Thursday 28th of March 2024
Home / ফসল / আমের জোড় কলম করবেন যেভাবে

আমের জোড় কলম করবেন যেভাবে

Published at সেপ্টেম্বর ৮, ২০১৭

hqdefaultকৃষিবিদ এমএ মজিদ : প্রাচীনকাল থেকেই বাংলাদেশে বীজ থেকে আমের বংশ বিস্তার হয়ে আসছে। এ পদ্বতিতে বংশ বিস্তারের সুবিধা হলো খরচ কম, দক্ষতার প্রয়োজন হয় না এবং গাছগুলো বড় ও সুদৃঢ় হয়। কিন্তু বীজ থেকে উপাদন করা গাছ পুরোপুরি বংশ বৈশিষ্ট্য বজায় থাকে না। অর্থাৎ একটি ভালো আমের বীজ থেকে আর একটি আমের গাছ হলে তা সেটি থেকে খারাপ বা অধিক ভালো হতে পারে। এক্ষেত্রে একটি গাছ থেকে কলম করলে তার সম্পূর্ণ গুণাবলি বজায় থাকে। বিভিন্ন পদ্বতিতে আম গাছের কলম করা হয়। যে চারাটিতে কলম করা হয় তাকে বলে “রুট স্টক বা মূলাধার”। আর যে ভালো জাতের গাছের ডাল জোড়া দেওয়া হয় তাকে বলে সায়ন বা মূল ডাল। কলম করার এক বছর আগে আটি মাটিতে পুঁতে চারা তৈরি করা হয়। চারা গাছটি এক বছরের মধ্যে প্রায় ৪৫ সেমি., লম্বা ও ১ সেমি. ব্যাস হবে; তখনই চারাটি কলম করার উপুক্ত হবে। আমের জোড় কলম কিভাবে করতে হয় সেটি সম্পর্কে আজকে আমরা জানবো-

জোড় কলম
এই পদ্বতিতে একটি আমের আঁটির চারার সাথে উন্নত জাতের গাছের ডালের সংযুক্ত করে একটি নতুন চারা গাছ তৈরি করা হয়। বাংলাদেশে এ পদ্বতিতে সবচেয়ে বেশি কলমের চারা তৈরি করা হয়। সাধারণত এ কলম করা হয়। এর ফলে বাড়তি পানি পানি দিতে হবে না। কলম করার ২-৩ সপ্তাহ আগে এক বছর বয়সের একটি আমের চারা টবের মধ্যে ভালোভাবে লাগাতে হবে। তারপর নির্বাচিত আম গাছের এক বছর আগে বের হয়েছে এবং প্রায় চারা গাছের মতোই মোটা এমন একটি শাখার সাথে সংযুক্ত করতে হবে। নির্বাচিত শাখা ও চারার যে অংশে সংযুক্ত করতে হবে সে অংশের ব্যাসের প্রায় এক তৃতীয়াংশ সমমানের গভীর করে ও ৫ সেমি. লম্বা  করে কাঠসহ বাকল তুলে ফেলতে হবে। এরপর চারা গাছটিকে উপযুক্ত স্থানে রেখে কাটা অংশের সাথে নির্বাচিত গাছের কাটা অংশের জোড়া লাগিয়ে দিয়ে সুতলি বা দড়ি দিয়ে এমনভাবে বেঁধে দিতে হবে যেন কোন ফাঁক না থাকে। বৃষ্টি না হলে যতদিন জোড়া না লাগে তত দিন চারা গাছের গোড়ায় পানি দিতে হবে। এ অবস্থায় জোড়া লাগতে ৪৫-৬০ দিন সময় লাগে। কলমের জোড়া সম্পূর্ণ হলে নির্বাচিত ডালের নিচের অংশ এবং চারা গাছের উপরের অংশ কেটে দিতে হয়। তবে এ কাজটি ২-৩ বারে করা ভালো। এভাবে তৈরি করা কলম ছায়াতে রেখে পরিচর্যা করে নার্সারিতে রেখে দিতে হবে অথবা জমিতে লাগাতে হবে।

লেখক : পি-এইচ.ডি গবেষক, রাবি এবং প্রভাষক, কৃষি শিক্ষা বিভাগ, নাটোর সিটি কলেজ, নাটোর।

This post has already been read 6522 times!