নিজস্ব প্রতিবেদক : আধুনিক বিজ্ঞান ও তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে ভূমি সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে সন্তুষ্টির মাত্রা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সন্তোষজনক ভূমি সেবার জন্য ডিজিটাল ট্রান্সফর্মেশন অপরিহার্য। ভূমিসেবা নিশ্চিতে কর্মকর্তাদের সার্ভে-ও-সেটেলমেন্ট-প্রশিক্ষণের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে এবং তা প্রারম্ভিক পর্যায় সম্পন্ন করতে হবে। ভূমিসেবায় অনলাইন সংস্করণ যুক্ত হওয়ার ফলে দৈনিক গড়ে ১০-১২ কোটি টাকা রাজস্ব সরকারি কোষাগারে জমা হচ্ছে। সুষ্ঠ জরিপ কার্য সম্পাদনের মাধ্যমে ভূমিসেবায় নতুন মাত্রা যুক্ত হবে আর এ জন্য প্রশিক্ষণের ওপর গুরত্বারোপ করেন ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার।
আজ রবিবার (২৫ এপ্রিল) রাজধানীর ভূমি ভবনের সেমিনারকক্ষে ভূমি মেলা,২০২৫ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদ। ভিডিও বার্তার মাধ্যমে মেলার উদ্বোধন ঘোষণা করেন মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড.মোহাম্মদ ইউনুস।
ভূমি উপদেষ্টা বলেন, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক প্রযুক্তিগত অগ্রগতি, সংস্কার ও অর্জন বিভিন্ন শ্রেণির নাগরিকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। নামজারি, ভূমি উন্নয়ন কর ও খতিয়ান সেবা শতভাগ অনলাইন করাসহ এ সংক্রান্ত যাবতীয় পেমেন্ট ক্যাশলেস করা হয়েছে। বিদ্যমান প্রযুক্তিনির্ভর অটোমেটেড ভূমিসেবাসমূহ সেবাগ্রহীতাদের নিকট জনপ্রিয় করাসহ ভূমি উন্নয়ন কর আদায় তথা রাজস্ব ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। তিন দিনের এই মেলায় ১৯ স্টলে ভূমি সংক্রান্ত সকল সেবা প্রদান করা হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, গত ১৫ বছর বলা হয়েছে ডিজিটাল বাংলাদেশ অথচ সেটা ডিজিটাল বাংলাদেশ না হয়ে হয়েছে কিছু ডিজিটাল আইল্যান্ড। আইল্যান্ড গুলোর মধ্যে ইন্টার কানেক্টিভিটি তৈরি করা হয়েছে। বাংলাদেশের সেবা সমূহ ট্রান্সফরমেশনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ভূমি মন্ত্রণালয় ডিজিটাল ট্রান্সফর্মেশনে বেশ এগিয়ে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের বিচ্ছিন্ন ডিজিটাল সার্ভিস এখন একটি জায়গায় পাওয়া যাবে; এর মাধ্যমে ডিজিটাল ট্রান্সফর্মেশন গতি পাবে । এ ট্রান্সফরমেশনকে দুই ভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। একটি হলো মন্ত্রণালয় বা বিভাগ গুলোর ট্রান্সফরমেশন দ্বিতীয়টি হচ্ছে নাগরিক সেবা নামে একটি প্লাটফর্ম । এই নাগরিক সেবা নামটি প্রধান উপদেষ্টা নির্ধারণ করেছেন।
ভূমি জরিপ কাজ জিপিএস ও জিও ফেন্সিংয়ে হয়ে যাবে এবং জমির মালিক চাইলেই জরিপ কার্য গুগল অর্থে দেখতে পারবে। পরবর্তী স্টেজে এই জরিপের সাথে ভূমির মালিকানার ম্যাপিং, কোন মামলা আছে কিনা থাকলে মামলার বর্তমান অবস্থা ও রাজস্ব আদায়ের তথ্য সংযুক্ত থাকবে। অর্থাৎ একটা সিঙ্গেল গেটওয়েতে বসে ভূমির ডিজিটাল ম্যাপের সাথে তার মালিকানাসহ বর্তমান অবস্থা দেখা যাবে। আর এই কাজটি করতে পারলে সেটিই হবে প্রকৃত ডিজিটালাইজেশন;বলেন ফয়েজ আহমদ।
সভায় উপস্থিত ছিলেন তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, এনডিসি; ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান (সচিব) এজেএম সালাউদ্দিন নাগরী;ভূমি আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান(সচিব) মুহম্মদ ইবরাহিম; আলোচনার শুরুতে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব(উন্নয়ন অনুবিভাগ) মো: এমদাদুল হক চৌধুরী ভূমি মন্ত্রণালয়ের সার্বিক কার্যক্রমের ওপর উপস্থাপনা করেন। আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের ভাইস-চেয়ারম্যান মোঃ আবু বকর ছিদ্দিক,ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক।
আলোচনা শেষে প্রধান অতিথি,বিশেষ অতিথি ও অন্যান্য অতিথিবৃন্দ ভূমি জাদুঘর এবং শেষে মেলার স্টল পরিদর্শন করেন।