Saturday 27th of April 2024
Home / খাদ্য-পুষ্টি-স্বাস্থ্য / এন্টিমাইক্রোবায়াল রেজিস্ট্যান্স প্রতিরোধে সচেতনতা ও সততা প্রয়োজন

এন্টিমাইক্রোবায়াল রেজিস্ট্যান্স প্রতিরোধে সচেতনতা ও সততা প্রয়োজন

Published at নভেম্বর ২৪, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক: আমরা সবাই মিলে এন্টিমাইক্রোবায়াল রেজিস্ট্যান্স প্রতিরোধ করবো। আর এই প্রতিরোধের জন্য নীতি নির্ধারক থেকে শুরু করে সরকারি-বেসরকারি ডাক্তার, কেমিস্ট, ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, রোগী প্রত্যেকের সম্মিলতভাবে কাজ করতে হবে। আবার আমাদের অনেকেই সামান্য অসুখ হলেই প্রেসক্রাইব ছাড়াই এন্টিবায়োটিক গ্রহণ করেন। এন্টিমাইক্রোবায়াল রেজিস্ট্যন্স এর জন্য মানুষের অসচেতনতার পাশাপাশি, কিছু ডাক্তার ও স্টেকহোল্ডারের অসততাও দায়ী। তারমানে, আমাদের শুধু সচেতন হলেই চলবে না, সততাও থাকতে হবে; আর এজন্য আমাদের মনোজগতের পরিবর্তন করতে হবে। এই বোধ এবং এন্টিমাইক্রোবায়াল সচেতনতা সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) “বিশ্ব এন্টিমাইক্রোবায়াল রেজিস্ট্যন্স সপ্তাহ ২০২৩” উপলক্ষ্যে আয়োজিত “Antimicrobial Resistance: Spreading Awareness Together” শীর্ষক সেমিনারে উপস্থিত বক্তাগণ এসব কথা বলেন। রাজধানীর বনানীস্থ একটি হোটেলে দেশের প্রাণিজ সেক্টরের স্বনামধন্য কনসালটেন্সি প্রতিষ্ঠান এগ্রো সলিউশন উক্ত অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে এগ্রো সলিউশন কর্মকর্তাগণ ছাড়াও দেশের প্রাণিজ খাত সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

বক্তারাগণ বলেন, এন্টিমাইক্রোবায়াল রেজিস্ট্যান্স কেন ও কীভাবে হচ্ছে-ে এগুলো আমাদের জানা দরকার।। আমরা যারা এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করি তাদের পরিপূর্ণভাবে নিয়মকানুন মেনে চলতে হবে; সঠিক এন্টিবায়োটিক ব্যবহারের পাশাপাশি এর ডোজ পরিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে হবে। কারণ, যে ব্যাকটেরিয়াকে টার্গেট করে আমরা এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করি সেটিকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করতে হবে। টার্গেটকৃত ব্যাকটেরিয়াকে পরিপূর্ণভাবে ধ্বংস করতে না পারলে, একটি সময় সেটি রেজিস্ট্যান্স তৈরি হয়। সুতরাং এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার ও বিক্রি সম্পর্কে আমাদের সচেতনতার বিকল্প নেই।

অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাপী এন্টিমাইক্রোবায়াল রেজিস্ট্যান্সের হার, ব্যাকটেরিয়া কীভাবে ছড়ায়, কীভাবে রেজিস্ট্যান্স হয়, করণীয় কি প্রভৃতি বিষয় প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে উপস্থাপন করেন এগ্রো সলিউশন এর নিউট্রিশনিস্ট (পোলট্রি অ্যান্ড লাইভস্টক) ডা. কাকলী মোহন্ত (কেয়া)।

ডা. কাকলী মোহন্ত কেয়া বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি এন্টিমাইক্রোবায়াল রেজিস্ট্যন্স হচ্ছে। তিনি জানান, দেশে ই-কলাই ব্যাকটেরিয়া ইতিমধ্যে ৯৭ শতাংশ রেজিস্ট্যান্স তৈরি করেছে। বিভিন্ন কারণে অন্যান্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া মানুষ ও প্রাণির শরীরে রেজিস্ট্যান্স তৈরি করে ফেলছে।

ডা. কেয়া বলেন, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়ালগুলোর বেশিরভাগই  এন্টিবায়োটিক। মানুষ ও প্রাণির অধিকাংশ রোগের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়া। ব্যাকটেরিয়ার সূচকীয় বৃদ্ধি আছে এবং তাদের জেনারেশন কাল খুবই অল্প। বিশ্বের মধ্যে নরওয়েতে এন্টিমাইক্রোবায়াল রেজিস্ট্যান্স সবচেয়ে কম উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের পৃথিবীর অন্যান্য দেশগুলো কীভাবে এই সমস্যা মোকাবেলা করছে এবং আমাদের কী কী করতে হবে সে ব্যাপারে আমাদের সম্মিলিতভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

অনুষ্ঠানের আগত অতিথিদের ধন্যবাদ জানিয়ে এগ্রো সলিউশন এর প্রধান নির্বাহী অং তুং অ্যা (অন্তু) সমাপনী বক্তব্যে বলেন, মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি পারস্পরিক মতবিনিময়ের মাধ্যমে এগ্রো সলিউশন টীমকে যাতে সমৃদ্ধ করা যায় সে জন্য আমরা আজকের অনুষ্ঠানের উদ্যোগটি নিয়েছি। আশা করি, আজকের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এন্টিমাইক্রোবায়াল রেজিস্ট্যান্স সম্পর্কে আরো বেশি জানতে ও শিখতে পেরেছি।

সমগ্র অনুষ্ঠানটিতে সঞ্চালকের ভূমিকাল পালন করেন এগ্রো সলিউশন এর টেকনিক্যাল সার্ভিস কনসালট্যান্ট (পোলট্রি অ্যান্ড লাইভস্টক) ডা. খন্দকার রেজাউল করিম।

This post has already been read 682 times!