শুক্রবার , জুলাই ২৬ ২০২৪

গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে রাজশাহীতে বিপ্লব!

মো. আমিনুল ইসলাম (রাজশাহী) : গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সারাদেশে বিনামূল্যে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বীজ, রাসায়নিক সার সহ আর্থিক প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়াতেই রাজশাহীতে চাষ হচ্ছে গ্রীষ্মকালীন এইপেঁয়াজ। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রাজশাহীর কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় এন-৫৩ জাতের পেঁয়াজ চাষে এই সফলতা এসেছে।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর উপপরিচালক মো. মোজদার হোসেন বলেন, গত ২০২২-২৩ অর্থ বছরে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ১ম ও ২য় পর্যায়ে রাজশাহী জেলায় মোট ৪ হাজার জন কৃষককে ১ কেজি করে মোট চার হাজার কেজি এন-৫৩ জাতের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের বীজ প্রদান করা হয়েছিল। এ বছরে তা বাড়িয়ে রাজশাহী জেলায় মোট ৮৫০০ হাজার জন কৃষককে ১ কেজি করে মোট ৮৫০০ কেজি এন-৫৩ জাতের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের বীজ প্রদান করা হয়েছে। যা দিয়ে মোট ১২-১৪ হাজার বিঘা জমিতে এই পেঁয়াজ চাষ করা সম্ভব।

তিনি আরো বলেন গেল বছরের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষের উপজেলা ভিত্তিক আবাদ, উৎপাদন ও অভিজ্ঞতা এবং প্রযুক্তি জ্ঞান কাজে লাগানোর বিষয়গুলোকে পর্যালোচনা করে এ প্রণোদনার প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে। এন-৫৩ জাতের এই পেঁয়াজ ৬ থেকে ৭ টিতেই ১ কেজি হয়, সে হিসেবে বিঘা প্রতি ১৫০ থেকে ২০০ মন ফলন পাওয়া যাচ্ছে। এ থেকে প্রায় ৩৬০ কোটি টাকার পেঁয়াজ বিক্রয় সম্ভব হবে। গাছসহ এই পেঁয়াজ বিক্রয় করতে পেরে চাষীরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন এবং তাদের দেখে অন্যান্য কৃষকেরা এই জাতের পেঁয়াজ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে বাজারে যখন শীতকালীন পেঁয়াজের সরবরাহ কম থাকে, তখন এন-৫৩ জাতের এই পেঁয়াজ মানুষের চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে ।

পবা উপজেলার নওহাটা পৌরসভার নামোপাড়া গ্রামের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষী শফিকুল ইসলাম বলেন  তার ৩ বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ আবাদ করেছেন। ইতিমধ্যে তিনি প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৬০ টাকা এবং প্রতি কেজি পেঁয়াজের পাতা ২০ টাকা দরে বিক্রি শুরু করেছেন। এতে অনেক আনন্দিত কৃষক শফিকুল ইসলাম।

বাগমারা উপজেলার মাড়িয়া ইউনিয়নের কাঁঠালবাড়িয়া গ্রামের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষী মামরুল ইসলাম বলেন  তার ২ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করেছেন। এতে  অনেক লাভবান হবো বলে আশা করছি। তিনি বলেন এক বিঘায় ৩০০০০-৩৫০০০ টাকা খরচ করে লাখ টাকা আয় সম্ভব।

অন্যান্য গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষিরা বলছেন, অল্প খরচে ভালো ফলন পাওয়া যাচ্ছে। কৃষি বিভাগ এখনও পেঁয়াজ চাষের বিশেষ প্রণোদনা দিচ্ছে। দ্রুত ফলন দেওয়ায় আমরা এখন এই পেঁয়াজ চাষে অনেক উপকৃত হচ্ছি। আগামীতেও এই পেঁয়াজ আবাদ অব্যাহত থাকবে।

রাজশাহী জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার বলেন, জুলাই-আগস্ট মাসে বীজ বপণ করে ২৫-৩০ দিন বয়সের চারা রোপণ করতে হয়। ৯০ দিনের মধ্যে এই জাতের পেঁয়াজ সংগ্রহ করা সম্ভব। এই পেঁয়াজ চাষে কৃষকেরা যেমন লাভবান হবেন, তেমনি আমদানি নির্ভরতা কমবে এবং মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে।

This post has already been read 975 times!

Check Also

গোদাগাড়ীতে ৩ দিন ব্যাপী কৃষি প্রযুক্তি মেলার উদ্বোধন

মো. এমদাদুল হক (রাজশাহী) : রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন …