সিকৃবি সংবাদদাতা: “পানি নাগবে পানি” একটি স্লোগান নয়, ছিল ছাত্রসমাজের আত্মদর্শনের প্রতীক। এটি ছিল এক শপথ। ন্যায্য অধিকার আর সম্মানের পক্ষে দাঁড়ানোর এক সাহসী উচ্চারণ।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয় দিবস উদযাপন কমিটির মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে ‘মুগ্ধ কর্নার’ উদ্বোধন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পাশে স্থাপিত মুগ্ধ কর্নার (পানির পাম্প) থেকে আর্সেনিক ও আয়রনমুক্ত বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
শনিবার (১২ জুলাই) দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে কর্নারটির উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. আলিমুল ইসলাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভিসি প্রফেসর ড. মো. আলিমুল ইসলাম বলেন, “শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ ছিলেন সময়ের এক প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর। তাঁর আত্মত্যাগ ছিল কেবল একটি রাজনৈতিক ঘটনার অংশ নয়, বরং দেশের তরুণ সমাজের সাহসিকতার প্রতীক। বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে তাঁর স্মরণে নির্মিত এই কর্নার কেবল বিশুদ্ধ পানির একটি উৎস নয়, এটি হবে আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য নৈতিকতা, গণতন্ত্র ও মানবিক চেতনার এক প্রেরণাস্থল।” এই কর্ণার শুধু মুগ্ধর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো নয়, এটি আমাদের সবার জন্য একটি বার্তা বহন করে-মানবিকতা, মূল্যবোধ এবং ন্যায়ের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেওয়ার। আমরা আশা করি, ভবিষ্যতের শিক্ষার্থীরা এখান থেকে অনুপ্রেরণা গ্রহণ করবে এবং নিজেদের মধ্যে নৈতিকতা, দায়িত্ববোধ ও সাহসিকতা গড়ে তুলবে।
ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সামিউল আহসান তালুকদারের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. এ.টি.এম. মাহবুব-ই-ইলাহী। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিতি ছিলেন।
উল্লেখ্য, শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ ছিলেন ২০২৪ সালে বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় নিহত অন্যতম সাহসী তরুণ। ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে ২০০০ জন প্রাণ দিয়েছেন এবং ১৪০০ এর বেশি মানুষ আহত হন। মুগ্ধর মৃত্যু এই আন্দোলনের অন্যতম তাৎপর্যপূর্ণ ও আলোচিত ঘটনা। ২০২৪ সালের ১৮ জুলাই ফ্যাসিস্ট বিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তাঁর বন্ধু জাকিরুল ইসলাম তাঁকে রাজধানীর ক্রিসেন্ট হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।