Saturday 27th of April 2024
Home / খাদ্য-পুষ্টি-স্বাস্থ্য / ‘ঢাকা ফুড এজেন্ডা ২০৪১’ বাস্তবায়নে কাজ করছে ঢাকার সিটি কর্পোরেশনগুলো

‘ঢাকা ফুড এজেন্ডা ২০৪১’ বাস্তবায়নে কাজ করছে ঢাকার সিটি কর্পোরেশনগুলো

Published at জুন ৬, ২০২২

সেমিনারে সভাপতির বক্তব্য রাখছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার মো. সেলিম রেজা।

নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘ঢাকা ফুড এজেন্ডা ২০৪১’ বাস্তবায়নে ঢাকার সিটি কর্পোরেশনগুলো কাজ করছে বলে জানিয়েছে জাতি সংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)। এ উপলক্ষ্যে দেশের চারটি শহরে (ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ, নারায়ণগঞ্জ এবং গাজীপুর) এ উপলক্ষে চারটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে; যার প্রথমটি আজকে (সোমবার, ৬ জুন) অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজকের সেমিনারে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল আগামী দুই দশকের জন্য শহরের খাদ্য নিরাপত্তা এবং পুষ্টিকে রূপান্তরিত করার পরিকল্পনা।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) যৌথভাবে সেমিনারটি আয়োজন করে। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের চিফ এক্সেকিউটিভ অফিসার মো. সেলিম রেজা।  অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন  ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জোবায়দুর রহমান।

সেমিনারে জানানো হয়- ঢাকা মহানগর, যা চারটি সিটি কর্পোরেশনকে (ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ, নারায়ণগঞ্জ এবং গাজীপুর) নিয়ে গঠিত – বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম মহানগর হতে চলেছে৷ দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে শহরের নির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষের কাছে সুলভে খাবার যোগান দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। ঢাকার জনসংখ্যার এক-পঞ্চমাংশ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে, যারা নিজেদের জন্য পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবারের ব্যবস্থা করতে পারে না।

“নেদারল্যান্ডস সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা’র ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রকল্পটি শহরের সমস্ত বাসিন্দাদের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যের, উচ্চ মানের খাবার সরবরাহের ব্যবস্থা করতে কাজ করছে। নেদারল্যান্ডসের ওয়াগেনিনজেন ইউনিভার্সিটি অফ রিসার্চ এর প্রযুক্তিগত সহায়তায় প্রকল্পটি সরকার সহ বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সাথে একটি প্রমাণ-ভিত্তিক এবং সহযোগিতামূলক পদ্ধতিতে ঢাকা ফুড এজেন্ডা ২০৪১ তৈরি করতে বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা করছে।  ঢাকা ফুড এজেন্ডা ২০৪১ জাতীয় নীতিতে শহরের খাদ্য ব্যবস্থা পরিকল্পনাকে অন্তর্ভুক্ত করতে নির্দেশনা দেবে। এটি গত বছরের জাতিসংঘের খাদ্য ব্যবস্থা শীর্ষ সম্মেলনের পরিকল্পনাগুলোকে বাস্তবায়নে সহায়তা করবে” -জানানো হয় সেমিনারে।

বক্তারা জানান, দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও নগরায়ণ সহ বিভিন্ন ধরনের চাপ আমাদের খাদ্য ব্যবস্থায় পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহের ক্ষমতাকে এবং পরিবেশগতভাবে টেকসই জীবিকার সুযোগকে প্রভাবিত করছে। একটি পরিকল্পিত পদ্ধতি এ ধরণের জটিলতাগুলোর সমাধান করতে পারে।

“আমাদের লক্ষ্য হল ঢাকার খাদ্য ব্যবস্থাকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, স্থিতিস্থাপক এবং টেকসই করে ঢাকা ফুড এজেন্ডা ২০৪১ তৈরিতে বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা করা। এটি সরকার ও অন্যান্য সংস্থার পাশাপাশি বেসরকারী সংস্থাগুলোকেও নির্দেশনা দিতে পারবে। এ প্রতিষ্ঠানগুলো ন্যায়সঙ্গত, সহজলভ্য এবং স্থিতিস্থাপক খাদ্য ব্যবস্থায় অবদান রাখতে পারে। আমরা এটাও বিশ্বাস করি যে শুধুমাত্র ঢাকা না, বরং সারা দেশের অনেক শহর একই ধরনের কৌশল তৈরি করতে পারে এবং তা করা উচিত,” বলেছেন জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা’র ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রকল্পের চিফ টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার জন টেলর।

উল্লেখ্য, ঢাকা ফুড এজেন্ডা ২০৪১ প্রণয়নের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে এ বছর এপ্রিল মাসে ‘জাতীয় খাদ্য ব্যবস্থার অগ্রাধিকার ও ঢাকা খাদ্য এজেন্ডা ২০৪১’ শীর্ষক একটি জাতীয় সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেই সেমিনারে প্রস্তাব করা হয়েছিল যে ঢাকা ফুড এজেন্ডা ২০৪১-এর গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এবং সিটি লেভেল-এর স্টেকহোল্ডারদেরকে সম্পৃক্ত করতে জাতীয় সেমিনারের পরেই আরও চারটি শহর-পর্যায়ের সেমিনার প্রয়োজন। এই সেমিনারগুলো স্টেকহোল্ডারদের সম্পৃক্ততাকে সহজতর করবে, নীতি প্রণয়নে ভূমিকা রাখবে এবং ঢাকা ফুড এজেন্ডা ২০৪১ তৈরিতে সহায়তা করার জন্য অবদান রাখবে এবং ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রকল্পের পদ্ধতি ও ফলাফল প্রচার করবে। স্থানীয় মতামত, অগ্রাধিকার এবং সফল নীতির নথিপত্র সংগ্রহের জন্য এই মাসে আরও তিনটি শহর-পর্যায়ের সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে – ঢাকা দক্ষিণ, গাজীপুর এবং নারায়ণগঞ্জে।

This post has already been read 1717 times!