Tuesday 16th of April 2024
Home / শিক্ষাঙ্গন / করোনা টেস্ট: জাতির ক্রান্তিকালে নিশ্চুপ বাকৃবির গবেষকরা

করোনা টেস্ট: জাতির ক্রান্তিকালে নিশ্চুপ বাকৃবির গবেষকরা

Published at এপ্রিল ১২, ২০২০

মো. আরিফুল ইসলাম (বাকৃবি) : দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ ও প্রাচীন কৃষি শিক্ষার বিদ্যাপীঠ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি)। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই নানা ক্ষেত্রে গবেষণা আর উদ্ভাবনে অগ্রগামী এ প্রতিষ্ঠানটি। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের নিরলস গবেষণায় উদ্ভাবিত হয়েছে অসংখ্য নতুন নতুন ফসলের জাত। ফলে দেশের কৃষি উৎপাদন বেড়েছে। দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। কিন্তু দেশের এ ক্লান্তিলগ্নে কেন এ গবেষকরা কোন ভূমিকা রাখছেন না। কেনইবা তারা নিশ্চুপ। করোনা শনাক্তকরণের জন্য প্রয়োজনীয় আরটি-পিসিআর মেশিনের কোন অভাব নেই। আছে মান সম্মত গবেষণাগার। সেসব গবেষণাগারে কিছু উন্নয়ন করা গেলেই পরীক্ষা করা সম্ভব। তবে কেন এগিয়ে আসছে না এ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এ প্রশ্নে উত্তাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।

গত ৯ এপ্রিল দেশের চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আগ্রহের ভিত্তিতে তাদের গবেষণাগারে করোনা ভাইরাস শনাক্তকরণের সক্ষমতা যাচাই করতে কমিটি করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। অথচ বাকৃবির যথেষ্ট সক্ষমতা রয়েছে। এরপরও আগ্রহ প্রকাশ করেনি কোন গবেষক বা বিভাগ। ফলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় বয়ে চলছে।

এসব বিষয় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক, সাবেক ও বর্তমান ছাত্র-ছাত্রী নানা সমালোচনা করছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি অনুষদে একাধিক আরটি-পিসিআর মেশিন রয়েছে। রয়েছে উন্নত গবেষণাগার। আরও কিছু নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারলেই প্রতিদিন অনেক করোনা পরীক্ষা করা সম্ভব। কিন্তু এবিষয়ে কোন গবেষক বা অনুষদ এগিয়ে আসছে না। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা। কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন, যে ল্যাবে এভিয়েন ইনফ্লুয়েঞ্জা গবেষণা করা যায় সেই ল্যাবে কেন কোভিড-১৯ গবেষণা করা যাবে না। ল্যাব সমস্যা নয়, সমস্যা তাঁদের সাহসে। তাঁরা ভয় পাচ্ছেন।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপালন অনুষদের পশু প্রজনন ও কৌলিবিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. মো. মুনির হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ে করোনা পরীক্ষার বিষয়ে গ্রুপ মেইলে প্রস্তাব দিলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন সাড়া পাননি। পরে তিনি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ল্যাবরেটরি স্থাপন ও করোনা শনাক্তকরণের কাজে সহযোগিতা করেন। তিনি জানান, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণাগার গুলোতে যেসকল আরটি-পিসিআর মেশিন ও সুবিধা রয়েছে তার সাথে সামান্য কিছু সংযুক্ত করলে প্রতিদিন ৩ শতাধিক করোনা পরীক্ষা করা সম্ভব। ড. মুনীর তাঁর কাছে থাকা গবেষণায় ব্যবহৃত রাসায়নিক উপকরণও দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনের সম্মতির অভাবে তিনি কাজ শুরু করতে পারেননি।

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মো. জসিমউদ্দিন বলেন, এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নিলে আমরা ব্যবস্থা করবো। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এ ক্লান্তিলগ্নে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেহেতু রোগটি খুবই ছোঁয়াচে তাই, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন বিভাগ এ বিষয়ে কোন উদ্যোগ না নেয়ায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কাউকে কিছু বলা হয়নি। তবে সরকার চাইলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

This post has already been read 2954 times!