Friday 29th of March 2024
Home / ফসল / করোনাকালেও সকল ফসলের উৎপাদন বেড়েছে -কৃষিমন্ত্রী

করোনাকালেও সকল ফসলের উৎপাদন বেড়েছে -কৃষিমন্ত্রী

Published at অক্টোবর ১৫, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক: কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেছেন, করোনাকালে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী কৃষি মন্ত্রণালয় সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ ও তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। ফলে করোনাকালেও দেশে খাদ্য উৎপাদনের ধারা অব্যাহত রয়েছে ও তা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে রেকর্ড বোরো উৎপাদন হয়েছে ২ কোটি টনেরও বেশি, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। গত বছরের তুলনায় এ বছর সকল ফসলের উৎপাদনই বেড়েছে। মোট চালের উৎপাদন হয়েছে ৩ কোটি ৮৬ লাখ টন, গম ১২ লাখ টন, ভুট্টা প্রায় ৫৭ লাখ টন, আলু ১ কোটি ৬ লাখ টন, শাকসবজি ১ কোটি ৯৭ লাখ টন, তেল ফসল ১২ লাখ টন ও ডাল ফসল ৯ লাখ টন।

শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) বিশ্ব খাদ্য দিবস ২০২১ উদযাপন উপলক্ষ্যে ঢাকার ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) মিলনায়তনে প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

কৃষি মন্ত্রণালয় এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) আয়োজিত এ প্রেস ব্রিফিংয়ে সভাপতিত্ব করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো: মেসবাহুল ইসলাম ও  গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তব্য রাখেন এফএওর বাংলাদেশ প্রতিনিধি রবার্ট ডি. সিম্পসন। এসময় কৃষি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ ও সংস্থাপ্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন

মন্ত্রী বলেন, পেঁয়াজে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে এক বছরেই কৃষি মন্ত্রণালয় ৭ লাখ টন উৎপাদন বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছে। এবছর ৩৩ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে।

ড. রাজ্জাক আরো বলেন, বিশ্বের অনেক দেশ খাদ্য সংকটে পড়লেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ও আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সব দুর্যোগ মোকাবিলা করে দেশের খাদ্য উৎপাদনের চলমান ধারা অব্যাহত রাখতে পেরেছি। ভবিষ্যতেও রাখতে পারব- এ আশা করি।

উল্লেখ্য, আগামীকাল ১৬ অক্টোবর শনিবার কৃষি মন্ত্রণালয় ও জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) এর যৌথ উদ্যোগে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পালিত হবে ‘বিশ্ব খাদ্য দিবস-২০২১। এবারের প্রতিপাদ্য হলো ‘আমাদের কর্মই আমাদের ভবিষ্যৎ- ভালো উৎপাদনে ভালো পুষ্টি, আর ভালো পরিবেশেই উন্নত জীবন’ (Our actions are our future- Better Production, better nutrition, a better environment and a better life)

ব্রিফিংয়ে জানান হয়, দিবসটির গুরুত্ব তুলে ধরতে কৃষি মন্ত্রণালয় বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কাল শনিবার দিবসের প্রথমভাগে সকালে ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে প্রতিপাদ্যের উপর একটি আন্তর্জাতিক সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। এ সেমিনারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ স্মরণীয় করে রাখার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। তার অংশ হিসেবে এ সেমিনারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) প্রকাশিত ‘100 Years of Agricultural Development in Bangladesh’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন এবং বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) উদ্ভাবিত ‘বঙ্গবন্ধু ধান ১০০ অবমুক্ত করবেন। এছাড়া, প্রধানমন্ত্রী ‘বঙ্গবন্ধু ধান ১০০ দিয়ে নির্মিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি উন্মোচন করবেন।

বাংলাদেশে ১০০ বৎসরের কৃষি উন্নয়ন বইটিতে ১৯২১ সাল থেকে আজকের বাংলাদেশ পর্যন্ত ধারাবাহিক কৃষি বিষয়ক উন্নয়নে গবেষণা, সম্প্রসারণ, শিক্ষা ইত্যাদির প্রচেষ্টা ও ফল বর্ণনা করা হয়েছে এবং এই ধরনের বই বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম। বঙ্গবন্ধু ধান ১০০ বোরো মৌসুমের উচ্চ জিংকসমৃদ্ধ ধানের জাত। এতে জিংকের পরিমাণ ২৫.৭ মিলিগ্রাম/কেজি যা জিংকের অভাব পূরণে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।

অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে আন্তর্জাতিক সেমিনারের পর বিকালে খাদ্য নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় করণীয় নিয়ে একটি কারিগরি সেশন অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে কৃষিমন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন। সেখানে দেশে বিদেশের কৃষি ও খাদ্য বিষয়ে প্রথিতযশা বিশেষজ্ঞগণ অংশগ্রহণ করবেন। এছাড়া, জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

মন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমান সরকার সকলের জন্য নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্যের  নিশ্চিত করতে সচেষ্ট রয়েছে। সেজন্য, একটি টেকসই খাদ্য ব্যবস্থা উন্নয়নে ‘জাতীয় কৃষি নীতি ২০১৮’, জাতীয় কৃষি সম্প্রসারণ নীতি ২০২০’ ‘জাতীয় কৃষি যান্ত্রিকীকরণ নীতি ২০২০’ ‘বাংলাদেশ উত্তম কৃষি চর্চা নীতিমালা ২০২০’ এবং‘ জাতীয় খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নীতি ২০২০’ প্রণয়ন করা হয়েছে। এ সকল নীতির লক্ষ্য হলো খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জন।

This post has already been read 2774 times!