মো. এমদাদুল হক (রাজশাহী): কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রবি মৌসুমে কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় বোরো ধানের সমলয় চাষাবাদ প্রদর্শনীর ফসল কর্তন ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ রবিবার (৪ মে) সকাল ১১টায় রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার সরমংলা গ্রামের ফসলের মাঠে এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়। আয়োজক ছিল গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী জেলার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার। তিনি কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে প্রদর্শনী প্লটের ধান কর্তনের উদ্বোধন করেন এবং কৃষকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে অংশ নেন।
প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, “আমরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সকলে কৃষির সঙ্গে জড়িত। কৃষি ছাড়া আমরা বাঁচতে পারব না। কৃষির উৎপাদন অব্যাহত রাখতে সরকার সার, বীজ, কৃষি যন্ত্রপাতিসহ নানাবিধ খাতে সহায়তা প্রদান করছে, যাতে কৃষকরা উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পারেন এবং কৃষি শ্রমিক সংকটে যেন উৎপাদন ব্যাহত না হয়।”
তিনি আরও বলেন, “রাসায়নিক সার ব্যবহারে আমাদের আরও সচেতন হতে হবে এবং অপচয় কোনোভাবেই করা যাবে না। আগামী মৌসুমে যন্ত্র ও প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষকের উৎপাদন খরচ কমানোর প্রতি উপস্থিত সবাইকে আহ্বান জানাই।”
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মরিয়ম আহমেদ। তিনি জানান, এ উপজেলায় সমলয় চাষ পদ্ধতির আওতায় ৫০ জন চাষি এ কর্মসূচির সুবিধাভোগী হয়েছেন। প্রতিজন চাষিকে একরপ্রতি ইউরিয়া ৯০ কেজি, ডিএপি ৪০ কেজি এবং এমওপি ৫০ কেজি প্রদান করা হয়েছে। চলতি বোরো মৌসুমে ৫০ একর জমিতে ট্রেতে বপণকৃত বীজ থেকে চারা তৈরি করে রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টারের মাধ্যমে রোপণ করা হয়। ৪ মাস ৯ দিন পর এসব ধান কর্তন করা হলো।
অনুষ্ঠানে আলোচকরা জানান, কম্বাইন হারভেস্টার যন্ত্রের মাধ্যমে একসঙ্গে ধান কাটা ও মাড়াই করা যায়, ফলে সময় ও শ্রম কম লাগে এবং খরচ কমে যায়। কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণ ও সমলয় পদ্ধতি সারাদেশে ছড়িয়ে পড়লে কৃষি উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে এবং ধান কর্তনের সময় যে শ্রমিক সংকট দেখা দেয়, তা থেকে মুক্তি মিলবে। এতে কৃষকরা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফয়সাল আহমেদ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক উম্মে ছালমা, জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মো. আমিরুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএআরআই), বরেন্দ্র কেন্দ্রের সরেজমিন গবেষণা বিভাগের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. সাখাওয়াত হোসেন।
অনুষ্ঠানে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক এবং সমলয় চাষাবাদ প্রদর্শনীভুক্ত কৃষক-কৃষানিসহ প্রায় ৩০০ জন উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, প্রদর্শনী প্লটে বোরো (উফশী) জাতের ব্রিধান-৮৮ ধান চাষ করা হয়। মাঠ দিবসে ধান কর্তনের সময় দেখা যায়, প্রতি বিঘায় (৩৩ শতাংশ) গড়ে ২৭.৫ মণ ফলন পাওয়া গেছে।