Friday 19th of April 2024
Home / অর্থ-শিল্প-বাণিজ্য / আমের রপ্তানি বৃদ্ধিতে সর্বাত্মক উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে -কৃষিমন্ত্রী

আমের রপ্তানি বৃদ্ধিতে সর্বাত্মক উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে -কৃষিমন্ত্রী

Published at জুলাই ১৮, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক: আমের রপ্তানি বৃদ্ধিতে সর্বাত্মক উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক এমপি। তিনি বলেন, দেশের আমকে আমরা ব্যাপকভাবে বিশ্ব বাজারে নিয়ে যেতে চাই। সেজন্য, রপ্তানি বাধাসমূহ চিহ্নিত করে তা নিরসনে কাজ চলছে। ইতোমধ্যে, নিরাপদ আমের নিশ্চয়তা দিতে ৩টি ভ্যাকুয়াম হিট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপনের কাজ চলছে। উৎপাদন থেকে শিপমেন্ট পর্যন্ত আম নিরাপদ রাখতে উত্তম কৃষি চর্চা বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। ফাইটোস্যানিটারি সার্টিফিকেট দেয়ার কাজ চলছে। এর ফলে আগামী বছর আম রপ্তানির পরিমাণ অনেক বৃদ্ধি পাবে।

কৃষিমন্ত্রী রবিবার (১৮ জুলাই) বিকালে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষ থেকে ভার্চুয়ালি ‘আম রপ্তানি বৃদ্ধিতে করণীয়’ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, এ বছর আমের ভালো ফলন হয়েছে। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করেছি লকডাউন ও বাজার না থাকায় চাষিরা আম বিক্রিতে হিমশিম খাচ্ছে ও আশানুরূপ দাম পায়নি। সেজন্য, আন্তর্জাতিক বাজারে আরো বেশি যেতে হবে। যাতে করে চাষিরা আশানুরূপ দাম পায় ও আম চাষে আরো আগ্রহী হয়।

ড. রাজ্জাক আরও বলেন, আম বাংলাদেশের একটি উচ্চমূল্যের অর্থকরী ফসল। বর্তমান সরকারের নানামুখী উদ্যোগ, আমের উন্নত জাত ও উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের ফলে দেশে প্রতিবছর আমের উৎপাদন বাড়ছে। আম রপ্তানির সম্ভাবনাও অনেক। কিন্তু রপ্তানিতে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। অনেক দেশ বাংলাদেশের চেয়ে কম উৎপাদন করেও রপ্তানিতে এগিয়ে রয়েছে।

মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো: মেসবাহুল ইসলাম। সভাটি সঞ্চালনা করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো: রুহুল আমিন তালুকদার। এসময় কৃষি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন সংস্থাপ্রধান, আমচাষি, ব্যবসায়ী, শাকসবজি ও ফল রপ্তানিকারক এবং প্রাণ গ্রুপ, স্কয়ার ফুড, এসিআই, আকিজ ফুড, ব্র্যাক ডেইরিসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ সভায় উপস্থিত ছিলেন।

সভায় জানানো হয়, দেশে প্রতিবছর আমের উৎপাদন দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশ আজ বিশ্বে আম উৎপাদনে ৭ম স্থান অধিকার করেছে। কিন্তু বিভিন্ন দেশে আম রপ্তানি হলেও এর পরিমাণ উৎপাদনের তুলনায় অনেক কম। ২০১৯-২০ সালে দেশে প্রায় ১৫ লাখ টন আম উৎপাদিত হলেও রপ্তানি হয়েছে মাত্র ২৭৯ মেট্রিক টন। যার আর্থিক মূল্য প্রায় ১ হাজার ২০০ মার্কিন ডলার।

২০২০ সালে থাইল্যান্ড সর্বোচ্চ ৭৩৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের আম রপ্তানি করেছে। বাংলাদেশের প্রতিবেশী ভারত ১৩৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ও পাকিস্তান ১০১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের আম রপ্তানি করেছে। সেখানে বাংলাদেশ মাত্র ৫০ হাজার ডলারের আম রপ্তানি করেছে।

আম রপ্তানির ক্ষেত্রে মূল সমস্যা হলো উৎপাদনে উত্তম কৃষি চর্চার অভাব, রপ্তানিযোগ্য উন্নতজাতের অভাব, সেলফ লাইফ কম, সংগ্রহোত্তর পর্যায়ে সনাক্তকরণের অভাব, আন্তর্জাতিক মানের প্যাকেজিংয়ের অভাব, ব্র্যান্ডিং ইমেজ সৃষ্টি না হওয়া, রপ্তানি কার্যক্রমে দক্ষতা, সচেতনতা ও প্রশিক্ষণের অভাব প্রভৃতি।

সেজন্য, আম রপ্তানির সম্ভাবনা কাজে লাগানোর জন্য নতুন বাজার অনুসন্ধান, রপ্তানি চাহিদা অনুযায়ী জাত নির্বাচন, ফাইটোস্যানিটারি পদ্ধতি ও আমদানিকারক দেশের উত্তম কৃষি চর্চা মেনে আম উৎপাদন, সার্টিফিকেশন, উন্নত প্যাকিং, বিমান বন্দরে কার্গো ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি নিয়ে সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়।

এপিএ বাস্তবায়নে কৃষি মন্ত্রণালয় এবারও ২য় স্থান অর্জন করেছে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির (এপিএ) চূড়ান্ত মূল্যায়নে কৃষি মন্ত্রণালয় ৫১টি মন্ত্রণালয়/বিভাগের মধ্যে ২য় স্থান অর্জন করেছে। এপিএ বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয়ের অর্জিত নম্বর ৯৩.১৩। ৯৫টি কর্মসম্পাদন সূচকের মধ্যে ৭৪টিতে শতভাগ অর্জন করেছে।

উল্লেখ্য যে, কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক এমপির নেতৃত্বে পরপর দুইবছর কৃষি মন্ত্রণালয় এপিএ বাস্তবায়নে ২য় স্থান অর্জন করলো।

আজ রবিবার সকালে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মন্ত্রণালয়ের পক্ষে এপিএ পুরস্কার গ্রহণ করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো: মেসবাহুল ইসলাম। পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসাবে ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন।

This post has already been read 2781 times!