Saturday 20th of April 2024
Home / আঞ্চলিক কৃষি / ফল, ফুল, সবজির সবুজ প্রকৃতিতে সেজেছে খুলনা পাউবো

ফল, ফুল, সবজির সবুজ প্রকৃতিতে সেজেছে খুলনা পাউবো

Published at ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৩

ফকির শহিদুল ইসলাম (খুলনা) : বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে নিত্যপণ্যের বাজারে। শাক,সবজি, চাল-ডাল, আটা থেকে শুরু করে মাছ-মাংসের দামও এখন আকাশচুম্বী। এই মন্দা দূর করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবাদযোগ্য পতিত জমিতে চাষ করতে বলেছেন। দেশের সব আবাদি জমিতে চাষ হলে সংকট কেটে যাবে। বেশি করে আবাদ করলে বৈশ্বিক সংকটের মধ্যেও ভোগান্তিতে পড়তে হবে না। তাই দেশের প্রতি ইঞ্চি পতিত জমি চাষের আওতায় নিয়ে আসার মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন । তিনি বলেন, দেশের সব আবাদি জমি যদি চাষের আওতায় আনা যায়, তা হলে দেশে আর কোনো সংকট থাকবে না। খাদ্যের অপচয় নয়, সকলের প্রচেষ্টায় এটা করা সম্ভব যার যেখানে যতটুকু জমি আছে তা চাষের আওতায় এনে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে । প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনায় পাল্টে গেছে খুলনা বিভাগের পানি ভবনের কম্পাউন্ড । এই কম্পাউন্ডের পতিত জমিতে শোভা পাচ্ছে নানা জাতের শাক সবজি ও ফুলের বাগান । শুধু পতিত জমিই নয় এই কম্পাউন্ডের একেকটি ভবনের ছাদে ছাদে বিভিন্ন প্রজাতির সবজি ও ফলের গাছ। আছে নানা জাতের ফুল ও সবজি। খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কম্পাউন্ড এই সবুজ প্রকৃতি সবাইকে মুগ্ধ করে।

খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের চত্বরের পতিত জমিতে চাষ করা হয়েছে বিভিন্ন শাক-সবজির। ফলনও হয়েছে বাম্পার। চারিদিকে যেন সবুজের সমারোহ। পতিত জমির সদ্ব্যবহার ও সবুজ শ্যামল মনোরম পরিবেশ তৈরি করে বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের শাখা কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, চারদিকে ইট পাথরে ঘেরা পানি ভবন চত্বর এখন ফসলের মাঠ। সেখানে শিম, টমেটো, মুলা, বেগুন, ওলকপি, বাঁধা বাঁ কপি, ফুলকপি, লাউ, লালশাক, ডাটাশাক, পুঁইপুঁ শাক, ধনিয়া পাতা, পেপেঁ, পুদিনাসহ নান রকমের সবজির বাগান রয়েছে। সহ নানা জাতের শাকসবজি এখন উৎপাদন হচ্ছে খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কম্পাউন্ডে । এই সবজি বাগানের বিভিন্ন জাতের সবজি পাউবোর সদস্যদের খাবারের চাহিদা অনেকাংশে পূরণ করছে।  পাশাপাশি শাখা কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম গড়ে তুলছেন ছাদ বাগান । আর এই ছাদ বাগান থেকে প্রকৃতিতে সরবরাহ হচ্ছে অক্সিজেন। প্রতিটি ছাদ বাগান হয়ে উঠেছে একেকটি অক্সিজেন চেম্বার। ছাদ বাগানেও  মিটছে পরিবারের পুষ্টির চাহিদা।

খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের শাখা কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম বলেন,প্রথমে ২ শতক জমিতে শুরু করলেও এখন তা দাঁড়িয়েছে ১ বিঘারও অধিক জমিতে। এতে উৎপাদিত ফসল প্রতিদিনের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি জলবায়ুর বিরূপ প্রতিক্রিয়া থেকে একটু হলেও রক্ষা করছে। তিনি বলেন, ছোটবেলা থেকেই শাকসবজিসহ বিভিন্ন গাছ রোপণ করার অভ্যাস রয়েছে, সম্প্রতি প্রতি ইঞ্চি পতিত জমি চাষের আওতায় নিয়ে আসার মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনায় আমি আরো অনুপ্রেয়না পেয়েছি। তাই অফিসের আশপাশের বিভিন্ন জায়গা দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত পড়ে থাকতে দেখে একদিন নিজ উদ্যোগে অফিসের কয়েকজনকে সাথে নিয়ে অফিসের সামনের দিকে খালি জায়গায় প্রথমে বেগুন, লালশাকসহ কয়েক প্রকার সবজি রোপণ করি এবং সফলও হয়। এর পর অফিস সহকারীরা অফিসের আশেপাশে সকল খালি জায়গা চাষাবাদের উপযোগী করে বিভিন্ন ধরণের শাকসবজি চাষ করে আসছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের সরকারি সহযোগিতা ছাড়াই এই চাষাবাদ চলছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডে সেবা নিতে আসা গ্রাহকরা এই সবজি বাগান দেখে উৎসাহিত হয়ে কেউ কেউ আবার বাড়ির আস্তিনা ও বাড়ির ছাদেও বিভিন্ন ধরণের শাকসবজি রোপণ করছেন।  বর্তমানে  পাউবোর  জায়গায় বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন সবজির চাষে হচ্ছে। যার কারণে বদলে গেছে বাহিরের দৃশ্য। চিরচেনা এ সবুজ দৃশ্য পাউবোর পানি ভবনে আসা মানুষের নজর কেড়েছে। এতে অন্যান্ন কর্মকর্তা ও কর্মচারিরি বসতবাড়ির পতিত জমিতে সবজি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

এ বিষয়ে খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আশরাফুল আলম বলেন,মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা যতটুকু জমি আছে তা চাষের আওতায় এনে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হবে । সেই নির্দেশনা বাস্তবায়নে পাউবোর পতিত জমিতে শীতকালীন সবজি চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিষমুক্ত এসব সবজি বাজারের তুলনায় অনেক ভালে। পানি ভবনের কোয়ার্টার ছাড়াও আশেপাশের এলাকায় থাকা পাউবোর কর্মকর্তা কর্মচারিদের মাঝে এসব সবজি বিতরণ করা হয়। তিনি আরও বলেন, দেশের সব সরকারি-বেসরকারি অফিসের প্রচুর পরিমাণে পতিত জমি রয়েছে। এসব জমিতে যদি সবজি চাষ করা যায় তাহলে সবজির উৎপাদন অনেক বাড়বে। যা দেশের সবজির চাহিদা পূরণে কিছুটা হলেও ভূমিকা রাখবে।

This post has already been read 1496 times!