Thursday 2nd of May 2024
Home / খাদ্য-পুষ্টি-স্বাস্থ্য / ইফতারে খিচুরি খাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে চট্টগ্রাম ক্যাব

ইফতারে খিচুরি খাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে চট্টগ্রাম ক্যাব

Published at মার্চ ১৩, ২০২২

চট্টগ্রাম সংবাদদাতা: অসাধু ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতা রুখতে সাধারণ মানুষকে ইফতারে ভাজা-পোড়া বাদ দিয়ে ছোলা, পেয়াঁজু, বেগুনির পরিবর্তে খিচুরী খাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে দেশের ভোক্তাদের জাতীয় প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিষ্ঠান হিসাবে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম।

শনিবার (১২ মার্চ) বিকালে নগরীর চান্দগাঁওস্থ ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ে বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস’২২ উদযপানে ক্যাব চট্টগ্রামের প্রস্তুতি সভায় উপরোক্ত আহবান জানানো হয়। সভায় বলা হয়, পবিত্র মাহে রমজানে অসাধু ব্যবসায়ীদের তৎপরতা রুখতে চট্টগ্রামের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বাজার ও মোড়ে মাসব্যাপী “ইফতারে ভাজা-পোড়া বাদ দিন, ছোলা, পেয়াঁজু, বেগুনির পরিবর্তে খিচুরী খান”প্রচারণা কর্মসূচি পরিচালিত হবে। এছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়েও এই প্রচাণা কর্মসূচি পরিচালিত হবে। রমজানে অসাধু ব্যবসায়ীদের অনৈতিক কর্মকান্ড রুখতে ব্যবসায়ীদের ফাঁদে পা না দিয়ে প্রতিরোধ করতে রমজানে ইফতার সমাগ্রী বিতরণের পরিবর্তে নগদ অর্থ প্রদান, পুরো মাসের বাজার না করে সপ্তাহের বাজার করার জন্য সর্বসাধারণের প্রতি আহবান জানানো হয়।

ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অংশ নেন ক্যাব মহানগর সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, সহ-সভাপতি হাজী আবু তাহের, ক্যাব দক্ষিন জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান, যুগ্ন সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম, ক্যাব চান্দগাও থানার সভাপতি মোহাম্মদ জানে আলম, ক্যাব সদরঘাট থানা সভাপতি শাহীন চৌধুরী, ক্যাব পাঁচলাইশ থানা সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম জাহ্ঙ্গাীর, ক্যাব খুলসী থানা সভাপতি প্রকৌশলী শেখ হাফিজুর রহমান, ক্যাব জামাল খানের সাংগঠনিক সম্পাদক হেলাল চৌধুরী, ক্যাব পূর্ব ষোলশহরের সভাপতি অধ্যক্ষ মনিরুজ্জমান, ক্যাব পাহাড়তলীর হারুন গফুর ভুইয়া, বিশিষ্ঠ চিকিৎসক ডা. লুসি খান, ক্যাব সংগঠক ও প্রজন্ম চট্টগ্রামের প্রধান নির্বাহী চৌধুরী জসিমুল হক, ক্যাব নেতা সালমা জাহান মিলা, শিল্পি বশাক, আবদুল মাজেদ, মোহাম্মদ ইউসুফ, সেলিম সাজ্জাদ, কলিম উল্লাহ চৌধুরী, ক্যাব যুব গ্রুপের শাহরিয়ার আলম তৌসিফ সহ বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডের ক্যাব প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বলা হয়, ইফতারের কথা শুনলেই মনে পড়ে প্লেটভর্তি ছোলা, পেঁয়াজু, বেগুনি, চপ, জিলাপি ও মুড়ির কথা। কিন্তু রোজাদারের স্বাস্থ্যের পক্ষে এসব খাবার কতটুকু উপকারী? স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন সারাদিন পানাহার থেকে বিরত থাকার পর সন্ধ্যায় ইফতারিতে ভাজাপোড়া খাবার খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। ডায়েবেটিস বা বহুমূত্র রোগে আক্রান্ত রোগীদের অবশ্যই সাহরি ও ইফতারিতে দুধ, ওটস এবং বাদামের মতো হালকা খাবার খাওয়া উচিত। ভাজাপোড়া ও মিষ্টান্নজাতীয় খাবার শরীরে ক্যালরির মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। তাই যেসব খাবারে তেল ও শর্করাজাতীয় উপাদান থাকে সেসব খাবার পরিহার করাই শ্রেয়। একইভাবে উচ্চ রক্তচাপের রোগীদেরও ভাজাপোড়া খাবার খাওয়া উচিত নয়। বিকল্প হিসাবে খিচুরীও শরীরের জন্য ফলদায়ক বলে মত প্রকাশ করা হয়।

সভায় আরো বলা হয়, করোনা কাল শুরুর পর থেকে একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী নিত্যপণ্যের বাজারে কারসাজি করে বাজারে অস্থিরতা তৈরী করতে থাকেন। যার কারণে চালের দাম দীর্ঘ দুই বছর ধরেই অস্থির। এ সুযোগে ব্যবসায়ীরা একবার আলু, একবার পেয়াঁজ, একবার ডাল, আটা-ময়দা এভাবে প্রতিটি পণ্যের বাজারে আগুন ধরাচ্ছেন। সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থার লোকজন অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি বন্ধের পরিবর্তে এসমস্ত অসাধু ব্যবসায়ীদের কর্মকান্ডকে বৈধতা প্রদানে সাধারন মানুষের ওপর নানা অভিযোগ তুলছেন। অধিকন্তু কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ীদের সুবিধা প্রদানের জন্য তাদেরকে মন্ত্রী, এমপি, রাজনৈতিক দলের নেতাসহ দুদকের দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্যসহ নানা পদে অন্তর্ভুক্ত করছেন। এমনকি তারা মাননীয় প্রধান মন্ত্রী বৈদশিক সফরসঙ্গী করার জন্য প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হন। ফলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন তাদের বিরুদ্ধে টু-শব্দটিও পর্যন্ত করতে পারছেন না। এ অবস্থায় পুরো দেশটি যেন দাম বাড়ানোর প্রতিযোগিতা হাটে পরিনত হয়েছে। রমজানকে সামনে রেখে দাম বাড়েনি এমন পণ্যের তালিকা খুঁজে পাওয়া কঠিন। এ অবস্থায় গুটিকয়েক অসাধু ব্যবসায়ীদেরকে সামাজিক ও রাজনৈতিক ভাবে বর্জনের আহবান জানানো হয়েছে।

This post has already been read 1917 times!