Thursday 25th of April 2024
Home / অন্যান্য / খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়নে মন্থরগতি

খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়নে মন্থরগতি

Published at সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৭

ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা):
সরকার প্রধানের প্রতিশ্রুত খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প বাস্তবায়নে জাতীয় সংসদে বিল পাসের দু’বছর দুই মাস অতিবাহিত হলেও এখনো পর্যন্ত নিয়োগ হয়নি প্রকল্প পরিচালক। অনেকটা মন্থরগতিতে চলছে এ প্রকল্পের কাজ। তবে প্রকল্পের ডিপিপি (ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রোপোজাল) প্রস্তুতের প্রক্রিয়া চলছে। সে অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন নগরীর আড়ংঘাটা মৌজার ৬২ একর জমির হালনাগাদ প্রক্কলন ব্যায় প্রস্তুত করে প্রেরণ করেছে খুলনা জেলা প্রশাসন। মঞ্জুরী কমিশন থেকে ডিপিপি প্রস্তুতে কাজ চলছে। ডিপিপি প্রস্তুত হলে এটি মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হবে।

Khulna-agricaltural-universityবাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগ) আব্দুর রেজ্জাক এগ্রিনিউজ২৪.কম কে জানান, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে ডিপিপি প্রণয়ন করতে বলা হয়েছে। সে অনুযায়ী প্রকল্পের জমির মূল্য নির্ধারণ, জমি উন্নয়ন, একাডেমিক ভবন, রাস্তাসহ বিভিন্ন অবকাঠামোর জন্য ডিপিপি প্রণয়নের কাজ করা হচ্ছে। বাংলায় ডিপিপি প্রস্তুত করে মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

খুলনা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, নগরীর দৌলতপুরস্থ কৃষি সম্প্রসারণ প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট সংলগ্ন ৬২ একর জায়গার ওপর এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে। এটি হবে দেশের পঞ্চম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।

গত ১৯ জানুয়ারি খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে জমির হালনাগাদ ব্যয় প্রাক্কলন প্রস্তুত করে প্রেরণের জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের একটি চিঠি আসে। সেই চিঠি পেয়ে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি আড়ংঘাটা মৌজার ৬২ একর জমির প্রাক্কলন ব্যয় নিরূপন করে মঞ্জুরী কমিশনের পাঠানো হয়। এ জমির অধিগ্রহণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩১ কোটি ২৪ লাখ ৯১ হাজার ৯৫৬ দশমিক ২৫ টাকা। এর আগে ২০১১ সালের ৯ নভেম্বর জমির ম্যাপ, দাগ-খতিয়ানসহ অন্যান্য তথ্য উপাত্ত চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) উপ-পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) নূও মোহাম্মদ মোল্লা খুলনার জেলা প্রশাসককে চিঠি দেন। চিঠি পেয়ে ওই বছরের ২৭ নভেম্বও জেলা প্রশাসকের দপ্তর থেকে আড়ংঘাটা মৌজার ৬২ একর জমির ম্যাপ, দাগ-খতিয়ানসহ অন্যান্য তথ্য প্রেরণ করা হয়। তখন এ প্রকল্পে ৬২ একর জমি অধিগ্রহণ ব্যয় ধরা হয় ৪০ কোটি টাকা।

সূত্রমতে, ২০১১ সালের ৫ মার্চ খুলনার খালিশপুরে এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুলনায় একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দেন। এরপর নগরীর দৌলতপুরের কৃৃষি সম্প্রসারণ প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের অব্যবহৃত ৫০ একর জমি এবং পাশের ব্যক্তি মালিকানাধীন ১২ একর জমি নিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার প্রাথমিক পরিকল্পনা করা হয়। এর আগে মন্ত্রিসভা খুলনা কৃৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের খসড়া অনুমোদন করলে তা পাসের জন্য সংসদে পাঠানো হয়। কৃষি ক্ষেত্রে অগ্রসরমান বিশ্বের সাথে সঙ্গতি রক্ষা, সমতা অর্জন ও জাতীয় পর্যায়ে কৃষি বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি করতে সুনির্দিষ্ট বিধানসহ খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের বিধান রেখে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বিলটি পাসের প্রস্তাব সংসদে উত্থাপন করেন। ২০১৫ সনের ৫ জুলাই সংসদের অধিবেশনে ‘খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বিল-২০১৫’ পাসের জন্য তুললে কণ্ঠভোটে তা অনুমোদন পায়। এর আগে ৯ মার্চ শিক্ষামন্ত্রী বিলটি সংসদে উত্থাপনের পর সেটি যাচাইয়ের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়েছিল।

বিলে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন, ভাইস চ্যান্সেলর, ট্রেজারার, সিন্ডিকেট ও কাউন্সিল সদস্য নিয়োগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষমতা, শিক্ষাদান, মঞ্জুরী কমিশনের দায়িত্ব, ভাইস-চ্যান্সেলর, প্রো ভাইস-চ্যান্সেলরসহ কর্মকর্তা নিয়োগ এবং ক্ষমতা ও দায়িত্বসহ সংশি¬ষ্ট বিষয়ে সুনির্দিষ্ট বিধান করা হয়। বিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট, একাডেমিক কাউন্সিল, অনুষদ, বিভাগ, অর্থ কমিটি, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কমিটি, বাঁছাই কমিটি, পাঠক্রম কমিটি, ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটি ও সংবিধান অনুযায়ী অন্যান্য কর্তৃপক্ষ গঠনের বিধান করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য (চ্যান্সেলর) কৃষি বিজ্ঞান ও গবেষণায় সম্পৃক্ত কোনো কৃষিবিদকে চার বছরের জন্য এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেবেন। একজন দুই মেয়াদেও বেশি ওই পদে থাকতে পারবেন না।

বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে শিক্ষার্থীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আওতায় ছয় মাসের ইন্টার্নশিপের সুযোগ পাবেন। বিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলরের নেতৃত্বে ২৪ সদস্যের সিন্ডিকেট গঠনের সভা, ক্ষমতা ও দায়িত্ব, বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল ট্রাস্টি বোর্ডসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সুনির্দিষ্ট বিধান করা হয়।

This post has already been read 5091 times!