Tuesday 19th of March 2024
Home / পরিবেশ ও জলবায়ু / চট্টগ্রামের প্রতিটি ওয়ার্ডে বাগান স্থাপন করা হবে -চসিক মেয়র

চট্টগ্রামের প্রতিটি ওয়ার্ডে বাগান স্থাপন করা হবে -চসিক মেয়র

Published at অক্টোবর ৩১, ২০২১

চট্টগ্রাম সংবাদদাতা: চট্টগ্রাম প্রাকৃতিক সম্পর্কে পরিপূর্ণ হলেও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের হাত থেকে মুক্ত নয়। মানব সৃষ্ট ও প্রকৃতি সৃষ্ট বিপর্যয়ের অন্যতম ঝুঁকিতে আছে। যার কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবের দিক দিয়ে চট্টগ্রাম দেশের অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল। চট্টগ্রামে সাধারণ মানুষের অন্যতম পেশা কৃষি হলেও চট্টগ্রাম খাদ্যঘাটতি এলাকা। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে খাদ্য আমদানি করতে ঘাটতি পূরণ করতে হয়। সরকারের নানামুখী কর্মকাণ্ডে দেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হলেও খাদ্য-পুষ্ঠির জোগান এখনো নিশ্চিত হয়নি। চট্টগ্রামকে আধুনিক পরিচ্ছন্ন, সবুজ নগরীতে পরিণত করতে নগরবাসী, বিশেষ করে সচেতন নাগরিকদের আরও বেশি এগিয়ে আসতে হবে। নগরীর প্রাণ-প্রকৃতি সুরক্ষায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ডে পরিত্যক্ত এলাকায় বাগান, ছাদবাগান, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড জোরদার করার জন্য মাঠ স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। যারা ছাদবাগান ও নগর কৃষিতে জড়িত হবে তাদেরকে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে যাবতীয় সহযোগিতা প্রদান করা হবে।

রোববার (৩১ অক্টোবর ২০২১) চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন মিলনায়তনে আয়োজিত ‘নগরে খাদ্য নিরাপত্তা ও নগর-কৃষি’ শীর্ষক এক বিভাগীয় পরামর্শ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ রেজাউল করিম চৌধুরী এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রশিকার সহকারী পরিচালক অজয় মিত্র শংকু।

মূল প্রবন্ধে বলা হয়, দেশের মোট আয়তনের ২৫ শতাংশ সবুজায়ন ও বন থাকার কথা থাকলেও ইট-পাথরের ঢেকে যাচ্ছে পুরো দেশ। সেকারণে পুরো দেশজুেড় উত্তপ্ততা বাড়ছে। এছাড়াও প্রতিনিয়তই খাদ্যের দাম সাধারন মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে, দাম বৃদ্ধি নিয়ে সীমিত আয়ের মানুষের উৎকন্ঠা বাড়ছে। এছাড়াও নিরাপদ খাবার নিয়ে মানুষের উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার শেষ নেই। করোনার কারনে একটি শ্রেণীর মানুষের আয় কমায় নিত্যখাদ্য পণ্য নিয়ে মানুষ দুশ্চিন্তায় থাকেন এবং অনেক মানুষকে একবেলা না খেয়ে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। এছাড়া দেশ খাদ্য নিরাপত্তায় স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও চট্টগ্রামে খাদ্য ঘাটতি লেগেই আছে। নগর-কৃষির মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করা গেলে এই খাদ্য ঘাটতি কমনো ও একই সাথে নিরাপদ খাদ্যের যোগান ও নিশ্চিত করা সম্ভব হতো বলে মত প্রকাশ করা হয়।

বিভাগীয় পরামর্শ সভায় বক্তারা নগর-কৃষি প্রবর্তন ও উন্নয়নে নীতিমালা, কর্মপরিকল্পনা ও গাইডলাইন তৈরি, নগর-কৃষিকে উৎসাহিত করার জন্য হোল্ডিং ট্যাক্স রেয়াতসহ অন্যান্য প্রণোদনা প্রদান, নতুন ভবন তৈরির নীতিমালায় ছাদ কৃষি বাধ্যতামূলক করা, সিটি করপোরেশনে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কার্যক্রম সম্প্রসারণ, নগর কৃষির জন্য সিটি করপোরেশনের পৃথক বাজেট বরাদ্দ করা, মহানগরীতে নগরকৃষি নার্সারি স্থাপন করা, নাগরিকদের সচেতন করার উদ্দেশ্যে ব্যাপক প্রচারাভিযান পরিচালনা এবং নগর-কৃষির সম্প্রসারণে পৃথক নাগরিকদের সম্পৃক্ত করে পৃথক তদারকি সেল গঠন করার দাবি জানান।

ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও আইএসডিই বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক এস এম নাজের হোসাইনের সভাপতিত্বে আইএসডিই বাংলাদেশ, কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম, পার্টিসিপেটরি অ্যাকশন রিসার্চ নেটওয়ার্ক(প্রাণ) ও খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক (খানি)-বাংলাদেশ আয়োজিত এ বিভাগীয় পরামর্শ সভা সঞ্চালনা করেন ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্যানেল মেয়র আফরোজা কালাম, বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. রেয়াজুল হক, কৃষি সম্প্রসরাণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মঞ্জুরুল হুদা, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এস এম হারুনর রশিদ, চট্টগ্রাম ডায়বেটিক জেনারেল হাসপাতালের উপ-পরিচালক পুস্টিবিদ হাসিনা আকতার লিপি, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি এম নাসিরুল হক, সাবেক সরকারী কর্মকর্তা কৃষিবিদ সরওয়ার কামাল, পরিবেশবিদ মুক্তিযোদ্ধা ড. অধ্যাপক ইদ্রিস আলী, চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সচিব খালেদ মাহমুদ ও অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের ডেপুটি ব্যবস্থাপক অমিত রঞ্জন দে বিশেষ অতিথি ছিলেন।

আলোচনায় অংশ নেন দক্ষিণ জেলা কৃষক লীগের সভাপতি আতিকুর রহমান চৌধুরী, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর অ্যাডভোকেট রেহেনা বেগম রানু, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ সদস্য রেহেনা আকতার, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়রের একান্ত সচিব আবুল হাশেম, প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকতা হুমায়ুন কবির চৌধুরী, বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা মঈনুল হোসেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর অধ্যাপক নেছার আহমদ, পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক রোমানা আকতার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক একরাম উদ্দীন, জেলা কার্যালয়ের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক নাসির উদ্দীন চৌধুরী, এডাব চট্টগ্রামের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, বনফুলের নির্বাহী পরিচালক রেজিয়া বেগম, নারী নেত্রী ঝর্না বড়ুয়া, বিকশিত নারী নেটওয়ার্কের সভাপতি জন্নাতুল ফেরদৌস, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান, ক্যাব নেতা মোহাম্মদ জানে আলম, সেলিম জাহাঙ্গীর, হারুন গফুর ভুইয়া, সুচিত্রা গুহ টুম্পা প্রমুখ।

This post has already been read 1642 times!