মঙ্গলবার , ডিসেম্বর ৩ ২০২৪

প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে সিকৃবি শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের কর্মবিরতি

সিকৃবি সংবাদদাতা: অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, প্রতিশ্রুত সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তনের দাবিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের আহবানে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (০৪ জুন) সকাল ০৯টা থেকে দুপুর ০১টা পর্যন্ত এই কর্মবিরতি পালন করা হয়। কৃষি অর্থনীতি ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের সামনে অনুষ্ঠিত কর্মবিরতি পালন অনুষ্ঠানে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডা. মুহাম্মদ আল মামুনের সঞ্চালনায় এবং সভাপতি প্রফেসর ড.  মোহাম্মদ ছফি উল্লাহ ভূইয়ার সভাপতিত্বে শিক্ষক নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। এদিকে সর্বজনীন পেনশন স্কীম বিধিমালার প্রজ্ঞাপন হতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের অন্তর্ভুক্তি অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবিতে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার পরিষদের উদ্যোগে মানববন্ধন ও মৌন মিছিল করা হয়েছে। অফিসার পরিষদের সাধারন সম্পাদক ডাঃ আফরাদুল ইসলামের সঞ্চালনায় এবং সভাপতি মোহাম্মদ ছায়াদ মিয়ার সভাপতিত্বে মানববন্ধন কর্মসূচিতে অফিসার নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

এ সময় বক্তারা বলেন আগামী ১ জুলাই থেকে যোগদানকৃতদের সর্বজনিন পেনশন ব্যবস্থাপনার আওতাভূক্ত করার যে ঘোষণা দেয়া হয়েছে তা বৈষম্যমূলক। এ ধরনের বৈষম্য বাংলাদেশের সংবিধানের মুল চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক। প্রত্যয় স্কিমটি নামে সর্বজনিন হলেও আসলে সর্বজনিন নয়। সরকারের ৩টি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান সামরিক ও বেসামরিক আমলাতন্ত্র ও বিচার বিভাগকে এই প্রক্রিয়ার বাহিরে রেখে একে সর্বজনিন বলার সুযোগ নেই। বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য যে প্রত্যয় স্কিম আরোপ করা হয়েছে তা তাদের পারিবারিক সুরক্ষা নষ্ঠ করবে। এ প্রত্যয় স্কিমের ফলে মেধাবীরা আর শিক্ষকতা পেশায় আসতে আগ্রহী হবে না।

শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. ছফি উল্লাহ ভূইয়া বলেন, প্রত্যয় স্কিম হল জাতিকে মেধা শুন্য করার একটা গভীর ষড়যন্ত্র। মেধা শুন্য জাতিকে দিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়া যাবে না। জাতিকে সুপরিকল্পিতভাবে মেধা শুন্য করার পায়তারা চলছে । প্রত্যয় স্কিম বাস্তবায়িত হলে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাবে এবং বাংলাদেশে টেকসই উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ হবে। জাতির পিতা বাংলাদেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে স্বায়ত্বশাসন দিয়েছিলেন এই কারণে যে তিনি অনুধাবন করতে পেরেছিলেন শিক্ষা গবেষণা ও সম্প্রসারণের মাধ্যমে সোনার বাংলা নির্মাণ করা সম্ভব হবে।

অফিসার পরিষদের সভাপতি মোহাম্মদ ছায়াদ মিয়া বলেন প্রত্যয় স্কীমটি হল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে একটি ষড়যন্ত্র। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী যখন সর্বজনীন পেনশন ঘোষনা করেন তখনই প্রত্যয় স্কীম ছিল না। গত ১৩ মার্চ ২০২৪ অর্থমন্ত্রনালয় কর্তৃক জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সহ কর্মকর্তা, কর্মচারীদের বর্তমান পেনশন ব্যবস্থা থেকে বের করে সর্বজনীন পেনশন স্কীমের অর্ন্তভুক্ত করা হয় ফলে ১ জুলাই থেকে এসব প্রতিষ্ঠানে যারা যোগদান করবেন তারা বাধ্যতামূলক ভাবে প্রত্যয় পেনশন স্কীমের আওতাভুক্ত হবেন। যার ফলশ্রুতিতে আগামী ১ জুলাই এবং তৎপরবর্তীতে  নিয়োগপ্রাপ্ত সকলেই আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। কর্মবিরতি ও মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যমান পেনশন ব্যবস্থা বহাল রাখার দাবী জানান।  এছাড়া দাবী না মানা হলে জুলাই মাসের ১ তারিখ থেকে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হবে বলে হুশিয়ারি প্রদান করেন।

This post has already been read 12756 times!

Check Also

বাকৃবিতে সিকৃবি ভিসি ড. আলিমুল ইসলামের সংবর্ধনা

বাকৃবি সংবাদদাতা: সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) ভিসি হিসেবে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মাইক্রোবায়োলজিস্ট ও ভাইরোলজিস্ট প্রফেসর ড.মো. …