেলন থেকে ৭ দফা সুপারিশ গ্রহণ করা হয়। ২০ ফেব্রুয়ারি (রবিবার) দুপুরে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার।

তিনি বলেন, প্রাথমিক পর্যায় থেকে শিশুদের পরিবেশ শিক্ষা দেওয়া প্রয়োজন। পরিবেশের বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। বিজ্ঞানী গবেষকদের ফাইন্ডিংসের ভালো ও ক্ষতিকর সব দিক তুলে ধরতে হবে। কেননা পরিবেশের কোনো সীমানা নেই, পরিবেশ ও প্রতিবেশের ক্ষতি রোধ করতে না পারলে কোনো দেশ বা অঞ্চল এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া থেকে রক্ষা পাবে না।

তিনি আরো বলেন, পরিবেশ ও জলবায়ু নিয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠান প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এ ধরনের আরও সম্মেলনের উদ্যোগ নেওয়া হোক। আপনাদের সম্মেলনের সুপারিশ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয় সবিশেষ গুরুত্বের সাথে দেখবে। তিনি বলেন, সম্মেলনে আগত দেশি-বিদেশি বিজ্ঞানীদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়াতে হবে এবং কমিউনিটি গঠন করতে হবে।

সম্মেলনে চিফ প্যাট্রন হিসেবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, জলবায়ু নিয়ে উন্নত দেশ কি করছে বা কোন নেতা কি করছেন তা নিয়ে বসে না থেকে আসুন আমরা আঞ্চলিক ভিত্তিতে অভিজ্ঞতা, গবেষণা ও উদ্ভাবনার শেয়ারিং করি। আমরা লিংক স্থাপন, সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র ও গবেষকদের মধ্যে তথ্য বিনিময় করি। আমরাই এগিয়ে যাই। আমরাই নেতৃত্ব দেই।

তিনি আরও বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স ডিসিপ্লিন আয়োজিত এই সম্মেলন আমাদের নবীন শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রীদের নানামুখী উপকারে আসবে এবং তারা গবেষণায় অনুপ্রাণিত হবেন। তিনি বলেন, পরিবেশের যা ক্ষতি হয়েছে তা যেনো আর না হয়, আমরা যাতে আর না ক্ষতি করি, বরং রোধ করি। আমরা পরিবেশ ও প্রতিবেশের পুনরুদ্ধারে সচেষ্ট হই। উপাচার্য এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে আগত সকল দেশি-বিদেশি অংশগ্রহণকারীদের বিশ্ববিদ্যালয় এবং তার নিজের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

সম্মেলনের প্যাট্রন হিসেবে বক্তব্য রাখেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা এবং সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস। সভাপতিত্ব করেন সম্মেলন অরগানাইজিং কমিটির কনভেনর প্রফেসর ড. দিলীপ কুমার দত্ত। সম্মেলনে গৃহীত ৭ দফা সুপারিশ উপস্থাপন করেন সম্মেলনের অরগানাইজিং সেক্রেটারি সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর ড. আব্দুল্লাহ হারুন চৌধুরী।

সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী বিদেশি ডেলিগেটদের পক্ষ থেকে অনুভূতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন দুবাই সাফারি পার্কের প্রিন্সিপাল সায়েন্টিফিক অফিসার প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলী রেজা খান, ভারতের যাদবপুর ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ড. জগপতি তাহ, বর্ধমান ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ড. অপূর্ব রতন ঘোষ ও নেপালের ত্রিভূবন ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ড. রাম কৈলাশ প্রসাদ যাদব। বিদেশি অতিথিবৃন্দ সম্মেলন সফল ও আতিথেয়তা চমৎকার বলে আখ্যায়িত করেন। এছাড়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. মঞ্জুর হোসেনও অনুভূতি প্রকাশ করে এই সম্মেলনকে অত্যন্ত সফল বলে অভিহিত করেন এবং এমন একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ২টি পেপার উপস্থাপনের বিষয়সহ দু’দিনই সময় দেওয়ার ঘটনার ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, নবীন হলেও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ও গবেষণায় এগিয়ে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতে শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করবে এটা প্রত্যাশা করা যায়।

সম্মেলনে বেস্ট পোস্টার, বেস্ট সায়েন্টিফিক পেপারসহ কয়েকটি ক্ষেত্রে পুরস্কার ও সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। অংশগ্রহণকারী বিজ্ঞানীরা দুপুরে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে দেশের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সুন্দরবন এবং উপকূলীয় জয়মনি এলাকা পরিদর্শন করেন।

This post has already been read 1796 times!