Thursday 25th of April 2024
Home / অর্থ-শিল্প-বাণিজ্য / দেশের মধু যাচ্ছে বিদেশে

দেশের মধু যাচ্ছে বিদেশে

Published at মার্চ ১০, ২০১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক: মৌ চাষ সম্প্রসারণ পুষ্টির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি পরাগায়ণের মাধ্যমে ফল ও ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই ফসলের মাঠে মৌ চাষ কৃষকের জন্য বাড়তি আয়ের সংস্থান করে থাকে। তাই মৌ সম্পদের টেকসই উৎপাদন নিশ্চিত করার জন্য প্রযুক্তির ব্যবহার, প্রসেসিং ও বাজারজাত অপরিহার্য। মূল্যবান মৌ সম্পদ এবং মধু উৎপাদন ও বিপণনের মাধ্যমে স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব। মধু উৎপাদন, বিপণন, প্রসেসিং নিয়ে গবেষণা প্রয়োজন। মৌ চাষের বিষয়টি স্বল্পশ্রম ও স্বল্প পুঁজির বিনিয়োগের তুলনায় অধিক মুনাফা লাভের সম্ভাবনাময় পেশা ও ব্যবসা হিসেবে জনপ্রিয়তা এবং গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছে। তবে আমাদের সম্ভাবনার সর্বোচ্চ অংশটুকু নিশ্চিত করতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়েও মৌ চাষ ও বিপণনে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রয়োজনীয় রয়েছে। এখাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মোট ৩০ শতাংশ নারী জড়িত।

রোববার (১০মার্চ)কৃষিমন্ত্রী ড.মো.আব্দুর রাজ্জাক এমপি রাজধানীর আ.কা.মু গিয়াস উদ্দিন মিলকি অডিটরিয়াম চত্বরে জাতীয় মৌ মেলা ২০১৯ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন। তিনদিনব্যাপী এবারের মৌ মেলার প্রতিপাদ্য ‘ফলন, আয় ও পুষ্টি বাড়াতে মৌ চাষ করি’। এবারের মেলায় মোট ৬০ টি স্টল অংশগ্রহণ করেছে। মেলা আগামী ১২ মার্চ পর্যন্ত চলবে।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে চাই কৃষিসহ ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে সুউচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন। কৃষিকে প্রকৃত বাণিজ্যিক কৃষিতে রুপান্তর করতে হবে, এর জন্য বাজারজাত বিপণন ও রপ্তানি অপরিহার্য। বাংলাদেশ থেকে জাপানে মধু রপ্তানি করা হয়, তাহলে সে দেশে আরও অনেক কিছু রপ্তানি করা যাবে সেগুলো বের করতে হবে। আমাদের প্রক্রিয়াজাত ও দেশিয় ব্রান্ড না থাকায় কাঁচা মধুও রপ্তানি করতে হচ্ছে। মৌমাছি প্রকৃতির বন্ধু। পরিবেশ দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে মৌমাছির বিভিন্ন প্রজাতি আজ বিপন্নপ্রায়। তাই প্রকৃতির সুরক্ষায় সবাইকে সচেষ্ট থাকতে হবে।

কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, রূপকল্প ২০২১ অর্জন সম্ভব হয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে। আমরা চাই ভিশন ২০৪১ অর্জন করে উন্নত রাষ্ট্রের তালিকায় বাংলাদেশকে স্থান করে নিতে। উন্নত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় কোন খাতকেই পাশ কাটানোর সুযোগ নেই ,সব সেক্টরকেই গুরুত্ব দিয়ে এর উন্নয়ন করতে হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সমগ্র জাতিকে একতাবদ্ধ করেছিলেন বলেই আমরা তার নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। আবার একাত্ব হয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে উন্নত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য সবাইকে আহ্বান জানান কৃষিমন্ত্রী।

উল্লেখ্য; মধু এখন রফতানি পণ্য তালিকায় নাম লিখিয়েছে। ফসলের মাঠে মৌমাছি বিচরণ করলে সেখানে বাড়তি পরাগায়ণের কারণে ফসলের উৎপাদন ১৫২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়বে। মৌ চাষের মাধ্যমে মধু আহরণে সমৃদ্ধি ও শষ্য বা মধু ভিত্তিক কৃষিজ উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। মৌসুমে সরিষা, ধনিয়া, তিল, কালিজিরা, লিচুসহ আবাদ হয় মোট প্রায় ৭ লাখ হেক্টর জমিতে বা বাগানে, এখানের মাত্র ১০ শতাংশ যায়গায় মৌ বাক্স বসিয়ে মধু আহরণ করে। প্রায় ২৫ হাজার মৌ চাষিসহ মধু শিল্পে জড়িত প্রায় ২ লাখ মানুষ। উৎপাদন প্রায় ৬ হাজার টন। ফসলের এই পুরো সেক্টরটিকে মধু আহরণের আওতায় আনতে পারলে ফসলের উৎপাদন দ্বিগুণেরও বেশি হবে। দেশে এখন প্রায় সাড়ে ছয় লাখ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়। পুরো সরিষার মাঠ মধু সংগ্রহের আওতায় আনা গেলে উৎপাদন যেমন বাড়বে তেমনি ভোজ্যতেলের আমদানি নির্ভরতা কমবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মীর নুরুল আলম এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কৃষি মন্ত্রণালয়েল সচিব মো. নাসিরুজ্জামান এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ব বিভাগ -এর প্রোফেসর মো. আহসানুল হক স্বপন।

This post has already been read 2494 times!