Thursday 8th of June 2023
Home / মৎস্য / হৃদরোগের ঝুঁকি কমাবে ইলিশের স্যুপ ও নুডুলস

হৃদরোগের ঝুঁকি কমাবে ইলিশের স্যুপ ও নুডুলস

Published at জানুয়ারি ২৫, ২০১৮

বাকৃবিতে প্রশিক্ষণ কর্মশালায় গবেষকরা

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেম (বাউরেস) আয়োজিত ‘ইলিশের স্যুপ ও নুডুলস তৈরি’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. আলী আকবর।

মো. আরিফুল ইসলাম (বাকৃবি):
ইলিশ অধিক আমিষ ও অধিক চর্বির মাছ। কিন্তু ইলিশের চর্বি মোটেও ক্ষতিকর নয়। চর্বিতে বিদ্যমান ওমেগা-৩ নামক অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমিয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়, শরীরকে সুস্থ ও সতেজ রাখে। ইলিশ সংরক্ষণ এবং ইলিশ থেকে স্যুপ ও নুডলস তৈরির এ প্রযুক্তি বিশ্বে প্রথম। বুধবার (২৪ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন ভবনে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেম (বাউরেস) আয়োজিত ‘ইলিশের স্যুপ ও নুডুলস তৈরি’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় এসব তথ্য তুলে ধরেন গবেষকরা।

বাউরেস পরিচালক প্রফেসর ড, এম.এ.এম.ইয়াহিয়া খন্দকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. আলী আকবর। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. জসিমউদ্দিন খান, মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. গিয়াস উদ্দিন আহম্মদ ও ওয়ার্ল্ড ফিশ-বাংলাদেশ এর গবেষক ড. ভ্যান মার্টিন লুইস।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. আলী আকবর বলেন, উৎপাদিত ইলিশ স্যুপ ও ইলিশ নুডলস সংরক্ষণের মাধ্যমে সারা বছর ইলিশের স্বাদ পাওয়া যাবে। এই ইলিশ স্যুপ ও ইলিশ নুডলস রপ্তানি করা গেলে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব হবে এবং এ দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে।

কর্মশালায় মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ফিশারিজ টেকনোলজি বিভাগের প্রফেসর ও প্রযুক্তির উদ্ভাবক গবেষক ড. এ.কে.এম. নওশাদ আলম। মূলপ্রবন্ধে তিনি জানান, ইলিশ অধিক আমিষ ও অধিক চর্বির মাছ। কিন্তু ইলিশের চর্বি মোটেও ক্ষতিকর নয়। চর্বিতে বিদ্যমান ওমেগা-৩ নামক অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিড রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমিয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়, শরীরকে সুস্থ ও সতেজ রাখে।

তিনি জানান, এক হাজার টাকা দামের একটি ইলিশ থেকে ছোট আকৃতির প্রায় ২০০ কিউব তৈরি করা সম্ভব। প্রতিটি কিউবের বাজারমূল্য ২০ টাকা। একটি কিউব দিয়ে ইলিশের হুবহু স্বাদের এক-দুজনের জন্য স্যুপ তৈরি করা সম্ভব। ইলিশের স্বাদ অপরিবর্তিত রেখে কিউবগুলোকে রেফ্রিজারেটরে এক বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যাবে। তাছাড়া ইলিশ দিয়ে বিশেষ প্রক্রিয়ায় নুডলস তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন তিনি।

বাজারে সচরাচর যে নুডলস পাওয়া যায়, তার থেকে হয়তো কিছুটা দাম বেশি পড়বে। তবে খুবই সাশ্রয়ী দামে বাণিজ্যিকভাবে ইলিশের নুডলসও বাজারজাত করা সম্ভব হবে। শরীরের উপকারী কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ানো এই মাছটি সংরক্ষণ করে খাওয়ার একটি উপায় বের করতে পারলে পুষ্টিগুণের অনেক চাহিদা পূরণ হবে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।

উল্লেখ্য, ইকোফিশ প্রকল্পের সহায়তায় ভারগো ফিশ এ্যান্ড এগ্রো প্রসেস লিমিটেড শিগগিরই দেশব্যাপী এগুলো বাজারজাত করবে। ইলিশ মাছকে প্রক্রিয়াজাত করে এর মূল্যমান বৃদ্ধি করতে প্রায় দুই বছর ধরে গবেষণা করেছেন মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের মৎস্য প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. নওশাদ আলম। পরে টেকনিক্যাল সেশনে বিষয়ের উপর শিক্ষকগণ, গবেষক ও আমন্ত্রিত অতিথিগণ অংশগ্রহণ করেন।

This post has already been read 1591 times!