Saturday 27th of April 2024
Home / মৎস্য / চাহিদার তুলনায় বেশি মাছ উৎপাদন হয় খুলনায়

চাহিদার তুলনায় বেশি মাছ উৎপাদন হয় খুলনায়

Published at জুলাই ২৪, ২০২৩

ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা) : খুলনা জেলায় চাহিদার চেয়ে বেশি মাছ উৎপাদন হয়। মাছচাষের ক্ষেত্রে কৃষি ও পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়গুলোও ভাবনায় রাখতে হবে। নদী ও উপকূলীয় এলাকা হতে চিংড়ির পোনা আহরণের সময় অন্য মাছের পোনা যেন ধ্বংস না হয় সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। সরকার ঘোষিত মাছ ধরার নিষিদ্ধ সময়ে সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া যাবে না। সমুদ্রে মৎস্য আহরণে ব্যবহৃত নৌযানগুলোয় আধুনিক যোগাযোগযন্ত্রসহ নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। দেশে মাছের উৎপাদন ও আহরণ বৃদ্ধি পেলে মৎস্যজাতপণ্য বিদেশে রপ্তানির পরিমান বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে মৎস্যআহরণকারী ও চাষিদের সামগ্রিক উন্নয়ন হবে।

আজ (সোমবার) জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২৩ উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত সভায় সভাপতির বক্তব্যে খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন এসব কথা বলেন।

সভায় জানানো হয়, খুলনা জেলায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট উৎপাদিত মাছের পরিমান এক লাখ ২১ হাজার ৭৫০ মেট্রিকটন যা জেলার চাহিদার চেয়ে ৬৪ হাজার ৫৪৫ মেট্রিকটন বেশি। এসময়ে জেলায় ২৫ হাজার ৩৭৫ মেট্রিকটন চিংড়ি মাছ উৎপাদন হয়েছে। খুলনা অঞ্চল থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২৮ হাজার ৩১৬ মেট্রিকটন মৎস্যপণ্য রপ্তানি করে মোট দুই হাজার ৮২৩ কোটি টাকা সমমূল্যের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়েছে। উক্ত সময়ে জেলার বিভিন্ন নদী থেকে দুই হাজার ২৬৮ মেট্রিকটন ইলিশ আহরণ করা হয়েছে। সাগরে ৬৫ দিন মৎস্য আহরণ বন্ধ থাকাকালে জেলার সাতটি উপজেলার ২৩ হাজার ৮০ জন জেলের মাঝে এক হাজার ২৯২.৪৮ মেট্রিকটন ভিজিএফ এর চাল বিতরণ করা হয়েছে। কোভিড-১৯ অতিমারীকালে জেলার নয় হাজার ৮৫৮ জন মৎস্যচাষির মাঝে ১৪ কোটি ২০ লাখ ১৩ হাজার টাকার সরকারি অনুদান বিতরণ করা হয়েছে। সম্প্রতি জেলায় ভেনামী চিংড়ির বাণিজ্যিক চাষে অনুমতি দেয়া হয়েছে যার হেক্টর প্রতি উৎপাদন প্রায় ১০ মেট্রিকটন। সভায় আরও জানানো হয়, দেশের জাতীয় জিডিপিতে মৎস্যখাতের অবদান দুই দশমিক ৪৩ শতাংশ। ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৭৪ হাজার ৪২ মেট্রিকটন মৎস্যপণ্য রপ্তানি করে পাঁচ হাজার ১৯১ কোটি টাকা সমমূল্যের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সক্ষম হয়েছে।

সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পুলক কুমার মন্ডল, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিসারিজ এন্ড মেরিন রিসোর্সেস টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. খন্দকার আনিসুল হক, খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এসএম নজরুল ইসলাম, সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ফারুক আহমেদ, ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক শেখ কামরুল আলম, সিনিয়র সাংবাদিক মল্লিক শুধাংসু, এসএম জাহিদ হোসেনসহ মৎস্যচাষি, সামুদ্রিক মৎস্য আহরণকারী, মৎস্য ব্যবসায়ী, রপ্তানিকারক ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব পাল।

উল্লেখ্য, মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষ্যে আগামীকাল সকাল নয়টায় নগরীর শহিদ হাদিস পার্ক পুকুরে মাছের পোনা অবমুক্তকরণ, সাড়ে নয়টায় হাদিস পার্ক থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় পর্যন্ত বর্ণাঢ্য র‌্যালি এবং পরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা, সফল মৎস্যচাষি, ব্যক্তি, উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠানের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মো. হেলাল মাহমুদ শরীফ।

This post has already been read 1337 times!